শীতের আগমনী বার্তায় দুশ্চিন্তায় লংগদু উপজেলার মাছ শিকারীরা 

  প্রিন্ট করুন   প্রকাশকালঃ ০৮ ডিসেম্বর ২০২৪ ০১:২০ অপরাহ্ণ   |   ৫৪০ বার পঠিত
শীতের আগমনী বার্তায় দুশ্চিন্তায় লংগদু উপজেলার মাছ শিকারীরা 

ঢাকা প্রেস
বিপ্লব ইসলাম,লংগদু উপজেলা প্রতিনিধি:-

 

হেমন্তের তপ্ত দুপুরে সূর্যের তীপ্ত রোদ শেষে যখন রাত্রি নামে আর তখনই শরীরে হালকা শীতল বায়ুর ছোঁয়া দিয়ে যায়। ভোর রাতে এ শীতলতা আরো বেড়ে যায় যেনো আগাম শীতের আগমন। দূর্বা ঘাসে কিংবা শাক-সবজির কচি ডগায় মুক্তার মতো আলো ছড়িয়ে ভোরের শিশির জানিয়ে দিচ্ছে শীত আসছে। ভোর সকালে পড়তে শুরু করেছে হালকা কুয়াশার শিশির। সেই সাথে অনুভূত হচ্ছে মৃদু ঠান্ডা। প্রতি বছর অগ্রহায়ণ মাসের প্রথম সপ্তাহে এ অঞ্চলে শীতের আগমন ঘটলেও এবার কার্তিক মাসের শুরুতে শীতের আগমন ঘটেছে।

“হেমন্ত তার শিশির ভেজা আঁচল তলে শিউলি বোঁটায়, চুপে চুপে রং আকাশ থেকে ফোঁটায় ফোঁটায়।” কবি সুফিয়া কামালের লেখা ‘হেমন্ত’ কবিতায় বাংলার হেমন্তের রূপ নিবিড়ভাবে ধরা দিয়েছে প্রকৃতিতে।

ঠিক তেমনি শরৎ শেষে হেমন্তের বর্তমান চেহারা যেন বলে দিচ্ছে ঘটেছে ঋতুর পালাক্রম। ঠিক কবির নিপুণ হাতে লেখা কবিতার চরণের মতো। ক্লান্ত দুপুরে সোনাঝড়া রোদের পাশাপাশি সকাল সন্ধ্যায় ঘাসের ডগায় জমা শিশির বিন্দু, হিম বাতাস ও কুয়াশার উপস্থিতি এই বার্তাই দিচ্ছে কার্তিকের হাত ধরে চলে এলো নবান্নের ঋতু হেমন্ত। সারা বাংলার প্রকৃতির চিত্র এমনই।

প্রতিটা মাঠে কিংবা ফজল বাগানে  চোখ মেললে দেখা যায় ঘাস আর গাছের কচি ডগায় জমে থাকা শিশির বিন্দু। সেই সঙ্গে অনুভ‚ত হচ্ছে হিমেল হাওয়া। যেন হেমন্ত তার প্রকৃতির সবটুকু উজাড় করে বিলিয়ে দিচ্ছে।

এটা ঠিক, ঋতুবৈচিত্রের অনিবার্য প্রভাবে বাংলায় শীত আসবেই। তবে বাঙালির জীবনে শীতের আগমন অমিশ্র অনুভূতি নিয়ে আসে। শীতে বাংলার রূপ বদলায় নিজস্ব রীতিতে। হেমবরণী হেমন্ত হিমেল হাওয়ায় উপস্থাপন করে শীতের নাচন। তার আগমনীকে মধুর আমেজের সূর্যরশ্মির সঙ্গে মিলিয়ে দেয় সকালের সোনারোদ আর কুয়াশা নামের, প্রকৃতিক চাদরে ঢাকা পড়ে সবুজে ভরা প্রান্তর। 

শীতের সঙ্গে জড়িয়ে আছে বাংলার আবহমান সংস্কৃতি চর্চাও। শীত মানেই যেন উৎসব!সারাদেশে শুরু হয় কবিগান, জারিগান, সারিগান, পুতুলনাচ, সার্কাস, যাত্রাপালা, নাট্যমেলা আরও কত কী? সবগুলোরই আসর যেন পূর্ণতা পায় শীতের রাতে। বিভিন্ন উল্লাস তো হিম সমীরণ থেকে বেরিয়ে আসা অনবদ্য নিসর্গের চিত্রপট। এতসব রূপকল্পের মাঝেও শিশির বিন্দুর নিঃশব্দ পতনের মতো প্রত্যাশা পৌষ মাসে কারো যেন সর্বনাশ না হয়।

তবে শীতে সারাদেশে নানা উৎসব হলেও পার্বত্য অঞ্চলের খেটে খাওয়া নিম্ন আয়ের মানুষের জীবনে নেমে আসে চরম দুর্ভোগ। গরম কাপড়ের অভাব আর প্রচন্ত শীতে এসব মানুষের বড় অংশই কষ্ট করেন এ সময়,তাছাড়া রাংগামাটি জেলার লংগদু উপজেলার অধিকাংশ মানুষই মৎস্য আহরণের উপর নির্ভর করে যার ফলে  জলবায়ুর পরিবর্তনগত কারণে প্রতি বছর গরম যেমন বৃদ্ধি পাচ্ছে এর পাশাপাশি শীত বাড়ছে তীব্রভাবে।

জেলেরা নদীতে থাকা হয়ে পরছে খুবই কষ্ট সাধ্য,বিশেষ করে নভেম্বরের মাঝামাঝি থেকে ফেব্রুয়ারি পুরো সময় জুড়ে ব্যাপক শীতে নানা প্রতিবন্ধকতার মধ্য দিয়ে চলে।

মধ্য ইয়ারিংছড়ী এলাকার বাসিন্দা জহুরুল হক বলেন,মোর পরিবারের চলার একমাত্র মাধ্যম অইলে জাল এইফির মাছ ধরার সিজনে এমনিতেই পানি কম অইলহে আর হের ফিন্নে ভালো হইরা মাছ পাইনাই এরই মধ্যে আবার আইয়া পরছে শীত এহনতো মোগোর জইন্নে বাড়ি  থাহাই কষ্ট অইয়া পরবেআনে নদীতে থাকমু কিবিল হইররা কেডা জানে। অন্য দিকে ছোট মাহিল্যার বাসিন্দা নুরুল ইসলাম বলেন, এহন যে শীত লাগে সামনে মনে অয় আরো বেশি পরবো হপ্তায় আমার (১৭০০ টেকা) কিস্তি আমি কিস্তি দেই জাল মাইরা শীতে মনে অয় কিস্তি দিতেই বেহা অইয়া যামু সংসার চালামু কি দিয়া আল্লায় জানে।