জাবিতে চলছে দ্বিতীয় দিনের মতো কর্মচারীদের অবস্থান ধর্মঘট

জাহাঙ্গীরনগর বিশ্ববিদ্যালয়ে (জাবি) দ্বিতীয় দিনের মতো চলছে দৈনিক মজুরি ভিত্তিতে কর্মরত কর্মচারীদের অবস্থান ধর্মঘট। দাবি না-মানা পর্যন্ত অবস্থান ধর্মঘট চালিয়ে যাবেন বলে জানিয়েছেন তারা।
আজ মঙ্গলবার (১৮ জুলাই) সকাল ৯টায় নতুন প্রশাসনিক ভবনের সামনে গিয়ে দেখা যায়, দৈনিক মজুরি ভিত্তিতে কর্মরত অস্থায়ী কর্মচারীরা এক দফা দাবিতে দ্বিতীয় দিনের মতো অবস্থান ধর্মঘট পালন করছেন। তাঁদের এক দফা দাবি হচ্ছে চাকরি স্থায়ীকরণ করা।
অবস্থান নেওয়া কর্মচারীরা জানান, তাঁদের বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থায়ী চাকরি দিতে হবে। যতক্ষণ পর্যন্ত দাবি না মানা হবে, ততক্ষণ পর্যন্ত তাঁরা এই ধর্মঘট চালিয়ে যাবেন। জানা যায়, বিশ্ববিদ্যালয়ে বর্তমানে ১৪২ জন অস্থায়ী কর্মচারী আছেন। যাদের দৈনিক ৪০০ টাকা হারে মজুরি দেওয়া হয়।
যা বর্তমান বাজারমূল্য অনুযায়ী খুবই স্বল্প। সংসার চালাতে হিমশিম খাচ্ছেন বলে জানান তারা। শুধু তাই নয়, তাদের নেই কোনো ছুটি। এক দিন ছুটিতে গেলে ওই দিন আর কোনো টাকা পান না এবং মাতৃত্বকালীন ছুটিও পান না নারী কর্মচারীরা।
এ রকম একজন নারী কর্মচারী তাহমিনা আক্তার। তিনি বিশ্ববিদ্যালয়ের বাংলা বিভাগের অস্থায়ী কর্মচারী ছিলেন। মাতৃত্বকালীন ছুটি কাটিয়ে এসে দেখেন তার জায়গায় আরেকজনকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে।
একাধিক কর্মচারী কালের কণ্ঠকে জানান, চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে ২০২০ সাল থেকে এ পর্যন্ত তিনবার প্রশাসনকে স্মারকলিপি প্রদান করেছেন এবং একই দাবিতে মানববন্ধন করা হলে কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক রাশেদা আখতার অস্থায়ী কর্মচারীদের অগ্রাধিকার ভিত্তিতে স্থায়ীকরণের আশ্বাস দেন। সর্বশেষ চলতি বছরের ২ জানুয়ারি চাকরি স্থায়ীকরণের দাবিতে আমরণ অনশনে বসেন তাঁরা।
তখন প্রশাসনের আশ্বাস ছিল ছয় মাসের মধ্যে অগ্রাধিকার ভিত্তিতে বিভিন্ন হল, বিভাগ ও অফিসগুলোতে নিয়োগ দেওয়া হবে। মৌখিক আশ্বাসের ভিত্তিতে অনশন স্থগিত করেন তারা। তবে আশ্বাসের ছয় মাস অতিবাহিত হলেও তার কোনো বাস্তবায়ন না হওয়ায় আবারও অবস্থান ধর্মঘটে বসেছেন তারা।
কর্মচারীরা আরো জানান, বিশ্ববিদ্যালয়ে নতুন হল এবং কিছু বিভাগে নতুন করে ৪১ জন কর্মচারীকে নিয়োগ দেওয়া হয়েছে। যার মধ্যে একজনও দৈনিক মজুরি ভিত্তিতে কর্মরত কর্মচারীদের মধ্য থেকে নয়।
এ ব্যাপারে জাহানারা ইমাম হলের অস্থায়ী কর্মচারী নাসরীন আক্তার বলেন, ‘এই চাকরি আজ আছে কাল নেই। আমাদের কোনো ভবিষ্যৎ নেই। এখন আমাদের একটাই দাবি- চাকরি স্থায়ীকরণ।’ তিনি আরো বলেন, ‘আমাদের কোনো ছুটি নেই। মাতৃত্বকালীন ছুটি পর্যন্ত দেওয়া হয় না। কতটা অমানবিক জীবন আমরা পার করছি। বারবার প্রশাসনের কাছে আসি, তাঁরা আমাদের তাড়িয়ে দেয়। দেয়ালে পিঠ ঠেকে গেছে, যার কারণে আবারও অবস্থান ধর্মঘটে বসেছি।'
বিশ্ববিদ্যালয়ের কোষাধ্যক্ষ অধ্যাপক রাশেদা আখতার কালের কণ্ঠকে বলেন, ‘ইউজিসির অনুমোদন সাপেক্ষে দৈনিক মজুরিতে কর্মরত ব্যক্তিদের ধাপে ধাপে স্থায়ী করার প্রক্রিয়া চলছে ।’
এ বিষয়ে জানতে উপাচার্য অধ্যাপক মো. নূরুল আলমের মুঠোফোনে একাধিকবার যোগাযোগের চেষ্টা করা হলেও তিনি সাড়া দেননি।
সম্পাদকঃ সারোয়ার কবির | প্রকাশকঃ আমান উল্লাহ সরকার
যোগাযোগঃ স্যুইট # ০৬, লেভেল #০৯, ইস্টার্ন আরজু , শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম সরণি, ৬১, বিজয়নগর, ঢাকা ১০০০, বাংলাদেশ।
মোবাইলঃ +৮৮০ ১৭১১৩১৪১৫৬, টেলিফোনঃ +৮৮০ ২২২৬৬৬৫৫৩৩
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৫