 
                            
আনোয়ার সাঈদ তিতু, কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি:-
ঢাকা প্রেসঃ
বর্ষাকাল এলেই উত্তরের জনপদ কুড়িগ্রামের মানুষের বুকে নেমে আসে চিন্তার ভাঁজ। বিশেষ করে ব্রহ্মপুত্র, ধরলা, তিস্তা ও দুধকুমার নদ-নদীর দুইপাড়সহ চরাঞ্চলের বাসিন্দাদের জন্য ভয়াবহ হয়ে ওঠে এই মৌসুম। কারণ, শুষ্ক মৌসুমে নদীতে বাঁধ নির্মাণ বা সংস্কার না হওয়ায় বর্ষার পানিতে তীব্র ভাঙন দেখা দেয় এবং তাদের ঘরবাড়ি, ফসল, এমনকি জীবন-জীবিকা সবকিছু হারিয়ে ফেলতে হয়।
 

এই বছরও বর্ষার আগমনে একই শঙ্কা নিয়ে দিন কাটাচ্ছে নদী তীরে বসবাসকারী মানুষদের। বিশেষ করে তিস্তার তীরের বাসিন্দারা সবচেয়ে বেশি ঝুঁকির মধ্যে রয়েছে কারণ এই নদীতে ভাঙন রোধে এখনও কোন স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ করা হয়নি।
গত বছর তিস্তার ভাঙনে বাস্তুচ্যুত হয়েছিলেন মকসুদার রহমান। তিনি বলেন, "বন্যার পানি মুহূর্তের মধ্যে গ্রামে ঢুকে পড়ে। সবাই হতভম্ব হয়ে দাঁড়িয়ে থাকতে থাকে। কিছুক্ষণের মধ্যেই ঘরবাড়ি পানিতে ডুবে যায়।"
স্থানীয় ইউনিয়ন পরিষদ চেয়ারম্যান মো. মোজাফ্ফর হোসেন জানান, নামাজের চর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়টি নদীগর্ভে বিলীন হওয়ার ঝুঁকিতে রয়েছে। তিনি বারবার পাউবো কর্তৃপক্ষের কাছে আবেদন জানিয়েও কোন সমাধান পাননি।
কুড়িগ্রাম পাউবোর তথ্যমতে, ব্রহ্মপুত্র, ধরলা ও দুধকুমার নদীতে ভাঙন রোধে দীর্ঘমেয়াদী প্রকল্প চলমান রয়েছে। কিন্তু তিস্তায় এখনও কোন স্থায়ী পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি।
 

পাউবো কর্তৃপক্ষের দাবি, আগামীতে তিস্তাতেও ভাঙন রোধে কাজ শুরু করা হবে। তবে, নদী তীরে বসবাসকারী মানুষের দীর্ঘদিনের দুর্ভোগ কতদিন আর টিকবে তা নিয়ে অনিশ্চয়তা রয়ে গেছে।
এই সমস্যার সমাধানে দ্রুত পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন। স্থায়ী বাঁধ নির্মাণ, জরুরি ভিত্তিতে নদী তীর রক্ষা, এবং নিয়মিত নদীর তলদেশ খনন করে নদীর গতি নিয়ন্ত্রণের ব্যবস্থা গ্রহণ করা উচিত। এছাড়াও, নদী তীরে বসবাসকারী মানুষদের জন্য বিকল্প বসবাসস্থলের ব্যবস্থা করাও জরুরি।
নদী ভাঙন কুড়িগ্রামের মানুষের জন্য একটি বড় সমস্যা। স্থায়ী সমাধানের জন্য সরকার, সংশ্লিষ্ট দপ্তর ও আন্তর্জাতিক সংস্থাগুলোকে একসাথে কাজ করতে হবে। নদী তীরবর্তী এলাকার মানুষের জীবনযাত্রার মান উন্নত করার জন্য দ্রুত ও কার্যকর পদক্ষেপ নেওয়া প্রয়োজন।
 
                                                
                                                