জলবায়ু সংকট নিয়ে গবেষণা করেন নাবিল আল-নাসিরি। পৃথিবীকে বাসযোগ্য রাখতে জলবায়ু বিষয়ক জনসচেতনতা তৈরিতে কাজ করছেন ৪১ বছর বয়সী এই গবেষক। তাই পবিত্র হজযাত্রায় সবার মধ্যে এই চিন্তা ছড়িয়ে দেওয়ার উদ্যোগ নেন তিনি। নিজ লক্ষ্য বাস্তবায়নে গত ২২ এপ্রিল সাইকেলে করে ফ্রান্সের প্যারিস শহর থেকে মক্কার উদ্দেশে যাত্রা শুরু করেন মরক্কান বংশোদ্ভূত এই মুসলিম।
আসন্ন হজে অংশ নিতে মক্কায় পৌঁছতে তাকে ১৩টি দেশ হয়ে পাঁচ হাজার ৯০০ কিলোমিটার পথ পাড়ি দিতে হবে। সম্প্রতি তুরস্কের ইস্তাম্বুলে এসে পৌঁছেন সাইকেল পরিব্রাজক আল-নাসিরি। সাইকেলে হজ ভ্রমণকালে জলবায়ুবিষয়ক সচেতনতা তৈরির নানা প্রসঙ্গ নিয়ে টিআরটি ওয়ার্ল্ডের সঙ্গে কথা বলেন তিনি। আল-নাসিরি বলেন, ‘একজন মুসলিম হিসেবে আমার কাছে মক্কার চেয়ে বেশি পবিত্র ও সুন্দর কোনো স্থান নেই।
মক্কার উদ্দেশে ভ্রমণের চেয়ে অন্য কোনো ভ্রমণ আমার কাছে গুরুত্বপূর্ণ নয়। প্রতিদিন কমপক্ষে পাঁচবার এদিকে মুখ করে আমরা নামাজ পড়ি।’
সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে জলবায়ুবিষয়ক সচেতনতা তৈরিতে তিনি #HajjByCycle লিখে হজ ভ্রমণের ভিডিও পোস্ট করেন। ইউটিউবের ব্লগেও তিনি এই ভ্রমণের বিভিন্ন চ্যালেঞ্জ, প্রতিকূল আবহাওয়াসহ নানা দিক তুলে ধরেন।
এসব পরিস্থিতি মোকাবেলায় কয়েক বছর ধরে প্রস্তুতি নেন বলে জানান আল-নাসিরি। গত ২৩ মে ইউরোপ ও এশিয়ার প্রবেশপথ ইস্তাম্বুল শহরে প্রবেশ করেন। এর আগে স্লোভেনিয়া, ক্রোয়েশিয়া, হাঙ্গেরি, রোমানিয়া, বুলগেরিয়াসহ বিভিন্ন দেশের মানুষের সঙ্গে মেলামেশার সুযোগ পান। তুরস্ক থেকে জর্দান হয়ে তিনি সৌদি আরবে প্রবেশ করবেন। আল-নাসিরি বলেন, ‘মূলত দুই কারণে আমি এই ভ্রমণ শুরু করেছি।
প্রথমত ধর্মীয় অনুশীলনে নতুন পথ অনুসন্ধান করে ভ্রমণের গভীর অর্থ পুনরুজ্জীবিত করা। যার মাধ্যমে আমাদের মধ্যে ভালো পরিবর্তন অনুভব করি। দ্বিতীয় কারণ হলো, পূর্বসূরিদের প্রতি শ্রদ্ধা জানানো। কারণ তারা হেঁটে বা ঘোড়ায় চড়ে সব ঝুঁকি সামলে নিয়ে হজযাত্রা সম্পন্ন করেছেন।’ দীর্ঘ হজভ্রমণে তিনি জলবায়ু ইস্যু নিয়ে গণসচেতনতা তৈরির চেষ্টা করছেন; বিশেষত মুসলিমরা যেন এ বিষয়ের প্রতি সর্বাধিক গুরুত্ব দেন। তিনি বলেন, ‘আমি চাই, আল্লাহ আমাদের আমানত হিসেবে যে সৃষ্টিজগৎ দিয়েছেন তা সংরক্ষণের সাধারণ প্রচেষ্টায় যেন সব মুসলিম অংশগ্রহণ করে।’