আনোয়ার সাঈদ তিতু, কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি:-
কুড়িগ্রাম জেলার চিলমারী-রৌমারী নৌরুটে ব্রহ্মপুত্র নদে সারা বছর ড্রেজিংয়ের প্রতিশ্রুতি দেওয়া হলেও এখন পর্যন্ত তার কার্যকর ফলাফল শূন্য। নাব্যতা সংকট না কাটানোর পাশাপাশি ড্রেজিংয়ের নামে সরকারের বিপুল পরিমাণ টাকা অপচয় হচ্ছে।
গত বছরের ২৪ সেপ্টেম্বর, বিআইডব্লিউটিসি’র তৎকালীন চেয়ারম্যান ড. একেএম মতিউর রহমান ব্রহ্মপুত্র নদের খননের তাগিদ দিলেও বিআইডব্লিউটিএ তার পরও তৎপরতা দেখাতে পারেনি। স্থানীয়রা অভিযোগ করছেন, বিআইডব্লিউটিএ নাব্যতা সংকট সমাধানে অব্যর্থ। নদী খননে গাফিলতি এবং নৌকার মালিকদের সিন্ডিকেটের কারণে চিলমারী-রৌমারী নৌরুটে ফেরি চলাচল সম্ভব হচ্ছে না। এর ফলে ফেরি বন্ধ থাকায় যাত্রীদের মধ্যে ক্ষোভ বাড়ছে।
চিলমারী-রৌমারী নৌরুটে ফেরি চালুর ফলে ২০২৩ সালের ২০ সেপ্টেম্বর থেকে কিছুটা সুবিধা হলেও, নাব্যতা সংকটের কারণে ফেরি চলাচল বন্ধ রাখতে হচ্ছে। এতে নৌকায় পারাপার করা জনগণের ভোগান্তি বেড়ে যাচ্ছে, আর বাড়তি ভাড়া দিতে হচ্ছে।
এ অঞ্চলের মানুষের মতে, চিলমারী-রৌমারী নৌরুটে ফেরি সার্ভিসের মাধ্যমে ব্যবসা-বাণিজ্য এবং মানুষের জীবনযাত্রার মান অনেক উন্নত হতে পারে, কিন্তু বিআইডব্লিউটিএ এবং নৌকার মালিকদের সিন্ডিকেটের কারণে তা সম্ভব হচ্ছে না। ডিসেম্বর ২৩ তারিখ থেকে ফেরি চলাচল বন্ধ থাকার পর, এক মাসেরও বেশি সময় ধরে সংকট কাটাতে ব্যর্থ হয়েছে বিআইডব্লিউটিএ।
স্থানীয় সূত্রে জানা গেছে, বিআইডব্লিউটিসি বর্তমানে প্রতিদিন ১২ লাখ ৩০ হাজার টাকা ক্ষতির মুখে পড়ছে। ফেরি চলাচল বন্ধ থাকায় ফেরির ইঞ্জিনও ক্ষতির সম্মুখীন হচ্ছে।
চিলমারী-রৌমারী নৌরুটে নিরাপদ এবং নিরবচ্ছিন্ন ফেরি চলাচল নিশ্চিত করতে ড্রেজিং, লো-ওয়াটার ঘাট ও সড়ক নির্মাণ, এবং রাত্রিকালীন বাতি স্থাপন জরুরি, যাতে ফেরি চলাচল স্বাভাবিক হয়ে এ অঞ্চলের অর্থনীতি পুনরায় সচল হতে পারে।
বিআইডব্লিউটিসির চিলমারী ব্যবস্থাপক প্রফুল্ল চৌহান জানান, গত ডিসেম্বরে ফেরি চলাচল বন্ধ থাকায় পরিবহন এবং যাত্রীদের বাড়তি ভোগান্তি সৃষ্টি হচ্ছে। বিআইডব্লিউটিএ’র উপসহকারী প্রকৌশলী মো. কামরুজ্জামান বলেন, তাদের ৫টি ড্রেজারের মধ্যে তিনটি খননকাজ চালাচ্ছে, কিন্তু নাব্যতা সংকট দ্রুত সমাধান হবে কি না, তা নিয়ে কোনো নির্দিষ্ট সময় বলা যাচ্ছে না।
এ পরিস্থিতিতে, ফেরি চলাচল পুনরায় চালু করতে এবং নাব্যতা সংকট কাটাতে কার্যকর উদ্যোগ নেওয়ার জন্য সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষের প্রতি স্থানীয়দের দাবির শেষ নেই।