গত গ্রীষ্ম থেকে ইউক্রেনের বাখমুত শহরের যুদ্ধে ২০ হাজার থেকে ৩০ হাজার রুশ সেনা নিহত বা আহত হয়েছেন বলে জানিয়েছে পশ্চিমা কর্মকর্তারা। তারা জানান, যে দীর্ঘ সময় ধরে এবং তীব্র আকারে যুদ্ধ হয়েছে সেটা আগের সব পূর্বানুমানকে ছাড়িয়ে গেছে। এ ছাড়া বাখমুতকে কৌশলগত দিক দিয়েও গুরুত্বপূর্ণ করে তুলেছে।
কিন্তু ছয় মাসেরও বেশি সময় ধরে চলা এই ভয়ঙ্কর লড়াইয়ের পরেও বখমুতের ভবিষ্যত এখনও ঝুলে আছে। যুদ্ধ শুরু হওয়ার পর থেকে প্রায় ৯০ শতাংশ মানুষ পালিয়ে গেছে। এখন সেখানে পড়ে আছে ভেঙে যাওয়া দালান, গাছ আর পতিত জমি। নগরীর পূর্বাঞ্চল দখলের রাশিয়ার দাবির বিষয়টি এখনও নিশ্চিত হওয়া যায়নি। যদি এ দাবি সত্য হয় কিংবা রাশিয়ার কাছে বাখমুতের পতনও হয়, তাহলেও মস্কো অনেক কিছু হারিয়ে খুব সামান্যই অর্জন করতে পারবে বলে বিশ্বাস পশ্চিমা কর্মকর্তাদের।
ইউক্রেনের বিষয়ে এক পশ্চিমা কর্মকর্তা বলেন, ‘বাখমুতের যুদ্ধ অনেক রুশ সেনাকে হত্যা করার একটি অনন্য সুযোগ।’ তবে ইউক্রেনের সামরিক বাহিনীও মূল্য দিতে হয়েছে যদিও রাশিয়ার প্রতিরক্ষা মন্ত্রণালয় যতটা দাবি করছে ততটা নয় বলে জানিয়েছে পশ্চিমা কর্মকর্তারা।
রাশিয়ার প্রতিরক্ষামন্ত্রী সের্গেই শোইগু বলেছেন, শুধুমাত্র ফেব্রুয়ারিতেই ইউক্রেন ১১০০০ সেনা হারিয়েছে। মূলত রাশিয়ার ভাড়াটে ওয়াগনার বাহিনী রাশিয়ার হয়ে বাখমুতে যুদ্ধ করছে। কিন্ত সম্প্রতি ওয়াগনার বাহিনীর প্রধান ইয়েভগেনি প্রিগোজিন মস্কোর বিরুদ্ধে ‘বিশ্বাসঘাতকতার’ অভিযোগ তোলেন। তিনি জানান, যুদ্ধের জন্য মস্কো থেকে তাদের যে পরিমাণ অস্ত্র-গোলাবারুদ ও যোদ্ধা পাঠানোর কথা ছিল মস্কো তা করেনি।
বাখমুত কে ইউক্রেইনের সেনাবাহিনীর জন্য একটি গুরুত্বপূর্ণ প্রতিরক্ষা ঘাঁটি বলে বর্ণনা করেছেন রুশ প্রতিরক্ষামন্ত্রী। তিনি বলেন‘বাখমুত দখলে থাকলে ওই অঞ্চলে ইউক্রেইনের সেনাবাহিনীর প্রতিরক্ষা লাইন ধরে সামনে আরো আক্রমণ চালানো সম্ভব হবে।’ কিন্তু রাশিয়ার দিক থেকে তেমন কিছু দেখা যাচ্ছে না উল্টো ইউক্রেইনকেই পশ্চিমা মিত্ররা বেশি বেশি অত্যাধুনিক অস্ত্র দিচ্ছে। তাই ইউক্রেন আরো বড় আকারে রুশ বাহিনীর ওপর আক্রমণের পরিকল্পনা করছে বলে মনে করেন ওই কর্মকর্তারা।