খামারবাড়িতে কৃষি ডিপ্লোমা ও শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের মুখোমুখি অবস্থান

  প্রিন্ট করুন   প্রকাশকালঃ ২১ এপ্রিল ২০২৫ ০৪:১১ অপরাহ্ণ   |   ৯৭ বার পঠিত
খামারবাড়িতে কৃষি ডিপ্লোমা ও শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীদের মুখোমুখি অবস্থান

ঢাকা প্রেস-নিউজ ডেস্ক:-

 

রাজধানীর খামারবাড়িতে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের (ডিএই) প্রধান ফটক অবরোধ করে আন্দোলনে নেমেছেন কৃষি ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীরা। ‘এগ্রি ব্লকেড’ নামে ঘোষিত এ কর্মসূচি শুরু হয় সোমবার সকাল ১০টায়। এর ফলে অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা অফিসে প্রবেশ করতে পারেননি।
 

সাড়ে তিন ঘণ্টা অবরোধ চলার পর, দুপুর ১টা ৩০ মিনিটে খামারবাড়ির সামনে জড়ো হন শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা। এরপর দুই পক্ষের মধ্যে মুখোমুখি অবস্থান তৈরি হয়—ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীরা ভেতরে এবং বিশ্ববিদ্যালয় শিক্ষার্থীরা বাইরে স্লোগান দিতে থাকেন। পরিস্থিতি উত্তপ্ত হয়ে উঠায় সংঘাতের আশঙ্কা দেখা দেয়।
 

শেরেবাংলা কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থীরা অভিযোগ করেন, ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীরা অযৌক্তিক দাবির মাধ্যমে সরকারি কার্যক্রমে বাধা সৃষ্টি করছেন।
 

এ বিষয়ে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক (প্রশাসন) মো. মুরাদুল হাসান জানান, "ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীদের অধিকাংশ দাবি ইতোমধ্যে কৃষি মন্ত্রণালয় মেনে নিয়েছে। তবুও কিছু মহলের প্ররোচনায় আন্দোলন অব্যাহত রয়েছে। আমরা শিক্ষার্থীদের সঙ্গে আলোচনায় বসেছি এবং সমাধানের চেষ্টা চলছে।"
 

অবস্থানের সময় খামারবাড়ি এলাকায় আইনশৃঙ্খলা রক্ষাকারী বাহিনীর উপস্থিতি লক্ষ করা যায়। আন্দোলনরত শিক্ষার্থীরা জানান, তারা উচ্চশিক্ষাসহ আট দফা দাবিতে দীর্ঘদিন ধরে আন্দোলন করে আসছেন।
 

আন্দোলনের নেতৃত্বদানকারী রায়হান উদ্দিন শামীম বলেন, “আমাদের উচ্চশিক্ষার সুযোগ নেই। ডিপ্লোমা পাস করে বাধ্য হয়ে প্রাইভেট বিশ্ববিদ্যালয়ে ভর্তি হতে হয়। শিক্ষা মন্ত্রণালয়কে এই সমস্যা সমাধান করতে হবে, কিন্তু তারা তা করছেই না।”
 

বাংলাদেশে বর্তমানে ১৮টি সরকারি ও ২৬০টি বেসরকারি কৃষি প্রশিক্ষণ ইনস্টিটিউটে চার বছর মেয়াদি কৃষি ডিপ্লোমা কোর্স চালু রয়েছে। এসব প্রতিষ্ঠানে প্রায় ২৫ হাজার শিক্ষার্থী অধ্যয়নরত।
 

ডিপ্লোমা শিক্ষার্থীদের প্রধান দাবিগুলো:

১, ডিপ্লোমা কৃষিবিদদের পাবলিক কৃষি বিশ্ববিদ্যালয়ে উচ্চশিক্ষার সুযোগ দিতে হবে।

২, উপসহকারী কৃষি কর্মকর্তাদের দ্বিতীয় শ্রেণির গেজেটেড কর্মকর্তা হিসেবে ঘোষণা করে প্রজ্ঞাপন দিতে হবে।

৩, প্রতি বছর নিয়োগের ধারাবাহিকতা বজায় রাখতে হবে।

৪, কৃষি ডিপ্লোমা শিক্ষার মানোন্নয়নে শিক্ষকসংকট নিরসন করতে হবে।

৫, ডিপ্লোমা শিক্ষা ব্যবস্থা ডিএই-এর অধীনে না রেখে কৃষি মন্ত্রণালয়ের একটি স্বতন্ত্র বিভাগ হিসেবে গঠন করতে হবে।

৬, সব কৃষি গবেষণাপ্রতিষ্ঠানে সহকারী বৈজ্ঞানিক কর্মকর্তার পদ ডিপ্লোমা কৃষিবিদদের জন্য সংরক্ষিত করতে হবে।

৭, বেসরকারি চাকরিতে ন্যূনতম দশম গ্রেডের পে-স্কেল নিশ্চিত করতে হবে।

৮, মাঠ সংযুক্তি ভাতা ও চাকরিতে প্রবেশের পর ছয় মাসের ফাউন্ডেশন ট্রেনিংয়ের ব্যবস্থা করতে হবে।
 

কৃষি মন্ত্রণালয়ের পক্ষ থেকে জানানো হয়েছে, শিক্ষার্থীদের বেশিরভাগ দাবি পূরণ করা হয়েছে। কয়েকটি দাবি সংশ্লিষ্ট অন্যান্য মন্ত্রণালয়ে পাঠিয়ে সুপারিশ করা হয়েছে।
 

তবে কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের কর্মকর্তারা মনে করছেন, অধিকাংশ দাবি পূরণের পরও চলমান এ আন্দোলন এখন অযৌক্তিক পর্যায়ে চলে গেছে।