ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনায় সীমান্তে আতঙ্ক, বাংকারে রাত কাটাচ্ছেন স্থানীয়রা

  প্রিন্ট করুন   প্রকাশকালঃ ১০ মে ২০২৫ ০২:৩৭ অপরাহ্ণ   |   ১০০ বার পঠিত
ভারত-পাকিস্তান উত্তেজনায় সীমান্তে আতঙ্ক, বাংকারে রাত কাটাচ্ছেন স্থানীয়রা

অনলাইন ডেস্ক:-

 

ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে সাম্প্রতিক পাল্টাপাল্টি হামলায় সীমান্তবর্তী এলাকায় বাড়ছে উত্তেজনা ও আতঙ্ক। পরিস্থিতির অবনতি হওয়ায় দুই দেশের সীমান্ত অঞ্চলের বহু বাসিন্দা এলাকা ছেড়ে নিরাপদ আশ্রয়ে চলে গেছেন। যারা রয়ে গেছেন, তারা অনেকেই রাত কাটাচ্ছেন বাংকারে। এছাড়া দীর্ঘ মেয়াদি সংঘাতের আশঙ্কায় খাবার, ওষুধ ও অন্যান্য নিত্যপণ্য মজুত করতে শুরু করেছেন স্থানীয়রা।
 

রয়টার্স জানিয়েছে, ভারতীয় সেনাবাহিনী গত মঙ্গলবার দিবাগত রাতে "অপারেশন সিঁদুর" নাম দিয়ে পাকিস্তানের পাঞ্জাব ও আজাদ কাশ্মীরের কয়েকটি স্থাপনায় হামলা চালায়। ভারত দাবি করেছে, এটি ছিল সন্ত্রাসী আস্তানার ওপর অভিযানের অংশ। তবে পাকিস্তান এই দাবি প্রত্যাখ্যান করেছে। ভারত বলছে, কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর হামলার (যেখানে ২৬ জন নিহত হয়) প্রতিশোধ হিসেবেই এই অভিযান চালানো হয়েছে।
 

এরপর থেকে টানা তৃতীয় দিনের মতো ড্রোন ও গোলাবর্ষণের মাধ্যমে উভয় দেশের মধ্যে সংঘর্ষ চলেছে। বিশ্লেষকদের মতে, এটি সাম্প্রতিক তিন দশকের মধ্যে অন্যতম গুরুতর সামরিক উত্তেজনা।
 

সীমান্তবর্তী পাঞ্জাবের বাসিন্দা অমনপ্রীত ধীল্লন জানান, তার গ্রামের দূরত্ব সীমান্ত থেকে মাত্র ১৩ কিলোমিটার। তিনি বলেন, "আমরা ভীত। যেকোনো সময় হামলা হতে পারে।"
 

ভারতনিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের উরি ও বারামুল্লায় গোলার আঘাতে কয়েকটি বাড়ি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। বাসিন্দা বশির আহমেদ বলেন, “এত তীব্র গোলাবর্ষণ আগে দেখিনি। অনেকেই এলাকা ছেড়ে গেছেন, বাকিরা বাংকারে থাকছেন।”
 

পাকিস্তানের লাহোরে ড্রোনের কারণে বাজানো হয় সাইরেন। মার্কিন কনস্যুলেট কর্মীদের নিরাপদ আশ্রয়ে সরিয়ে নেওয়ার নির্দেশ দেয়। বন্ধ রাখা হয় স্কুল-কলেজ। স্থানীয় বাসিন্দা আরুশা রামিজ জানান, তিনি এক মাসের খাদ্য ও প্রয়োজনীয় সামগ্রী মজুত করেছেন।
 

ফার্মেসি মালিক মোহাম্মদ আসিফ বলেন, “গ্রাহকের চাপ বেড়েছে। প্যারাসিটামল, অ্যান্টিবায়োটিকসহ বেশ কিছু ওষুধের ঘাটতির শঙ্কা রয়েছে।”
 

ভারতের অমৃতসরেও অনিশ্চয়তার মধ্যে মানুষ খাবার ও ওষুধ সংগ্রহে ব্যস্ত। সীমান্তের নিকটবর্তী অ্যাটারি এলাকায় বসবাসকারী আত্মীয়দের জন্য পণ্য নিয়ে যাচ্ছেন অনেকে।
 

পাকিস্তাননিয়ন্ত্রিত কাশ্মীরের নীলম উপত্যকার বাসিন্দা মঞ্জুর আহমেদ জানান, “আমরা নিজেরাই পাথুরে পাহাড়ে বাংকার খুঁড়ে রেখেছি। হামলার পর থেকে সেখানেই রাত কাটাচ্ছি।”
 

সরকারি তথ্যমতে, নিয়ন্ত্রণরেখার কাছাকাছি এলাকা থেকে অন্তত ৪০০ জনকে সরিয়ে নেওয়া হয়েছে।