|
প্রিন্টের সময়কালঃ ০১ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০২:০২ অপরাহ্ণ     |     প্রকাশকালঃ ২৫ জানুয়ারি ২০২৫ ০১:৩৪ অপরাহ্ণ

ভূক্তভোগী প্রাণ বাঁচাতে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন: অপহরণ করে নারীর সঙ্গে উলঙ্গ ছবি তুলে দু’কোটি টাকার মুচলেকা আদায়ের অভিযোগ


ভূক্তভোগী প্রাণ বাঁচাতে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন: অপহরণ করে নারীর সঙ্গে উলঙ্গ ছবি তুলে দু’কোটি টাকার মুচলেকা আদায়ের অভিযোগ


ঢাকা প্রেস
মোস্তাফিজুর রহমান,বিশেষ প্রতিনিধি:-



রাজধানী মিরপুর অপহরণের শিকার নারীদের সঙ্গে উলঙ্গ ছবি তুলে সন্ত্রাসী দিয়ে নির্যাতন করে খালি স্ট্যাম্পে জোর করে স্বাক্ষর নিয়ে মুচলেকা আদায়ের অভিযোগ তুলেছেন এক ভূক্তভোগি। রাজধানীর মিরপুর থানা এলাকায় এ ঘটনায় ঢাকার চিফ ম্যাট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আদালতে মামলা হলেও আসামিদের গ্রেফতার করতে না পারায় জীবনের ভয়ে পালিয়ে বেড়াচ্ছেন মামলার বাদী ও ভূক্তভোগী ব্যবসায়ী ফরিদুল আলম।


 



মামলার সূত্রমতে, ভূক্তভোগী ফরিদুল আলম আইন মন্ত্রণালয়সহ সরকারের বিভিন্ন সংস্থায় সরবরাহকারী হিসেবে তালিকাভূক্ত ঠিকাদার। চট্টগ্রামের লোহাগড়ার পদুয়ার এ বাসিন্দা ব্যবসায়ীক প্রয়োজনে ঢাকার মিরপুর থানাধীন ২ নং সেকশন বড়বাগের ৬২/৬৩ নং হোল্ডিংস্থ ২ নং (এল) ফ্ল্যাটে বসবাস করতেন। ঘটনার পর প্রাণ বাঁচাতে দিগ্বিদিক ঘুরে বেড়াচ্ছেন।

 



জানা গেছে ঘটনার দিন গত ২ ডিসেম্বর মিরপুরের নিজ বাসা থেকে বের হয়ে স্থানীয় মার্কেটের দিকে যাচ্ছিলেন। পথে মামলার আসামি হিসেবে উল্লেখিত সাইদুল এবং অনুজ দাস নামে দুই ব্যক্তি তার পথরোধ করে। এ সময় তাদের ফোন পেয়ে ঘটনাস্থলে উপস্থিত হন আসামি মোস্তফা সরদার তপনসহ অন্তত: ১৫-২০ জন। এদের মধ্যে সাইদুল ফরিদুলের কাছে টাকা পাই বলে অযথাই তর্ক জুড়ে দেয়। একপর্যায়ে ফরিদুল আলমকে অপহরণ করে মিরপুর শপিং কমপ্লেক্স এর ফুড কোর্ট এ টপ ফ্লোরে নিয়ে যায়। সেখানে প্রায় দেড় ঘন্টা আটকে রাখে দুর্বৃত্তরা। মানসিক ও শারীরিক নির্যাতন করে সাইদুল ইসলাম দুই কোটি টাকা পাবেন বলে স্বীকারোক্তি আদায় করে টাকা দাবি করে। এ সময় সেখানে দু’জন নারী ও ইমন নামে একজন নিজেকে সাংবাদিক পরিচয়ে উপস্থিত হন।

 



রাত ৮টার দিকে ফরিদুলকে নিয়ে যাওয়া হয় মিরপুর-১৪ নং কলোনী জামে মসজিদের খেলার মাঠের পাশে । সেখানে একটি সরু গলিতে আটকে রেখে ফরিদুলকে উলঙ্গ করে নারীদের দিয়ে ছবি তুলে এবং ভিডিও করে রাখে। এ সময় বিকাশের মাধ্যমে টাকা আদায় করা হয়। এরপরও তাকে দুই কোটি টাকা পরিশোধের দাবিতে নির্যাতন করা হয়। তিনি অপরাগতা প্রকাশ করায় ফরিদুলকে তুলে নিয়ে যাওয়া হয় ইব্রাহিমপুর বাজারের পিছনে ঝিলের পাড় বস্তিতে। সেখানে ঘরে আটকে রেখে ভূক্তভোগীর দু’টি ফোন সেট ছিনিয়ে নেয়। তাকে দুই কোটি টাকা মুক্তিপন অথবা সমমূল্যের সম্পত্তি লিখে দেয়ার চাপ দেয়া হয়। অপরাধীদের বাকবিতন্ডায় প্রাণ ভয়ে তিনি সন্ত্রাসীদের দেয়া তিনটি খালি ষ্ট্যাম্পে সাক্ষর করতে বাধ্য হন। বিষয়টি কাউকে প্রকাশ করলে জীবনে মেরে ফেলার হুমকি দিয়ে তাকে ছেড়ে দেয়া হয়। শুধু তা-ই নয় ওই ভুক্তভোগীর একমাত্র ছেলে রাকিবুল আলমকেও ফোন করে আসামীরা নানা হুমকি দিচ্ছে।

 



এদিকে ওই ঘটনার বিষয় মিরপুর থানায় অভিযোগ দিলেও তা গ্রহণ করেনি থানা পুলিশ। পরে নিরুৎসাহিত হয়ে সিএমএম আদালতে একটি মামলা করেন ফরিদুল হক যাহার সি আর নম্বর ১২৫৮, ধারা ৩২৩/৩৪১/৩৪২/৪৮৮/৩৬৫/৩৮৫/৩৮৬/৫০৬ দ:বিধি) করেন। আদালত মামলাটি পুলিশ ব্যুরো অব ইনভেস্টিগেশন (পিবিআই) তদন্তের নির্দেশ দেন। তদন্তকারী কর্মকর্তা নিযুক্ত হন পিবিআই আঁগারগাঁও কার্যালয়ে সাব ইনস্পেক্টর মোহাম্মদ জাকারিয়া।

 



ঘটনার আদ্যোপান্ত মামলার অগ্রগতি ও ভিডিও ফুটেজ কিংবা স্ট্যাম্প উদ্ধার হয়েছে কিনা জানতে চাইলে পিবিআই’র এ কর্মকর্তা ঢাকা প্রেস ডটকম'কে জানান,অনেকটা সময় পেলেও তিনি তদন্ত শুরু করতে পারেননি। তবে আসামিদের বক্তব্য জানতে নোটিশ দেয়া হয়েছে। আর বাদী আতঙ্কে রয়েছেন। তিনি পালিয়ে বেড়াচ্ছেন। বাদীর সাথে মোবাইল ফোনে কথা হয়েছে তিনি সময় করে আসবেন।

 



এদিকে ঘটনার কারন সম্পর্কে জানতে চাইলে ভূক্তভোগী প্রতিবেদক' কে বলেন, তিনি সিত্তুল মুনা চৌধুরী নামে এক নারী প্রতারকের খপ্পড়ে পড়েছেন। ফেসবুকের মাধ্যমে পরিচয় হলেও তিনি ব্ল্যাকমেইল করে আমাকে নামমাত্র বিয়ে করে। এরপর তার পোষা সন্ত্রাসীদের লেলিয়ে দিয়ে আমার সম্পত্তি হাতিয়ে নেয়ার অপচেষ্টায় মেতে উঠেছে।আমাকে সন্ত্রাসী দিয়ে জিম্মি করে সম্পত্তি আত্মসাৎ করার জন্য পাতানো ফাঁদে আটকাতে চেয়েছে।ইতিপূর্বেও এ কূচক্রী নারী অনেক ব্যবসায়ীকে প্রতারণার ফাঁদে ফেলে গাড়ি বাড়ি আত্মসাৎ করেছে। ওই মহিলা প্রতারক বর্তমানে বড় বাগের যে ফ্ল্যাটে বসবাস করছেন সেটিও আনোয়ার নামে এক ব্যক্তিকে বিয়ের ফাঁদে ফেলে হাতিয়ে নিয়েছেন। বর্তমানে মোস্তফা নামে একজনকে স্বামী পরিচয় এবং অপকর্মের সহযোগি হিসেবে অনুজ ও সাইফুলকে দালাল হিসেবে ব্যবহার করে মানুষের সাথে প্রতারণা করছেন।

এছাড়াও ভূক্তভোগী ফরিদুল গতকাল ঢাকা প্রেস কে প্রবোধ কন্ঠে বলেন, এ ঘটনার পেছনে পুরোটাই মুনার ষড়যন্ত্র। তিনি ঘটনার শিকার হয়ে স্বাক্ষর করা স্ট্যাম্প ও ভিডিও ফুটেজ উদ্ধারে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষসহ গণমাধ্যমের হস্তক্ষেপ কামনায় আকুতি জানিয়েছেন।


সম্পাদকঃ সারোয়ার কবির     |     প্রকাশকঃ আমান উল্লাহ সরকার
যোগাযোগঃ স্যুইট # ০৬, লেভেল #০৯, ইস্টার্ন আরজু , শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম সরণি, ৬১, বিজয়নগর, ঢাকা ১০০০, বাংলাদেশ।
মোবাইলঃ   +৮৮০ ১৭১১৩১৪১৫৬, টেলিফোনঃ   +৮৮০ ২২২৬৬৬৫৫৩৩
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৫