হজে ফরজ যেসকল কাজ

প্রকাশকালঃ ১৭ জুন ২০২৩ ১২:৪৭ অপরাহ্ণ ১৭৮ বার পঠিত
হজে ফরজ যেসকল কাজ

জের ফরজ তিনটি—

১। ইহরাম বাঁধা। (সুনানে কুবরা, হাদিস : ৯১৯০)

২। জিলহজ মাসের ৯ তারিখ সূর্য হেলার পর থেকে ঈদুল আজহার দিন সুবহে সাদিক পর্যন্ত যেকোনো সময় আরাফার ময়দানে অবস্থান করা।


এ সময়ের মধ্যে অতি অল্প সময়ও আরাফার ময়দানে অবস্থান করলে ফরজ আদায় হয়ে যাবে। (তিরমিজি, হাদিস : ৮১৪) 
৩। আরাফায় অবস্থানের পর কাবা শরিফে সাত চক্কর লাগানো। যাকে তাওয়াফে জিয়ারত বা তাওয়াফে ইফাজা বলা হয়।


হজের ওয়াজিব কাজ

১। সামান্য সময়ের জন্য হলেও মুজদালিফায় অবস্থান করা। এর সময় হলো জিলহজ মাসের ১০ তারিখ সুবহে সাদিক থেকে সূর্যোদয় পর্যন্ত। (সুরা বাকারা, আয়াত : ১৯৮, তিরমিজি, হাদিস : ৮১৫) 

২।


সাফা-মারওয়ায় সাত চক্কর লাগানো। যাকে সাঈ বলা হয়। চক্কর লাগানো আরম্ভ হবে সাফা থেকে, আর শেষ হবে মারওয়ায়। (মুসলিম, হাদিস : ২১৩৭)
৩। যথা সময়ে রমি করা।


(শয়তানকে পাথর মারা) (মুসলিম, হাদিস : ২২৮৬)
৪। তামাত্তু ও কিরান হজকারীরা দমে শোকর তথা হজের কোরবানি করা।

৫। হারামে কোরবানির দিনসমূহে মাথা মুণ্ডানো বা চুল ছোট করা। (মুসলিম, হাদিস : ২২৯৮, বুখারি, হাদিস : ১৬১৩)

৬। মক্কাবাসী ছাড়া অন্যরা তাওয়াফে সদর তথা তাওয়াফে ‘বিদা’ করা। (মুসলিম, হাদিস : ২৩৫০) 

উল্লেখ্য, এই ছয়টি হলো হজের ওয়াজিব। হজের আরো কিছু ওয়াজিব আছে। তার মধ্যে কয়েকটি নিম্নরূপ—

►   ১২ জিলহজ সূর্যাস্তের আগে তাওয়াফে জিয়ারত (ফরজ তাওয়াফ) সম্পন্ন করা। (মুসলিম, হাদিস : ২৩০৭, সুনানে কুবরা, হাদিস : ৯৯২৮) 

►   সূর্য হেলার পর থেকে সূর্যাস্ত পর্যন্ত আরাফায় অবস্থান করা। (মুসলিম)

►   তাওয়াফ অবস্থায় (হাদসে আকবার ও আসগার তথা অজু বা গোসল ফরজ হয় এমন অবস্থা থেকে) পবিত্র ও পরিচ্ছন্ন থাকা। (নাসায়ি, হাদিস : ২৮৭৩, মুসলিম, হাদিস : ২১৭৩)

►   প্রত্যেক তাওয়াফের পর দুই রাকাত নামাজ আদায় করা। (বুখারি, হাদিস : ১৫১১) 

►   কিরান ও তামাত্তু হজকারী ধারাবাহিকতা বজায় রেখে তিনটি কাজ করা (ক) রমি (খ)  কোরবানি এবং (গ) হলক। (সহিহ মুসলিম, হাদিস : ১৯৮, উমদাতুল কারি : ১০/৫৮)

►   সতর ঢাকা। (বুখারি)

►  তাওয়াফের সূচনা হাজরে আসওয়াদ থেকে করা। (দারাকুতনি ২/২৮৯, মুসলিম ৮/১৭৪, মারাকিল ফালাহ ৭২৯)

 

হজের সুন্নত

১। ইহরাম বাঁধার সময় গোসল বা অজু করা এবং শরীরে সুগন্ধি মাখা। (তিরমিজি, হাদিস : ৭৬০, মুসলিম ৮/১০১)

২। নতুন বা পরিষ্কার চাদর পরা। সাদা হওয়া উত্তম (তিরমিজি, হাদিস : ৯১৫, ২৭২৩)

৩। ইহরাম বাঁধার আগে দুই রাকাত নামাজ আদায় করা। (মুসলিম, হাদিস : ২০৩১)

৪। বেশি বেশি তালবিয়া পড়া। (মুসলিম, হাদিস : ২২৪৬)

৫। মক্কাবাসী ছাড়া অন্যরা হজে ইফরাদ বা কিরান করাকালীন তাওয়াফে কুদুম করা। (মুসলিম, হাদিস : ২১৩৯)

৬। মক্কায় থাকাকালীন বেশি বেশি তাওয়াফ করা। (তিরমিজি, হাদিস : ৭৯৪)

৭। ‘ইজতিবা’ করা। অর্থাৎ তাওয়াফ আরম্ভ করার আগে চাদরের এক দিককে নিজের ডান বাহুর নিচে রাখা এবং অপর দিককে বাম কাঁধের ওপর পেঁচিয়ে দেওয়া। (তিরমিজি ৭৮৭)

৮। তাওয়াফের সময় ‘রমল’ করা। রমলের পদ্ধতি হলো তাওয়াফের প্রথম তিন চক্করের সময় ঘনঘন কদম ফেলা এবং উভয় কাঁধ হেলাতে হেলাতে চলা। (বুখারি, হাদিস : ১৫০১)।

উল্লেখ্য, ‘রমল’ ও ‘ইজতিবা’ ওই তাওয়াফে সুন্নত, যে তাওয়াফের পর সায়ি করা হয়।

৯। সাঈ করার সময় উভয় মিলাইনে আখজারাইনের (সবুজ বাতি) মধ্যখানে জোরে হাঁটা (পুরুষদের জন্য)। (মুসলিম, হাদিস : ২১৩৭)

১০। তাওয়াফের প্রত্যেক চক্করে হাজরে আসওয়াদে চুমু দেওয়া। চুমু দেওয়া সম্ভব না হলে হাজরে আসওয়াদের দিকে হাত উঁচিয়ে ইশারা করে হাতে চুমু দেওয়া। (আবু দাউ, হাদিস : ১৬০০, বুখারি, হাদিস : ১৫০৬, ১৫০৭)

১১। কোরবানির দিনগুলোত মিনায় রাত যাপন করা। (আবু দাউদ, হাদিস : ১৬৮৩)