রাজশাহী প্রতিনিধি:-
দীর্ঘ নাটকীয়তার পর অবশেষে ৪০তম বিসিএস সহকারী পুলিশ সুপারদের (শিক্ষানবিশ) প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ সম্পন্ন হয়েছে।
রোববার সকাল ১০টায় রাজশাহীর চারঘাটে অবস্থিত বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমী সারদায় আয়োজিত এই কুচকাওয়াজে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী। তিনি কুচকাওয়াজের অভিবাদন গ্রহণ করেন এবং শ্রেষ্ঠত্ব অর্জনকারী প্রশিক্ষণার্থীদের মধ্যে অ্যাওয়ার্ড প্রদান করেন।
২০২৩ সালের ২০ অক্টোবর বিসিএস ৪০তম ব্যাচের ৬৩ জন ও ৩৮তম ব্যাচের ৩ জনসহ মোট ৬৬ জন শিক্ষানবিশ সহকারী পুলিশ সুপারের এক বছরের মৌলিক প্রশিক্ষণ শুরু হয়। নির্ধারিত সময় অনুযায়ী, গত বছরের ২০ অক্টোবর সমাপনী কুচকাওয়াজ আয়োজনের পরিকল্পনা করা হয়েছিল, যেখানে দেড় হাজারের বেশি অতিথিকে আমন্ত্রণ জানানো হয়। তবে অনুষ্ঠানের আগের রাতেই প্রশাসনের সিদ্ধান্তে কুচকাওয়াজ স্থগিত করা হয়। পরে ২৪ নভেম্বর নতুন তারিখ নির্ধারণ করা হলেও সেবারও অনুষ্ঠান বাতিল করা হয়।
এরপর, শৃঙ্খলা ভঙ্গের অভিযোগে গত ১৫ ডিসেম্বর ২৫ জন শিক্ষানবিশ এএসপিকে শোকজ করা হয়। পরবর্তীতে ২১ ফেব্রুয়ারি তাদের মধ্যে ছয়জনকে চাকরিচ্যুত করা হয়। অবশেষে ২৩ ফেব্রুয়ারি, ৪০তম বিসিএস ব্যাচের ৫৭ জন ও ৩৮তম বিসিএস ব্যাচের ৩ জনসহ মোট ৬০ জন প্রশিক্ষণার্থীর সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হয়।
প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে বিশেষ অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক বাহারুল আলম এবং বাংলাদেশ পুলিশ একাডেমী সারদার অধ্যক্ষ মাসুদুর রহমান ভূঞা। এছাড়াও উপস্থিত ছিলেন ১১ পদাতিক ডিভিশন ও এরিয়া কমান্ডার বগুড়া সেনানিবাসের মেজর জেনারেল এস এম আসাদুল হক, রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ জাওয়াদুল হক, রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার খোন্দকার আজিম আহমেদ, অতিরিক্ত আইজি (এইচআরএম) আবু নাছের মোহাম্মদ খালেদ এবং আরএমপির পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ানসহ অন্যান্য উচ্চপদস্থ সরকারি কর্মকর্তাবৃন্দ।
অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী নবীন পুলিশ কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে বলেন, "পেশাদারিত্ব, আন্তরিকতা, নিষ্ঠা ও দায়িত্বশীলতার সঙ্গে কর্তব্য পালন করতে হবে। জনগণ যাতে থানায় এসে হয়রানির শিকার না হয়, সে বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে।"
তিনি আরও বলেন, "বাংলাদেশ পুলিশ প্রজাতন্ত্রের স্বাধীন কর্মচারী, যারা সুনির্দিষ্ট আইন মেনে চলেন। কোনো দলের আজ্ঞাবহ হয়ে অন্যায্য বা বেআইনি কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হওয়া থেকে বিরত থাকতে হবে। আইনশৃঙ্খলা রক্ষায় নিরপেক্ষতা বজায় রাখতে হবে এবং দেশের সকল নাগরিকের জন্য ন্যায়বিচার নিশ্চিত করতে হবে।"
প্রশিক্ষণের সমাপ্তি উপলক্ষে তিনি নবীন কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে বলেন, "আজ আপনাদের মৌলিক প্রশিক্ষণের শেষ দিন। সুপ্রশিক্ষিত চৌকস পুলিশ অফিসার হিসেবে আপনারা মাঠপর্যায়ে আইন-শৃঙ্খলা রক্ষা এবং নাগরিক সেবায় আত্মনিয়োগ করবেন। এই বিশেষ দিনে আপনাদের অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা জানাচ্ছি।"