রাজধানীর শাহবাগ মোড়ে প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সুপারিশপ্রাপ্ত শিক্ষকদের অবস্থান কর্মসূচিতে পুলিশ লাঠিচার্জ করে। পরে জলকামানের পানি ছিটিয়ে তাদের সরিয়ে দেওয়া হয়। আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর একটি সূত্র জানিয়েছে, এ ঘটনায় ১৩ জনকে আটক করা হয়েছে। তবে পুলিশের পক্ষ থেকে এ তথ্য নিশ্চিত করা হয়নি।
ঘটনাস্থলে উপস্থিত ঢাকা প্রেসের বিশেষ প্রতিনিধি আরিফুজ্জামান (সাগর) জানান, তিনি পুলিশকে কয়েকজনকে আটক করতে দেখেছেন।
সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে তৃতীয় ধাপে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের ৬ হাজার ৫৩১ জনের বাতিল হওয়া নিয়োগ ফিরিয়ে দেওয়ার দাবিতে টানা অষ্টম দিনের মতো আজ বৃহস্পতিবার দুপুরে আন্দোলনকারীরা শাহবাগ মোড়ে অবস্থান নেন। এতে সায়েন্সল্যাব থেকে মৎস্যভবনমুখী সড়কে যান চলাচল বন্ধ হয়ে যায়।
দুপুর দেড়টার দিকে প্রায় শতাধিক শিক্ষক দ্রুত নিয়োগের দাবিতে রাস্তায় নামেন। একই সময়ে আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর সদস্যরাও সেখানে অবস্থান নেন। দুপুর আড়াইটার পর পুলিশ তাদের সরিয়ে দেওয়ার চেষ্টা করে এবং জলকামান থেকে পানি ছিটিয়ে তাদের ছত্রভঙ্গ করে দেয়। এক পর্যায়ে আন্দোলনকারীরা শাহবাগ মোড় থেকে সরে গিয়ে জাতীয় জাদুঘরের সামনে অবস্থান নেন।
এর আগে সকাল থেকে শাহবাগে বিক্ষোভ কর্মসূচি পালন করেন আন্দোলনকারীরা। এ সময় অনেককেই কাফনের কাপড় পরে আন্দোলনে অংশ নিতে দেখা যায়।
রাশেদা বেগম নামে এক আন্দোলনকারী বলেন, ‘সরকার আমাদের চাকরি দিয়েও কেড়ে নিয়েছে। তাই আমরা রাস্তায় নেমেছি। চাকরি ফিরে না পেলে সন্তানদের নিয়েই রাস্তায় শহীদ হয়ে যাব।’
গত ৬ ফেব্রুয়ারি, হাইকোর্ট এক রায়ে সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে উত্তীর্ণ ৬ হাজার ৫৩১ জনের নিয়োগ বাতিলের সিদ্ধান্ত দেন। এর আগে ১৯ নভেম্বর হাইকোর্ট ওই নিয়োগ স্থগিত করেছিলেন। বিচারপতি ফাতেমা নজীব ও বিচারপতি মাহমুদুর রাজীর সমন্বয়ে গঠিত বেঞ্চ কোটা পদ্ধতি অনুসরণ করে নিয়োগ দেওয়ায় এই আদেশ দেন।
৩১ অক্টোবর সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক পদে তৃতীয় ধাপে ঢাকা ও চট্টগ্রাম বিভাগের (তিন পার্বত্য জেলা ছাড়া) চূড়ান্ত ফল প্রকাশ করা হয়, যেখানে উত্তীর্ণ হন ৬ হাজার ৫৩১ জন। প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তরের ওয়েবসাইটে এই ফল প্রকাশ করা হয়।
এর আগে, গত ২৮ মে, হাইকোর্ট ছয় মাসের জন্য এই নিয়োগ প্রক্রিয়া স্থগিত করেন। পরবর্তীতে আপিল বিভাগ এই স্থগিতাদেশ খারিজ করে দিলে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর মৌখিক পরীক্ষা নেয়। তবে লিখিত পরীক্ষায় প্রশ্নপত্র ফাঁসের অভিযোগ তদন্তের নির্দেশ দিয়েছিল আদালত।