সঞ্চয়পত্র বিক্রি কমেছে, নিম্ন-মধ্যবিত্ত সঞ্চয়পত্র ভাঙানোর দিকে ঝুঁকছে বেশি

প্রকাশকালঃ ০১ জুন ২০২৩ ০৩:৫১ অপরাহ্ণ ৭১ বার পঠিত
সঞ্চয়পত্র বিক্রি কমেছে, নিম্ন-মধ্যবিত্ত সঞ্চয়পত্র ভাঙানোর দিকে ঝুঁকছে বেশি

বিনিয়োগে নানা শর্ত দেওয়ায় সঞ্চয়পত্র বিক্রি কমেছে। নিম্ন ও মধ্যবিত্তদের আয়ের মানুষেরা সঞ্চয়পত্র কেনার চেয়ে বেশি পরিমাণে ভাঙানোর দিকে ঝুঁকছেন বলে জানিয়েছে  জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তর ।

চলতি অর্থবছরের প্রথম ১০ মাসে (জুলাই থেকে এপ্রিল) ৬৮ হাজার ৩৮ কোটি ৭৩ লাখ টাকার সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে। এর বিপরীতে মুনাফা ও মূল বাবদ পরিশোধ করা হয়েছে ৭১ হাজার ৬১৮ কোটি ৫২ লাখ টাকা। অর্থাৎ তিন হাজার ৫৮০ কোটি টাকা বেশি পরিশোধ করতে হয়েছে।

সম্প্রতি জাতীয় সঞ্চয় অধিদপ্তরের প্রকাশিত সর্বশেষ হালনাগাদ প্রতিবেদনের তথ্য অনুযায়ী, চলতি ২০২২-২৩ অর্থবছরের প্রথম ১০ মাস ৬৮ হাজার ৩৮ কোটি ৭৩ লাখ টাকার পরিমাণ সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে। তবে তা দিয়ে গ্রাহকদের আগে বিনিয়োগ করা সঞ্চয়পত্রের সুদ ও আসল পরিশোধ করা সম্ভব হয়নি। উল্টো সরকার তার কোষাগার ও ব্যাংক ব্যবস্থা থেকে ঋণ নিয়ে তিন হাজার ৫৭৯ কোটি ৭৯ লাখ টাকা শোধ করেছে।


সুদের হার হ্রাস ও নানা ধরনের কড়াকড়ি আরোপের কারণে মানুষের সবচেয়ে নিরাপদ বিনিয়োগ সঞ্চয়পত্র বিক্রি কমে গেছে। সে কারণেই নিট বিক্রি নেগেটিভ হয়েছে। সরকারকে কোষাগার থেকে সুদ ও আসল পরিশোধ করতে হচ্ছে বলে মনে করছেন অর্থনীতিবিদরা।

সঞ্চয় অধিদপ্তরের প্রতিবেদনের বলা হয়েছে, চলতি বছরের এপ্রিলে মাসে সঞ্চয়পত্র বিক্রি হয়েছে পাঁচ হাজার ৩৮১ কোটি টাকার। বিপরীতে মাসটিতে সুদ ও আসল বাবদ সরকারকে চার হাজার ৭৯৯ কোটি টাকা পরিশোধ করতে হয়েছে। এসময় নিট বিক্রির পরিমাণ দাঁড়িয়েছে ৫৮১ কোটি ৭৯ লাখ টাকা।


চলতি অর্থবছরে সঞ্চয়পত্র বিক্রির লক্ষ্য ঠিক করা আছে ৩৫ হাজার কোটি টাকা। তবে আসন্ন ২০২৩-২০২৪ অর্থবছরের প্রস্তাবিত বাজেটে সঞ্চয়পত্র বিক্রি করে ১৮ হাজার কোটি টাকা ঋণ নেওয়ার পরিকল্পনা ঠিক করছে সরকার। যা চলতি অর্থবছরের চেয়ে ১৭ হাজার কোটি টাকা কম।

চলতি অর্থবছর পাঁচ লাখ টাকার বেশি সঞ্চয়পত্রে বিনিয়োগ থাকলে রিটার্নের সনদ বাধ্যতামূলক করা হয়েছে। এছাড়া গত বছরের ২১ সেপ্টেম্বর থেকে ১৫ লাখ টাকার বেশি বিনিয়োগের ক্ষেত্রে সব রকম সঞ্চয়পত্রের সুদহার দুই শতাংশের মতো কমিয়ে দেয় সরকার। তার আগে ২০২০ সালের ডিসেম্বরে সঞ্চয়পত্রের বিনিয়োগ সীমা কমিয়ে আনা হয়।

এছাড়া ২০১৯ সালের ১ জুলাই থেকে মুনাফার ওপর উৎসে করের হার পাঁচ শতাংশ থেকে কমিয়ে ১০ শতাংশ করা হয়। দুর্নীতি বা কালো টাকায় সঞ্চয়পত্র কেনা বন্ধে ক্রেতার তথ্যের একটি ডাটাবেজ তৈরি হয়েছে। এসব কড়াকড়ির প্রভাবে বর্তমানে সঞ্চয়পত্র বিক্রি তলানিতে ঠেকেছে।