নিয়মনীতির তোয়াক্কা না করেই বিএনপি নেত্রী বিদ্যালয়ে বসালো পশুর হাট

আনোয়ার সাঈদ তিতু, কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি:-
পবিত্র ঈদুল আজহা উপলক্ষে কুড়িগ্রাম জেলার চিলমারী উপজেলার চিলমারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে বসেছে গরুর হাট। এতে গরু-মহিষের পায়ে পিষ্ট হয়ে বিনষ্ট হচ্ছে স্কুলমাঠ। খানাখন্দে বৃষ্টির পানি জমে নষ্ট হচ্ছে পুরো মাঠের খেলার পরিবেশও। এ নিয়ে জনমনে তীব্র ক্ষোভের সৃষ্টি হয়েছে।
জানা গেছে, প্রতিবছর ঈদুল আজহা উপলক্ষ্যে চিলমারী সরকারি কলেজ মাঠে পশুর বিশাল হাট বসে। তবে গত বছর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমসহ বিভিন্ন পত্র-পত্রিকায় সেটি প্রচার হলে উপজেলা প্রশাসন এ হাট বন্ধ করে দেয়।
এ বছর উপজেলা বিএনপির মহিলা দলের সাধারণ সম্পাদক ও হাট ইজারাদার জেয়ারা খাতুন রোজি তার দাপট দেখিয়ে অনুমতি ছাড়াই চিলমারী বালিকা উচ্চ বিদ্যালয় মাঠে গরুর হাট বসিয়েছেন।
তিনি সরকারি প্রাথমিক বিদ্যালয়ের সহকারী শিক্ষক হিসেবে কর্মরত থেকেও উপজেলা বিএনপির মহিলা দলে সাধারণ সম্পাদক নির্বাচিত হয়ে ক্ষমতার দাপট দেখিয়ে হাট ইজারা নেওয়াসহ এসব কাজ করে আসছেন বলে জানা গেছে।
রোববার সরেজমিনে দেখা গেছে, বিদ্যালয়ের মাঠে গরু-ছাগল, মহিষসহ প্রায় কয়েকশ গবাদিপশু বিক্রির জন্য বেঁধে রাখার খুটি প্রস্তুত রাখা হয়েছে। এতে গরুর পায়ের আঘাতে ও মলমূত্রে নষ্ট হচ্ছে মাঠের ঘাস। হাট বুধবার বিকাল থেকে বসবে বলে জানিয়েছেন হাট কর্তৃপক্ষ।
এ সময় ক্রান্তি শর্মা, সুরাইয়া খাতুন, মনিসহ বিদ্যালয়ের একাধিক শিক্ষার্থীরা বলেন, বিদ্যালয়ের সামনে খেলার মাঠে এই গরু-ছাগলের হাট বসানোর কারণে বিদ্যালয়ের শিক্ষার পরিবেশ চরমভাবে নষ্ট হচ্ছে। বর্ষার মৌসুম হওয়ায় মাঠে সারাক্ষণ কাদা জমে থাকে। সবেমাত্র আমাদের মাঠে মাটি ভরাট করে সংস্কার করা হচ্ছে। আমরা এখন পর্যন্ত মাঠে খেলতে পারি নাই, এর মধ্যে শুনতেছি যে মাঠে গরুর হাট হবে। আমরা চাই এই গরুর হাট বন্ধ হোক। আমাদের মাঠে গরুর হাট চলবে না। গরুর হাটের কারণে বিদ্যালয়ের একমাত্র খেলার মাঠটি ব্যবহারের অনুপযোগী হয়ে পড়বে।
বিদ্যালয়ে গরুর হাটের বিষয়ে জানতে চাইলে বিএনপি নেত্রী ও হাট ইজারাদার জেয়ারা খাতুন রোজি জানিয়েছেন, আপনাদের সঙ্গে (সাংবাদিক) সাক্ষাতে কথা বলতে হবে। সব বিষয়ে আপনারা যদি অনুমতি এটা সেটা চান- এগুলা তো লোকাল।
বিদ্যালয়ের প্রধান শিক্ষক সাজ্জাদুর রহমান সাজু জানান, আমি বিদ্যালয়ে গরুর হাটের অনুমতি দিইনি। হাটের বিষয়ে ইউএনওর সঙ্গে সাক্ষাৎ করলে তিনি হ্যাঁও বলেন নি, নাও বলেন নি। আমার শিক্ষার্থীরা ইতিমধ্যে ইউএনও মহোদয়ের কাছে অভিযোগ দিতে গেছে।
চিলমারী উপজেলা নির্বাহী অফিসার (ইউএনও) ও সহকারী কমিশনার (ভূমি) সবুজ কুমার বসাক বলেন, হাট কর্তৃপক্ষের কাছ থেকে কোনো ধরনের লিখিত আবেদন পাইনি। তাছাড়া আমি হাট বসানোর অনুমতি দেইনি।
সম্পাদকঃ সারোয়ার কবির | প্রকাশকঃ আমান উল্লাহ সরকার
যোগাযোগঃ স্যুইট # ০৬, লেভেল #০৯, ইস্টার্ন আরজু , শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম সরণি, ৬১, বিজয়নগর, ঢাকা ১০০০, বাংলাদেশ।
মোবাইলঃ +৮৮০ ১৭১১৩১৪১৫৬, টেলিফোনঃ +৮৮০ ২২২৬৬৬৫৫৩৩
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৫