অনেকের ঠিকমতো ঘুম হয় না। অফিসের কাজের চাপ, ঘর-গেরস্তালির কাজ শেষ করতে করতে ঘুমানোর আর সময় হয় না। অনেকে বেশি ঘুমালে অপরাধবোধে ভোগেন। ঘুম কম হলে স্মৃতি লোপ পাওয়ার আশঙ্কা থাকে।
অনেকেই আছেন, গভীর রাতে ঘুমাতে যান, ওঠেনও দেরিতে। ক্লান্ত থাকলেও ঘুমাতে যেতে গড়িমসি করেন। জেনে রাখা ভালো, কম ঘুমালে স্বাস্থ্য ক্ষয় হয়। কম ঘুমানোর কারণে ডিমেনশিয়ার মতো কিছু মারাত্মক রোগ হতে পারে। যেমন—হার্টের সমস্যা, উচ্চ রক্তচাপ, স্থূলতা।
কম ঘুমানোর কারণে কী কী সমস্যা হয়?
অনেক শিক্ষার্থী কোচিং, প্রাইভেট টিউটর ও পড়ার চাপে ঘুমানোর সময় পায় না। ফলে ক্লাসে এসে মনোযোগ দিতে পারে না। এক ঘটনা বলি। বেশ কিছুদিন আগে পরিচিত একজন মেডিক্যাল রিপ্রেজেন্টেটিভ মোটরসাইকেল চালাতে গিয়ে মাথা ঘুরে খাদে পড়ে যাচ্ছিলেন। ঘুম কম হওয়ার কারণেই দুর্ঘটনায় পড়ার উপক্রম হন। আরেকজন মেডিক্যাল টেকনোলজিস্টের কথা বলি। তিনি নিজে আগ্রহী হয়েই নাইট শিফট বেছে নিয়েছিলেন। এখন উচ্চ রক্তচাপ ও হার্টের সমস্যায় ভুগছেন। গবেষণায় দেখা গেছে, কম ঘুমালে শুধু স্মৃতি ফিকে হয় না, শরীর ও মনও বিকল হয়। তবে শুধু পর্যাপ্ত ঘুমানোই সমাধান নয়, ঘুমাতে হবে তাড়াতাড়ি।
ঘুমের সঙ্গে আলঝেইমার্সের সম্পর্ক
যুক্তরাষ্ট্রের দুটি গবেষণায় দেখা গেছে, ঘুম যত কম হবে, মগজে তত বিটা অ্যামাইলয়েড নামে এক রাসায়নিক বর্জ্য তত বেশি জমবে। ঘুম ভালো হলে রাসায়নিক বর্জ্য পরিষ্কার হয় শরীর থেকে। স্মৃতি লোপ পাওয়ার অন্যতম কারণ এই বিটা অ্যামাইলয়েড। দেখা গেছে, ঘুম কম হলেই এই রাসায়নিক ৫ থেকে ২০ শতাংশ বেশি জমে। আর ২০ শতাংশ জমলে স্মৃতি ফিকে হওয়া আর ৪০ শতাংশ জমলে আলঝেইমার্স হওয়ার আশঙ্কা প্রায় শতভাগ।
করণীয়
♦ পূর্ণবয়স্ক মানুষের চাই ৮-৯ ঘণ্টা ঘুম।
♦ অর্থাৎ রাত ১০টায় ঘুমাতে গিয়ে উঠতে হবে সকাল ৭টায়।
♦ ঘুমের জন্য শান্ত পরিবেশ তৈরি করুন।
♦ বিকেলের পর চা-কফি পান নয়।
♦ রোজকারের খাবারে প্রোবায়োটিকস রাখুন।
♦ প্রতিদিন এক সময় ঘুমাতে যাবেন। তা না হলে দেহঘড়ি বিগড়ে যায়।
♦ নিমপাতা ভেজানো পানিতে গোসল করুন।
♦ গরমের সময় ঘুমানোর আগে কুসুম গরম পানিতে গোসল করা ভালো।
♦ প্রাণায়াম, যোগ, ব্রিদিং এক্সারসাইজ, ধ্যানও ভালো ঘুমের জন্য গুরুত্বপূর্ণ।
♦ ঘুমানোর আগে সব রকম ডিভাইসের ব্যবহার বন্ধ করতে হবে।