ভারতের ক্ষেপণাস্ত্র হামলার জবাবে দেশটির পাঁচটি যুদ্ধবিমান ভূপাতিত করার দাবি করেছে পাকিস্তান। বুধবার এক সাক্ষাৎকারে এ তথ্য নিশ্চিত করেছেন পাকিস্তানের প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ। একই সঙ্গে কয়েকজন ভারতীয় সেনাকে যুদ্ধবন্দি হিসেবে আটক করার কথাও জানান তিনি। বিষয়টি নিয়ে প্রতিবেদন প্রকাশ করেছে ব্লুমবার্গ ও রয়টার্স।
পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর মুখপাত্র জানিয়েছেন, ভূপাতিত হওয়া যুদ্ধবিমানগুলোর মধ্যে রয়েছে ফ্রান্সের তৈরি তিনটি রাফাল, রাশিয়ার তৈরি একটি সু-৩০ এবং একটি মিগ-২৯। এই সু-৩০ ও মিগ-২৯ যুদ্ধবিমানগুলো মূলত সোভিয়েত আমলের।
খবরটির পেছনে রয়েছে সাম্প্রতিক উত্তেজনাপূর্ণ পরিস্থিতি। গত মাসের শেষ দিকে ভারত ফ্রান্সের সঙ্গে আরও ২৬টি রাফাল যুদ্ধবিমান কেনার চুক্তি করে, যার আনুমানিক মূল্য ৭৪০ কোটি ডলার। ভারতের হাতে ইতিমধ্যে থাকা ৩৬টি রাফালের সঙ্গে নতুন যুদ্ধবিমানগুলো যুক্ত হলে দেশটির আকাশ প্রতিরক্ষা সক্ষমতা আরও বাড়বে বলে ধারণা করা হচ্ছিল। যুদ্ধবিমানগুলো তৈরি করেছে ফরাসি কোম্পানি দাসোঁ এভিয়েশন এবং সেগুলো ভারতীয় বিমানবাহী রণতরিতে সংযুক্ত হওয়ার কথা।
পাকিস্তানের সামরিক বাহিনীর দাবি, দেশটির ভূখণ্ডে ভারতীয় হামলায় অংশ নেওয়ার সময় এসব যুদ্ধবিমান গুলি করে নামানো হয়েছে। ব্লুমবার্গকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে প্রতিরক্ষামন্ত্রী খাজা আসিফ জানান, পাঁচটি বিমান ছাড়াও বেশ কিছু ড্রোন এবং নিয়ন্ত্রণরেখা (LoC) বরাবর ভারতীয় কয়েকটি ফাঁড়িও ধ্বংস করা হয়েছে।
পাকিস্তানের আন্তঃবাহিনী জনসংযোগ পরিদপ্তরের (আইএসপিআর) মহাপরিচালক লেফটেন্যান্ট জেনারেল আহমেদ শরিফ চৌধুরী জানান, মঙ্গলবার মধ্যরাতের পর কোটলি, ভাওয়ালপুর, মুরিদকে, বাগ এবং মুজাফফরাবাদে ভারতের ‘কাপুরুষোচিত’ ক্ষেপণাস্ত্র হামলায় অন্তত ৮ জন নিহত এবং ৩৫ জন আহত হন। নিহতদের মধ্যে দুই শিশু রয়েছে বলে জানিয়েছেন তিনি।
অন্যদিকে ভারতীয় সেনাবাহিনীর পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, ‘অপারেশন সিঁদুর’ নামে একটি অভিযান শুরু করেছে তারা। এর আওতায় পাকিস্তান ও পাকিস্তান-নিয়ন্ত্রিত আজাদ কাশ্মীরের ৯টি স্থাপনায় হামলা চালানো হয়েছে। তবে ভারত সরকারের দাবি, অভিযানে পাকিস্তানের কোনো সামরিক স্থাপনাকে লক্ষ্যবস্তু করা হয়নি।
উল্লেখ্য, ২২ এপ্রিল কাশ্মীরের পেহেলগামে পর্যটকদের ওপর সন্ত্রাসী হামলায় ২৬ জন নিহত হওয়ার পর থেকেই ভারত ও পাকিস্তানের মধ্যে উত্তেজনা চরমে ওঠে। সর্বশেষ এই পাল্টাপাল্টি হামলার ঘটনায় দুই পরমাণু শক্তিধর দেশের মধ্যে যুদ্ধ পরিস্থিতির আশঙ্কা জোরালো হয়েছে।