মুসলিমদের সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে জাপানে

প্রকাশকালঃ ০১ জুন ২০২৩ ০৫:৫৯ অপরাহ্ণ ৯৫ বার পঠিত
মুসলিমদের সংখ্যা দ্রুত বাড়ছে জাপানে

জাপানে মুসলিম জনসংখ্যার দ্রুত বৃদ্ধির পেছনে অনেকগুলো কারণ রয়েছে। প্রথমত, জাপানে প্রায় অর্ধেক সেটেলড মুসলিম বিবাহিত। এটি ইঙ্গিত করে যে জাপানে ভবিষ্যতে আরও দ্বিতীয় এবং তৃতীয় প্রজন্মের মুসলমান থাকবে।

মুসলমানদের এই নতুন প্রজন্ম বিভিন্ন সাংস্কৃতিক ও সামাজিক পটভূমিতে উন্মোচিত হবে এবং মুসলিম সম্প্রদায়ের সঙ্গে ঐতিহ্যবাহী জাপানি সমাজের সেতুবন্ধনের চাবিকাঠি হবে।

দ্বিতীয়ত, অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি। জাপানে মুসলিম জনসংখ্যা কেন্দ্রীভূত হওয়ার দ্বিতীয় বড় কারণ হল অর্থনৈতিক প্রবৃদ্ধি। ইরান, পাকিস্তান, ইন্দোনেশিয়া, বাংলাদেশ প্রভৃতি মুসলিম সংখ্যাগরিষ্ঠ দেশ থেকে মানুষ কাজের উদ্দেশ্যে জাপানে যায়।


জাপানে বেশিরভাগ মুসলিম তিনটি মেট্রোপলিটন এলাকায় বাস করে। যেমন গ্রেটার টোকিও এরিয়া, চুকিপ মেট্রোপলিটন এরিয়া এবং কিনকি অঞ্চলে। সমগ্র জাপানে মুসলমানদের নেটওয়ার্ক এখনও খুবই সীমিত।

এশিয়ার দেশ জাপানে মুসলিমদের সংখ্যা তুলনায় অনেক কম। তবে গত কয়েক বছর ধরে দেশটিতে ইসলাম ধর্মের মানুষের সংখ্যা দ্রুত গতিতে বাড়ছে। এদের মধ্যে যেমন বিভিন্ন দেশ থেকে যাওয়া মুসলিমরা রয়েছেন, তেমন জাপানিরাও ইসলামের প্রতি আগ্রহী হয়ে ধর্ম হিসেবে গ্রহণ করছেন।


দ্য ইকোনোমিস্ট এই বিষয়ে বিস্তারিত খবর প্রকাশ করে। দুই বছর প্রকাশ করা ওই প্রতিবেদনে বলা হয়েছিল, সাম্প্রতিক বছরগুলোতে জাপানে মুসলিমদের সংখ্যা বৃদ্ধি পেয়েছে। এর অন্যতম কারণ সরকার আরও বেশি বিদেশি কর্মী এবং ছাত্রদের আকর্ষণ করার চেষ্টা করেছে।


ওয়াসেদা ইউনিভার্সিটির তানাদা হিরোফুমি অনুসারে, জাপানে বসবাসকারী মুসলিমদের সংখ্যা এক দশকে দ্বিগুণেরও বেশি হয়েছে। ২০১০ সালে এই সংখ্যা ছিল ১ লাখ ১০ হাজার। ২০১৯ সালে সেটি বেড়ে হয় ২ লাখ ৩০ হাজার। এদের মধ্যে অন্তত ৫০ হাজার জাপানি ইসলাম গ্রহণ করেছেন।

জাপানের বড় দ্বীপগুলোর সবচেয়ে দক্ষিণে কিউশুর মেকা বেপ্পুতে রয়েছে একটি চারতলা মসজিদ। প্রতি শুক্রবার শত শত মুসলিম নারী-পুরুষ সেখানে হাজির হন জুমার নামাজ আদায় করতে। এদের মধ্যে অনেক ছাত্র যারা রিটসুমেইকান এশিয়া-প্যাসিফিক ইউনিভার্সিটি (এপু) এর কাছাকাছি পড়াশোনা করেন এবং শহরের আশেপাশের হোটেলগুলোতে খণ্ডকালীন কাজ করেন। অন্যরা মাছ ধরার নৌকা এবং শিপইয়ার্ডে বিভিন্ন কাজ করেন।


এপুর একজন অধ্যাপক এবং বেপ্পু মুসলিম অ্যাসোসিয়েশনের (বিএমএ) প্রধান মুহাম্মদ তাহির আব্বাস খান জানান, জাপানে ১১০টিরও বেশি মসজিদ রয়েছে।

মুহাম্মদ তাহির আব্বাস জানান, যখন তিনি ২০০১ সালে স্নাতকের ছাত্র হিসেবে পাকিস্তান থেকে জাপানে যান তখন দেশটিতে মাত্র ২৪টি মসজদি ছিল এবং কিউশুতে একটি মসজিদও ছিল না।

জাপান অতিতে মুসলমানদের তাদের দেশে স্বাগত জানায়নি। তবে সাম্প্রতিক বছরগুলোতে তারা ভিন্ন ধর্মীয় বা সাংস্কৃতিক বোঝাপড়ার প্রতি আরও বেশি গ্রহণযোগ্য হয়ে উঠেছে। জাপানের মুসলমানরা বিভিন্ন জাতীয়, জাতিগত, সাংস্কৃতিক এবং জীবনধারার পটভূমি থেকে গেছে।