গাজা যুদ্ধে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের 'জোরালো প্রমাণ'
প্রকাশকালঃ
১৫ জুন ২০২৩ ১২:২৭ অপরাহ্ণ ২৭৩ বার পঠিত
গাজা যুদ্ধে ইসরায়েলের বিরুদ্ধে যুদ্ধাপরাধের 'জোরালো প্রমাণ' পাওয়া গেছে বলে দাবি করেছে অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনাল। এ যুদ্ধাপরাধের সঙ্গে জড়িতদের বিচারের কাঠগড়ায় দাঁড় করানোরও আহ্বান জানিয়েছে আন্তর্জাতিক মানবাধিকার সংস্থাটি। খবর বিবিসির।
বুধবার (১৪ জুন) বিবিসিতে প্রকাশিত এক প্রতিবেদনে বলা হয়, ইসরায়েলি সেনাবাহিনী হাদার গোল্ডিনকে অপহরণের জের ধরে কোনও নিয়ম-কানুন না মেনেই রাফাহ আবাসিক এলাকায় সর্বাত্মক অভিযান চালায়। তাদের এই বেপরোয়া ও ব্যাপক মাত্রার সমরাভিযানের কারণে কমপক্ষে ১৩৫ জন বেসামরিক ফিলিস্তিনি বেঘোরে প্রাণ হারায়। অবশ্য অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের করা অভিযোগকে তীব্রভাবে নাকচ করেছে ইসরায়েল।
প্রত্যক্ষদর্শীদের বরাত দিয়ে বিবিসি জানায়, প্রতিবেদনটি তৈরি করা হয়েছে স্যাটেলাইটে ধারণ করা বিভিন্ন ছবি ও ভিডিওর ভিত্তিতে।
অ্যামনেস্টি ইন্টারন্যাশনালের মধ্যপ্রাচ্য ও উত্তর আফ্রিকা প্রকল্পের পরিচালক ফিলিপ লুথার বলেন, 'গাজার দক্ষিণাঞ্চলের রাফা ও এর আশপাশের আবাসিক এলাকায় চালানো ব্যাপক হামলার মধ্য দিয়ে ইসরায়েলি বাহিনী যুদ্ধাপরাধ করেছে, এ ব্যাপারে যথেষ্ট জোরালো প্রমাণ আছে'। অপহৃত লেফটেন্যান্ট হাদার গোল্ডিনকে উদ্ধারের অভিযানের নামে সাধারণ মানুষের জীবন দুঃসহনীয় হয়ে উঠেছিল।
গত বছরের জুলাই-আগস্টে গাজা যুদ্ধে ৫০ দিনের বিরতি ঘোষণা করা হয়। বিরতি চলাকালীন ১ আগস্ট গোল্ডিন অপহৃত হন। দিনটি ছিল শুক্রবার। তাই ইসরায়েলের মানুষ দিনটিকে 'কালো শুক্রবার' হিসেবে অভিহিত করে। জরুরী পরিস্থিতিতে গোল্ডিনকে উদ্ধারের জন্য সর্বাত্মক সামরিক শক্তি ব্যবহারের তথাকথিত 'হ্যানিবাল নির্দেশক' প্রক্রিয়া অনুসরণ করেছিল ইসরায়েলি বাহিনী। রাফা অঞ্চলে বিতর্কিত পদ্ধতিতে ব্যাপক বিমান ও স্থল হামলাও চালানো হয়।
প্রতিবেদনে অ্যামনেস্টি বলছে, 'এফ-১৬ যুদ্ধবিমান, ড্রোন ও হেলিকপ্টার থেকে স্থল বাহিনী ঘন ঘন বোমা বর্ষণসহ আরও অনেক তাণ্ডব চালিয়েছে'। যদিও গোলদিনকে পরে মৃত অবস্থায় পাওয়া যায়। অ্যামনেস্টি মূলত চার দিনের ওই অভিযানকে কেন্দ্র করে ইসরায়েলি বাহিনীর যুদ্ধাপরাধের 'শক্ত প্রমাণ' তুলে ধরেছে।
ইসরায়েলি পররাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এক বিবৃতিতে বলেছেন, 'অ্যামনেস্টির প্রতিবেদনটি সম্পূর্ণভাবে ভুল। এর বিশ্লেষণ প্রক্রিয়াটি সঠিক নয়।" বস্তুত তাদের আইনগত বিশ্লেষণ ও উপসংহারের প্রক্রিয়াতেই ভুল রয়েছে। এটি পড়লে মনে হবে ইসরায়েলি বাহিনী তাদের নিজেদের বিরুদ্ধেই হয়তবা লড়াই করেছে। এতে হামাস এবং অন্যান্য ফিলিস্তিনি সন্ত্রাসী সংগঠনের সামরিক কর্মকাণ্ডের কথা খুব কমই উল্লেখ করা হয়েছে।
গাজা যুদ্ধে গত বছরে দুই হাজার দুই শত ৫১ ফিলিস্তিনি নিহত হয়েছিল। এর মধ্যে পাঁচ শতাধিক শিশু ছিল। বিপরীতে ইসরায়েলের ৬৭ সেনাসহ নিহত হয় মোট ৭৩ জন।