|
প্রিন্টের সময়কালঃ ৩০ জুন ২০২৫ ০৪:২৭ পূর্বাহ্ণ     |     প্রকাশকালঃ ২৯ জুন ২০২৫ ০২:২০ অপরাহ্ণ

‘এক অধিনায়ক’ এখন কেবল স্মৃতি


‘এক অধিনায়ক’ এখন কেবল স্মৃতি


স্পোর্টস ডেস্ক:-


 

গল টেস্টের পর থেকেই যেন আকাশে জমেছে অভিমানের মেঘ। কলম্বো টেস্ট শেষ হতেই সেই মেঘে নামল বজ্রসহ বৃষ্টি—নাজমুল হোসেন শান্তর কণ্ঠে। সাংবাদিকদের উদ্দেশে সংযত স্বরে বললেন, "এটা ব্যক্তিগত কিছু নয়, দলের স্বার্থেই সিদ্ধান্তটি নিয়েছি। দীর্ঘদিন ড্রেসিংরুমের অংশ হয়ে দেখেছি—তিন অধিনায়ক থাকলে দলের ভারসাম্য ব্যাহত হয়। তাই নিজে সরে যাচ্ছি।"
 

সাকিব-উত্তর যুগে বিসিবির আস্থার প্রতীক হয়ে তিন ফরম্যাটের নেতৃত্বের ভার কাঁধে নিয়েছিলেন শান্ত। কিন্তু এখন নিজেই সেই মুকুট নামিয়ে রাখলেন—হয়তো মনে হলো ভারটা বেশি হয়ে গেছে। অথচ এই তিনিই পাকিস্তানে টেস্ট জয়ের মাধ্যমে নেতৃত্বের নতুন সূর্যোদয় দেখিয়েছিলেন। টেস্ট চ্যাম্পিয়নশিপের সূচনায় নেতৃত্ব দিয়েছিলেন আশার আলো নিয়ে। শুধুমাত্র ওয়ানডে নেতৃত্ব থেকে বাদ পড়ার প্রতিক্রিয়ায় এমন সিদ্ধান্ত কি মানায়—তাও শ্রীলঙ্কার মাটিতে, সিরিজের মাঝপথে?
 

তবে শুধু শান্তর দিকেই সব দায় চাপানো কি ন্যায্য? সম্পর্কের ভিত্তি তো বিশ্বাস। তাকে না জানিয়ে ওয়ানডে নেতৃত্ব মেহেদী মিরাজের হাতে তুলে দেওয়ার সিদ্ধান্তেই হয়তো সেই বিশ্বাসে চিড় ধরেছিল। গল টেস্টে শান্ত দুর্দান্ত পারফরম্যান্স দিয়ে হয়তো প্রতিক্রিয়ার ভাষা খুঁজে পেয়েছিলেন। কিন্তু কলম্বোয়? যেখানে ইনিংস হারের ব্যর্থতা চাপা পড়ে গেল ‘তিন অধিনায়ক’ তত্ত্বের নিচে।
 

শান্ত বলছেন, সিদ্ধান্তটা দলের স্বার্থে। কিন্তু এটি কি নিছক পেশাদারিত্ব, নাকি ব্যক্তিগত ক্ষোভ? যাঁকে অধিনায়ক করা হলো, তাঁর মনে কি প্রতিক্রিয়া তৈরি হয়নি? শান্ত নিজেও তো একসময় সহ-অধিনায়ক ছিলেন, তখন কি প্রক্রিয়ার স্বচ্ছতা নিয়ে প্রশ্ন তুলেছিলেন?
 

এ কথা শান্ত নিশ্চয়ই জানেন—বর্তমানে বিশ্বের প্রায় সব টেস্ট খেলুড়ে দেশেই একাধিক ফরম্যাটে ভিন্ন ভিন্ন অধিনায়ক। ভারত, পাকিস্তান, ইংল্যান্ড, অস্ট্রেলিয়া, দক্ষিণ আফ্রিকা—সব দেশেই আলাদা ফরম্যাটে আলাদা নেতৃত্ব। এতে নেতৃত্ব ভাগ হলেও মনোযোগ বাড়ে, পারফরম্যান্সেও আসে পেশাদারিত্ব। শান্ত নিজেও তো টি-টোয়েন্টি নেতৃত্ব ছেড়েছিলেন ব্যাটিংয়ে মনোযোগ দিতে—তাহলে তিন অধিনায়কেই আপত্তি কেন?
 

বাংলাদেশ দল এবং বোর্ড একটি পরিবারের মতো। অভিমান-অভিযোগ থাকতেই পারে। তবে সত্যিকারের খেলোয়াড় হয়ে দলকে এগিয়ে নিতে হলে সেই অভিমান ঝেড়ে ফেলে, কাঁধে নিতে হয় চ্যালেঞ্জ। নীরব থাকা কখনও কখনও ক্ষত তৈরি করে—যা একসময় হয়ে ওঠে স্থায়ী রক্তক্ষরণ।


সম্পাদকঃ সারোয়ার কবির     |     প্রকাশকঃ আমান উল্লাহ সরকার
যোগাযোগঃ স্যুইট # ০৬, লেভেল #০৯, ইস্টার্ন আরজু , শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম সরণি, ৬১, বিজয়নগর, ঢাকা ১০০০, বাংলাদেশ।
মোবাইলঃ   +৮৮০ ১৭১১৩১৪১৫৬, টেলিফোনঃ   +৮৮০ ২২২৬৬৬৫৫৩৩
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৫