নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার থেকে জাঙ্গালীয়া সড়কটি প্রায় ১১ কিলোমিটার সড়কজুড়ে খানাখন্দ
প্রকাশকালঃ
১২ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০১:১৬ অপরাহ্ণ ২০৪ বার পঠিত
নারায়ণগঞ্জের আড়াইহাজার থেকে জাঙ্গালীয়া সড়কটি প্রায় ১১ কিলোমিটার দীর্ঘ। এই সড়ক দিয়ে চারটি ইউনিয়নের কয়েক হাজার বাসিন্দা, শত শত পণ্য ও যাত্রীবাহী পরিবহন প্রতিদিন চলাচল করছে। কিন্তু দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে এই সড়কটি সংস্কার না হওয়ায় চরম দুর্ভোগ পোহাতে হচ্ছে এলাকাবাসী, পরিবহনচালক ও মালিকদের। এতে প্রতিদিন দুর্ঘটনার কবলে পড়তে হয় যাত্রীদের।
সরেজমিনে বৃহস্পতিবার গিয়ে দেখা যায়, আড়াইহাজার-জাঙ্গালীয়া সড়কের বেশির ভাগই খানাখন্দ আর ছোট-বড় গর্তে ভরা। সড়কের বিভিন্ন স্থানে বিটুমিন ও ইট উঠে গেছে। মাটি বের হয়ে গর্তের সৃষ্টি হয়েছে। পলেস্তারা খসে গেছে।
সামান্য বৃষ্টি হলে গর্তগুলোতে পানি জমে কাদার সৃষ্টি হয়। গর্তে গাড়ি আটকে থাকে। তখন ঘণ্টার পর ঘণ্টা যানবাহন বন্ধ থাকে। আবার কাদা শুকিয়ে ধুলার সৃষ্টি হয়। ধুলার কারণে সড়ক দিয়ে চলাচল করতেও কষ্ট হয়। এ সড়কে পণ্য ও যাত্রীবাহী গাড়ি চালাতে চালকদের সমস্যা হচ্ছে।
নারায়ণগঞ্জ স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তর (এলজিইডি) সূত্র জানায়, জাঙ্গালীয়া বাজার থেকে আড়াইহাজার পর্যন্ত সড়কটি ২০০৮ সালে সংস্কার করা হয়। আড়াইহাজারের খাগকান্দা, উচিত্পুরা, কালাপাহাড়িয়া ও হাইজাদী ইউনিয়নের যাত্রী ও পণ্যবাহী যানবাহন এই সড়ক দিয়ে সহজে ঢাকা ও আশপাশ এলাকায় যাতায়াত করে। সড়কটি সংস্কারের জন্য ২০২১-২২ অর্থবছরে ১৫ কোটি ৭২ লাখ টাকা বরাদ্দ দেওয়া হয়েছে।
এতেও কোনো সুফল পাচ্ছেন না এলাকাবাসী। জাঙ্গালীয়া আড়াইহাজার সড়কে চলাচল করা এক আফসার উদ্দিন নামে এক যাত্রী জানান, আড়াইহাজার সদরে চাকরির সুবাদে প্রতিদিন এ সড়ক দিয়ে আসা-যাওয়া করতে হয়। দীর্ঘদিন ধরে রাস্তাটি সংস্কার না হওয়ায় মারাত্মক সমস্যায় পড়তে হচ্ছে আমাদের। জীবনের ঝুঁকি নিয়ে প্রতিদিন বাধ্য হয়েই এ রাস্তা দিয়ে চলাচল করছি আমরা। রাস্তাটি দ্রুত সংস্কারের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের জরুরি হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।
কামিনি আক্তার নামে এক ব্যবসায়ী জানান, আড়াইহাজারের আনাচকানাচে সব রাস্তাঘাটের ব্যাপক উন্নয়ন হলেও এ রাস্তাটিতে দীর্ঘ ১৫ বছর ধরে উন্নয়নের ছোঁয়া লাগেনি। জানি না কবে রাস্তাটি সংস্কার করে আমাদের দুর্ভোগের হাত থেকে বাঁচাবে সংশ্লিষ্ট কর্তৃপক্ষ। এ রাস্তায় চলাচলের সময় প্রতিদিন ছোট-বড় দুর্ঘটনার কবলে পড়ে অনেককেই পঙ্গুত্ব বরণ করতে হয়েছে।
আড়াইহাজারের উচিত্পুরা ইউনিয়ন পরিষদের চেয়ারম্যান ইসমাঈল কালের কণ্ঠকে জানান, এ রাস্তাটি জনগণের চলাচলের একমাত্র রাস্তা হওয়ায় প্রতিদিন তিন ইউনিয়নের হাজার হাজার বাসিন্দা চলাচল করে। কিন্তু রাস্তাটি একেবারে চলাচলের অনুপযোগী হয়ে পড়েছে। কয়েকবার ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের সঙ্গে যোগাযোগ করার পরও কোনো সংস্কারের কাজ করা হয়নি। যত দ্রুত সম্ভব এ গুরুত্বপূর্ণ সড়কটি সংস্কার করে জনগণের দুর্ভোগ লাঘবের জন্য ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের হস্তক্ষেপ কামনা করেন তিনি।
সড়কটির সংস্কারের কাজ পেয়েছে এমএমআর-ইউএনটি নামের একটি ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান। প্রতিষ্ঠানটির ঠিকাদার এস এম জামাল উদ্দিন কালের কণ্ঠকে জানান, সড়কটি সরকারি নীতিমালা অনুযায়ী টেন্ডার হওয়ার পর আমাদের ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান কাজটি পায়। এর পর থেকেই আমরা সড়কটি সংস্কারের কাজ শুরু করেছি। যত দ্রুত সম্ভব কাজটি শেষ করে জনগণের দুর্ভোগ লাঘব করা হবে। তবে তিনি জানান, বর্তমানে নির্মাণসামগ্রীর দাম বৃদ্ধি পাওয়ায় কাজ করতে অতিরিক্ত অর্থ ব্যয় হবে। এ বিষয়ে ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষকে জানিয়েছি।
নারায়ণগঞ্জ স্থানীয় সরকার প্রকৌশল অধিদপ্তরের (এলজিইডি) সিনিয়র সহকারী প্রকৌশলী আলী হায়দার কালের কণ্ঠকে জানান, দুইবার সড়কটি সংস্কারে উদ্যোগ নেওয়া হয়েছে। কিন্তু নির্মাণসামগ্রীর মূল্য বেড়ে যাওয়ায় কোনো ঠিকাদারি প্রতিষ্ঠান সংস্কারের কাজ করেনি। আমরা এখন নতুন ঠিকাদার নিযুক্ত করার প্রক্রিয়ায় রয়েছি। বর্তমান ঠিকাদারকে নোটিশ দেওয়া হয়েছে, সে কাজ না ধরলে টেন্ডার বাতিল করে নতুন ঠিকাদারকে কাজটি দেওয়া হবে।