|
প্রিন্টের সময়কালঃ ২৮ অক্টোবর ২০২৫ ০৩:১৩ পূর্বাহ্ণ     |     প্রকাশকালঃ ২৭ অক্টোবর ২০২৫ ০৮:৫২ অপরাহ্ণ

আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল ঠেকাতে কঠোর পদক্ষেপে সরকার


আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল ঠেকাতে কঠোর পদক্ষেপে সরকার


অন্তর্বর্তী সরকার ক্ষমতায় আসার পর থেকে নিষিদ্ধ ঘোষিত আওয়ামী লীগ ও এর অঙ্গসংগঠনের নেতাকর্মীরা বিভিন্ন সময়ে ঝটিকা মিছিল ও বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করে আসছে। সাম্প্রতিক সময়ে দলটি বেশ কয়েকটি বড় মিছিলও করেছে। এবার এসব কার্যক্রম কঠোরভাবে দমনে নামছে সরকার। আওয়ামী লীগের ঝটিকা মিছিল ও অননুমোদিত সমাবেশ ঠেকাতে বাড়ানো হচ্ছে গ্রেপ্তার অভিযানসহ নজরদারি।
 

সোমবার (২৭ অক্টোবর) রাজধানীর পুলিশ সদরদপ্তরের ‘হল অব প্রাইড’ সম্মেলন কক্ষে বাংলাদেশ পুলিশের বিশেষ অপরাধ পর্যালোচনা সভায় এসব নির্দেশনা দেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল (অব.) জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী।
 

সভায় প্রধান অতিথির বক্তব্যে তিনি বলেন, “ফ্যাসিস্টদের তালিকা পুলিশের কাছে আছে। তারা সমাজ ও রাষ্ট্রে অস্থিতিশীলতা সৃষ্টিতে জড়িত। অনেকেই জামিনে মুক্ত হয়ে আবারও অপরাধমূলক কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হচ্ছে। এসব ফ্যাসিস্টদের অপকর্ম, অপপ্রচার, অপরাজনীতি ও ঝটিকা মিছিল প্রতিরোধে গ্রেপ্তার তৎপরতা আরও জোরদার করতে হবে।”
 

ঊর্ধ্বতন পুলিশ কর্মকর্তাদের উদ্দেশে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা আরও বলেন, অধীনস্থ কর্মকর্তাদের মধ্যে পেশাদারিত্ব, টিম স্পিরিট, শৃঙ্খলা ও মনোবল বৃদ্ধি করতে হবে। যারা কমান্ড মানে না, শৃঙ্খলাভঙ্গ করে কিংবা সরকার ও রাষ্ট্রের প্রতি অসম্মান প্রদর্শন করে—তাদের বিরুদ্ধে কঠোর প্রশাসনিক ও আইনগত ব্যবস্থা নিতে হবে।
 

তিনি জেলা পর্যায়ে ঘন ঘন কোর কমিটির সভা আহ্বান, রাজনৈতিক হয়রানিমূলক মামলা প্রত্যাহার ও মিথ্যা মামলার দ্রুত নিষ্পত্তির নির্দেশ দেন। পাশাপাশি পুলিশের স্পেশাল ব্রাঞ্চকে আরও সক্রিয় করার ওপরও গুরুত্বারোপ করেন।
 

থানা থেকে হারানো বা অবৈধ অস্ত্র উদ্ধারে অভিযান ত্বরান্বিত করার আহ্বান জানিয়ে জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেন, “জেলার গুরুত্বপূর্ণ স্থাপনা (কেপিআই) সমূহের নিরাপত্তা জোরদার করতে হবে। অগ্নিকাণ্ডসহ দুর্ঘটনার হার বাড়ছে, এ বিষয়ে সবাইকে সতর্ক থাকতে হবে।”
 

তিনি আরও বলেন, পুলিশের ওপর হামলা কোনোভাবেই সহ্য করা হবে না। এ ধরনের ঘটনায় দ্রুত আইনি ব্যবস্থা নিতে হবে। পাশাপাশি সাম্প্রতিক সময়ে বেড়ে যাওয়া সাইবার অপরাধ প্রতিরোধে তরুণ পুলিশ কর্মকর্তাদের অগ্রণী ভূমিকা রাখার নির্দেশ দেন তিনি।
 

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বলেন, “আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন অবাধ, সুষ্ঠু ও নিরপেক্ষ করতে পুলিশের ভূমিকা সবচেয়ে গুরুত্বপূর্ণ। জনগণ ও রাজনৈতিক দলগুলোর প্রত্যাশা পূরণের বড় দায়িত্ব এখন পুলিশের কাঁধে। আমরা চাই বাংলাদেশ পুলিশ এমন এক মানদণ্ড স্থাপন করুক, যা দেশ-বিদেশে প্রশংসিত হবে।”
 

তিনি জোর দিয়ে বলেন, আইনের প্রয়োগ শুধু শক্তি দিয়ে নয়—ন্যায়, নিষ্ঠা ও মানবিকতা দিয়েও প্রতিষ্ঠিত হয়। নির্বাচনী মাঠে পুলিশ শুধু আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনী নয়, বরং জনগণের নিরাপত্তা, আস্থা ও গণতান্ত্রিক অধিকারের প্রতীক।
 

সভায় স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা বিভিন্ন রেঞ্জের ডিআইজি, মেট্রোপলিটন কমিশনার ও পুলিশ সুপারদের নানা প্রশ্নের উত্তর দেন এবং প্রয়োজনীয় নির্দেশনা প্রদান করেন।
 

পুলিশ মহাপরিদর্শক (আইজিপি) বাহারুল আলমের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠিত এ সভায় সিআইএসসিও ভিডিও কনফারেন্সের মাধ্যমে দেশের বিভিন্ন রেঞ্জ, মেট্রোপলিটন ও জেলা পুলিশ সুপাররা অংশ নেন। সভায় পুলিশ সদরদপ্তরের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারাও উপস্থিত ছিলেন।


সম্পাদকঃ সারোয়ার কবির     |     প্রকাশকঃ আমান উল্লাহ সরকার
যোগাযোগঃ স্যুইট # ০৬, লেভেল #০৯, ইস্টার্ন আরজু , শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম সরণি, ৬১, বিজয়নগর, ঢাকা ১০০০, বাংলাদেশ।
মোবাইলঃ   +৮৮০ ১৭১১৩১৪১৫৬, টেলিফোনঃ   +৮৮০ ২২২৬৬৬৫৫৩৩
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৫