|
প্রিন্টের সময়কালঃ ১৯ এপ্রিল ২০২৫ ০১:০২ অপরাহ্ণ     |     প্রকাশকালঃ ২২ জুন ২০২৩ ০৩:৩৯ অপরাহ্ণ

ইহরাম পরার পরও যে সকল কাজ করা যাবে


ইহরাম পরার পরও যে সকল কাজ করা যাবে


হরাম অবস্থায় নিষিদ্ধ ও মাকরুহ কাজগুলো ছাড়া মুহরিমের জন্য সব কাজ করার অনুমতি আছে। যেমন :

১. পানি দিয়ে গোসল করা।

২. সুগন্ধিযুক্ত সাবান ব্যবহার করা।

৩. ইহরামের কাপড় ধোয়া এবং পরিধেয় ইহরামের কাপড়ের বদলে অন্যটি পরিধান করা।


৪. বেল্ট বা অন্য কিছু দিয়ে লুঙ্গি বাঁধা। যদিও তাতে সেলাই থাকে।

৫. শিঙ্গা লাগানো। কেননা রাসুল (সা.) ইহরাম অবস্থায় শিঙ্গা লাগিয়েছেন। (বুখারি, হাদিস : ১৯৭৮)

৬. সেলাইযুক্ত চাদর পরা।

৭. পোষা প্রাণী জবেহ করা। কারণ এটি শিকারের আওতায় পড়ে না। যেমন: হাঁস, মুরগি, ছাগল ইত্যাদি।


৮. মিসওয়াক করা। কারণ রাসুল (সা.) শর্তহীনভাবেই বেশি বেশি মিসওয়াক করতে উদ্বুব্ধ করেছেন। মিসওয়াকের স্থলে এ জাতীয় অন্য কিছু যেমন ব্রাশ ইত্যাদি ব্যবহারেরও অবকাশ আছে। এতে যদি সুগন্ধি থাকে, তাতেও অসুবিধা নেই—যদি না তা শুধু সুবাস পেতেই ব্যবহার করা হয়।

৯. চশমা, ঘড়ি বা আংটি পরা কিংবা শ্রবণযন্ত্র ব্যবহার করা অথবা আয়নায় মুখ দেখা।

১০. ব্যবসা করা। আল্লাহ তাআলা বলেন, ‘তোমাদের ওপর কোনো পাপ নেই যে তোমরা তোমাদের রবের পক্ষ থেকে অনুগ্রহ অনুসন্ধান করবে।’ (সুরা বাকারা, আয়াত : ১৯৮)

সব তাফসিরবিশারদের মতে আয়াতে ‘অনুগ্রহ’ দ্বারা বোঝানো হয়েছে ব্যাবসায়িক মুনাফা।


১১. স্বাভাবিকভাবে মাথার চুল আঁচড়ানো বা চুলকানো। যদিও এতে কোনো চুল পড়ে। বিশেষ করে মানুষের মাথা থেকে যেসব চুল পড়ে সেগুলো আসলে মরা চুল। তবে এমন জোরে চিরুনি ব্যবহার থেকে বিরত থাকা উচিত, সাধারণত যাতে চুল পড়ে।

১২. যা মাথার সঙ্গে লেগে থাকে না, তা ব্যবহার করা যেমন ছাতা, গাড়ির হুড, তাঁবু ইত্যাদি। উম্মে হাসিন থেকে (রা.) বলেন, ‘আমরা রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর সঙ্গে হজ পালন করলাম। তিনি আকাবার কঙ্কর নিক্ষেপ করলেন। অতঃপর তিনি বাহনে চড়ে প্রত্যাবর্তন করলেন। তাঁর সঙ্গে ছিলেন বিলাল ও উসামা। তাঁদের একজন বাহন চালাচ্ছিলেন, অন্যজন রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর মাথার ওপর কাপড় উঁচু করে ধরে রেখেছিলেন, যা তাঁকে সূর্য থেকে ছায়া দিচ্ছিল। (মুসলিম, হাদিস : ২২৮৭)

অপর এক বর্ণনা মতে, ‘যা তাঁকে তাপ থেকে রক্ষা করছিল, যতক্ষণ না তিনি আকাবার কঙ্কর নিক্ষেপ সমাপ্ত করলেন।’


১৩. মাথায় আসবাবপত্র বহন করা, যদিও তা মাথার কিছু অংশ ঢেকে রাখে। কারণ সাধারণত এর মাধ্যমে কেউ মাথা আবৃত করার ইচ্ছা পোষণ করে না; বরং বোঝা বহন করাই মূল উদ্দেশ্য থাকে।

১৪. পানিতে ডুব দেওয়াতে কোনো অসুবিধা নেই, যদিও এর ফলে সম্পূর্ণ মাথা আবৃত হয়ে যায়।

১৫. পরিধান না করে জামা শরিরের সঙ্গে জড়িয়ে রাখা।


১৬. স্বাভাবিক অবস্থায় যেভাবে লম্বা জামা পরিধান করা হয়, সেভাবে পরিধান না করে চাদর হিসেবে ব্যবহার করাতে কোনো দোষ নেই।

১৭. তালিযুক্ত চাদর পরিধানে কোনো বাধা নেই।

১৮. গলায় পানির মশক বা পানপাত্র ঝোলাতে পারবে।


১৯. যদি চাদর খুলে পড়ে যাওয়ার আশঙ্কা থাকে, তাহলে তা বেঁধে রাখতে পারবে। কারণ এসব বিষয়ে রাসুলুল্লাহ (সা.)-এর পক্ষ থেকে কোনো স্পষ্ট কিংবা ইঙ্গিতসূচক নিষেধাজ্ঞা আরোপ করা হয়নি।

২০. জুতা না থাকলে পায়ের সুরক্ষার জন্য মুহরিম ব্যক্তির জন্য মোজা ব্যবহার বৈধ।

২১. ক্ষতিকর পোকা-মাকড় কিংবা হিংস্র প্রাণীকে শিকার-জন্তু হিসেবে গণ্য করা হবে না। সুতরাং হারাম শরিফের এলাকা কিংবা অন্য যেকোনো স্থানে মুহরিম বা হালাল ব্যক্তি, সকলের জন্য তা হত্যা করা বৈধ। আবু সাঈদ খুদরি (রা.) থেকে বর্ণিত, নবী করিম (সা.) মুহরিমের জন্য হত্যা করা বৈধ—এমন সব প্রাণীর উল্লেখ করে বলেন, সাপ, বিচ্ছু, ক্ষতিকর কীট-পতঙ্গ, চিল, পাগলা কুকুর, হিংস্র পশু। (তিরমিজি, হাদিস : ৮৩৮)


সম্পাদকঃ সারোয়ার কবির     |     প্রকাশকঃ আমান উল্লাহ সরকার
যোগাযোগঃ স্যুইট # ০৬, লেভেল #০৯, ইস্টার্ন আরজু , শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম সরণি, ৬১, বিজয়নগর, ঢাকা ১০০০, বাংলাদেশ।
মোবাইলঃ   +৮৮০ ১৭১১৩১৪১৫৬, টেলিফোনঃ   +৮৮০ ২২২৬৬৬৫৫৩৩
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৫