দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে বাজেটে নেই কোনো দিকনির্দেশনা

প্রকাশকালঃ ০৭ জুন ২০২৩ ০২:৫৮ অপরাহ্ণ ১২৯ বার পঠিত
দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে বাজেটে নেই কোনো দিকনির্দেশনা

প্রস্তাবিত ২০২৩-২৪ অর্থবছরের বাজেটে দ্রব্যমূল্য নিয়ন্ত্রণে কোনো দিকনির্দেশনা নেই। এ ছাড়া মূল্যবৃদ্ধির মাধ্যমে জনদুর্ভোগ সৃষ্টিকারী বাজার সিন্ডিকেট মোকাবেলায় সরকারের সুনির্দিষ্ট পদক্ষেপ চোখে পড়েনি এবারের বাজেট প্রস্তাবে। গতকাল মঙ্গলবার জাতীয় প্রেস ক্লাবের জহুর হোসেন চৌধুরী মিলনায়তনে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে ভলান্টারি কনজিউমারস ট্রেনিং অ্যান্ড অ্যাওয়ারনেস সোসাইটির (ভোক্তা) পক্ষ থেকে বাজেট প্রতিক্রিয়ায় এসব কথা বলা হয়। এ সময় বাজেটে করযোগ্য আয় না থাকার পরও রিটার্নের প্রমাণপত্র পেতে করদাতাকে ন্যূনতম দুই হাজার টাকা আয়কর দেওয়ার বিধানকে বৈষম্যমূলক হিসেবে উল্লেখ করা হয়।

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্য উপস্থাপন করেন ভোক্তার নির্বাহী পরিচালক মো. খলিলুর রহমান সজল। এ সময় আরো উপস্থিত ছিলেন ভোক্তার চেয়ারম্যান অধ্যাপক হোসেন উদ্দিন শেখর, ভাইস চেয়ারম্যান সানোয়ার হোসেন নওরোজ, পরিচালক (অর্থ) লুৎফর রহমান লিটন, পরিচালক লতিফুল বারী, মহসীনুল করিম লেবু, সাইদুল আবেদীন ডলার, মিজানুর রহমান তালুকদার, নুরুন নবী, গোলাম কবীর ও ফজলুল হক।

খলিলুর রহমান সজল বলেন, গত ১ জুন ২০২৩-২৪ অর্থবছরের জন্য প্রস্তাবিত বাজেটে সমস্যার স্বীকৃতি থাকলেও উত্তরণ ঘটিয়ে সুসময়ে ফেরার ব্যবস্থা বা দিকনির্দেশনার অভাব রয়েছে।


তিনি বলেন, দেশের ভোক্তাসাধারণের অধিকার সুরক্ষায় ভোক্তা মূল্যস্ফীতি নিয়ন্ত্রণ, কর্মসংস্থান ও আয় বৃদ্ধির ওপর বিশেষ গুরুত্ব দিয়ে একটি ভোক্তাবান্ধব বাজেট প্রণয়নের দাবি জানালেও প্রস্তাবিত বাজেটে দ্রব্যমূল্যের লাগামহীন ঊর্ধ্বগতি, কর্মহীন মানুষের সংখ্যা বৃদ্ধি, মানুষের আয় হ্রাস ইত্যাদি বাস্তবতাকে খুব একটা গুরুত্ব দেওয়া হয়নি বলে ভোক্তা মনে করে।

প্রস্তাবিত বাজেটে ব্যাংক থেকে ঋণ নিয়ে বাজেটের ঘাটতি পূরণের উদ্যোগেরও সমালোচনা করে ভোক্তা। এতে সরকারি ব্যয় ১৫ শতাংশ বাড়ানোর সিদ্ধান্ত থেকে সরকারকে সরে আসারও আহবান জানানো হয়।


২০২২-২৩ অর্থবছরে তিন কোটি টাকার বেশি নিট সম্পদ থাকলে সারচার্জ দেওয়া বাধ্যতামূলক ছিল। প্রস্তাবিত বাজেটে এই সীমা চার কোটি টাকা করা হয়েছে।

এতে ধনীদের বিশেষ সুবিধা দেওয়া হয়েছে বলে ভোক্তা মনে করে। সারচার্জের সীমা না বাড়িয়ে নিম্ন ও মধ্যবিত্ত ভোক্তাদের স্বস্তি দেওয়ার জন্য করব্যবস্থায় বিশেষ ছাড় দেওয়া যেত।


প্রস্তাবিত বাজেটকে আরো ভোক্তাবান্ধব করার জন্য কয়েকটি সুপারিশ উপস্থাপন করা হয়। এর মধ্যে রয়েছে বাজার সিন্ডিকেট মোকাবেলায় কী ভূমিকা নেওয়া হবে তার রূপরেখা বাজেট প্রস্তাবনায় সংযোজন করতে হবে। অর্থমন্ত্রী কিভাবে মূল্যস্ফীতি ৬ শতাংশে নামিয়ে আনবেন, সে বিষয়ে সুস্পষ্ট দিকনির্দেশনা দিতে হবে।

করযোগ্য আয় না থাকার পরও আয়কর রিটার্নের প্রমাণপত্র পেতে করদাতাকে ন্যূনতম দুই হাজার টাকা আয়কর দেওয়ার বৈষম্যমূলক বিধান প্রত্যাহার করতে হবে। পড়ালেখার অন্যতম অনুষঙ্গ কলমের ওপর আরোপিত কর প্রত্যাহার করতে হবে। বাজেটে চলমান ডলার সংকট থেকে উত্তরণের সুনির্দিষ্ট রূপরেখা দিতে হবে।

এ ছাড়া কালো টাকা সাদা করার সুযোগ না রাখার বিষয়টি স্পষ্ট না করা রাজনৈতিক, অর্থনৈতিক ও নৈতিকভাবে সমর্থনযোগ্য নয়। তাই বাজেটে বিষয়টি স্পষ্ট করতে হবে। বর্তমান অর্থনৈতিক সংকটে সরকারি ব্যয় ১৫ শতাংশ বৃদ্ধির প্রস্তাব গ্রহণযোগ্য নয়। এই ব্যয়ের প্রাক্কলন আরো কমিয়ে আনতে হবে। গ্যাস সিলিন্ডারের দাম যাতে না বাড়ে সে জন্য সংশ্লিষ্ট করব্যবস্থায় পরিবর্তন আনতে হবে।