পেছালো রাকসু নির্বাচন, অনুষ্ঠিত হবে ১৬ অক্টোবর

রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের কেন্দ্রীয় ছাত্র সংসদ (রাকসু) নির্বাচন পিছিয়ে আগামী ১৬ অক্টোবর অনুষ্ঠিত হবে। পূর্বনির্ধারিত তারিখ ২৫ সেপ্টেম্বর হলেও ক্যাম্পাসে উত্তেজনা, পূজার ছুটি ও কয়েকটি প্যানেলের দাবির প্রেক্ষিতে এই সিদ্ধান্ত নেওয়া হয়েছে।
সোমবার রাতে প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক ড. এফ নজরুল ইসলাম স্বাক্ষরিত এক বিজ্ঞপ্তিতে নতুন তারিখ ঘোষণা করা হয়। এতে জানানো হয়, সাম্প্রতিক পরিস্থিতি এবং শিক্ষক-কর্মকর্তা-কর্মচারীদের ঘোষিত ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ কর্মসূচির কারণে নির্বাচন আয়োজন সম্ভব নয়। এছাড়া নির্বাচনের কাজে পর্যাপ্ত সংখ্যক শিক্ষক-কর্মকর্তার অংশগ্রহণ নিশ্চিত করা যায়নি।
বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, উৎসবমুখর, অংশগ্রহণমূলক ও সুষ্ঠু নির্বাচন আয়োজনের স্বার্থে কমিশন সর্বসম্মতভাবে ভোটগ্রহণের নতুন তারিখ নির্ধারণ করেছে।
প্রধান নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক এফ নজরুল ইসলাম বলেন,
“বর্তমান পরিস্থিতিতে রাকসু নির্বাচন আয়োজন সম্ভব নয়। দীর্ঘ আলোচনার পর নির্বাচন কমিশন নতুন তারিখে যাওয়ার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।”
ছাত্রশিবিরের প্রতিবাদ
নির্বাচন পেছানোর সিদ্ধান্তে ক্ষোভ প্রকাশ করেছে ইসলামী ছাত্রশিবির। তারা কোষাধ্যক্ষের কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নিয়ে বিক্ষোভ করে। সংগঠনটির সভাপতি মোস্তাকুর রহমান জাহিদ অভিযোগ করেন—
“নির্বাচন কমিশন আস্থার জায়গা হারিয়েছে। বারবার নির্বাচন পেছানোর মাধ্যমে তারা অপরাজনীতি করছে। শিক্ষার্থীরা ৩৫ বছর ধরে এই নাটক দেখে আসছে। আমরা ২৫ তারিখেই নির্বাচন চাই।”
তবে নির্বাচন কমিশনার অধ্যাপক নজরুল ইসলাম বলেন,
“তারা মানুক বা না মানুক, ক্যাম্পাসের এই পরিস্থিতিতে কোনোভাবেই নির্বাচন আয়োজন সম্ভব নয়।”
ছাত্রদলসহ পাঁচ প্যানেলের দাবি
অন্যদিকে, ছাত্রদল মনোনীত প্যানেলসহ অন্তত পাঁচটি প্যানেল, ২০ জন স্বতন্ত্র প্রার্থী এবং হল সংসদের প্রার্থীরা পূজার ছুটি ও পোষ্য কোটাকে কেন্দ্র করে তৈরি হওয়া অস্থিরতার কারণে নির্বাচন পেছানোর দাবি জানিয়েছিল। সোমবার দুপুরে পরিবহন মার্কেটে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে তারা এ দাবি তোলে।
তবে ছাত্রশিবির সমর্থিত প্যানেলের জিএস প্রার্থী ফাহিম রেজা বলেন—
“পূজার আগে নির্বাচন হলে অংশগ্রহণ বেশি হবে, পরে কমে যাবে। তাই আমরা চাই ২৫ সেপ্টেম্বরই নির্বাচন হোক।”
শাটডাউনে ফাঁকা রাবি ক্যাম্পাস
নির্বাচনের আগে রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ে চলছে অনির্দিষ্টকালের কমপ্লিট শাটডাউন। পোষ্য কোটা পুনর্বহাল নিয়ে শিক্ষক-কর্মকর্তাদের সঙ্গে শিক্ষার্থীদের সংঘর্ষের পর থেকে এ কর্মসূচি শুরু হয়েছে।
সোমবার সকাল ৯টা থেকে শুরু হওয়া কর্মবিরতিতে প্রশাসন ভবন ও বিভিন্ন দপ্তরে তালা ঝুলছে। বুদ্ধিজীবী চত্বরে ও প্রশাসন ভবনের সামনে কর্মবিরতিতে থাকা শিক্ষক-কর্মকর্তারা সময় কাটাচ্ছেন। ক্লাস-পরীক্ষা বন্ধ, ক্যাম্পাসে শিক্ষার্থীর উপস্থিতি নেই, দোকানপাট বেশিরভাগই বন্ধ।
রাতে বিশ্ববিদ্যালয়ের জুবেরী ভবনে জাতীয়তাবাদী শিক্ষক ফোরামের সভাপতি অধ্যাপক আবদুল আলীম অনির্দিষ্টকালের কর্মবিরতির ঘোষণা দেন। একই সঙ্গে অফিসার সমিতিও সংবাদ সম্মেলন করে কর্মবিরতি চালিয়ে যাওয়ার ঘোষণা দেয়।
সম্পাদকঃ সারোয়ার কবির | প্রকাশকঃ আমান উল্লাহ সরকার
যোগাযোগঃ স্যুইট # ০৬, লেভেল #০৯, ইস্টার্ন আরজু , শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম সরণি, ৬১, বিজয়নগর, ঢাকা ১০০০, বাংলাদেশ।
মোবাইলঃ +৮৮০ ১৭১১৩১৪১৫৬, টেলিফোনঃ +৮৮০ ২২২৬৬৬৫৫৩৩
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৫