নিবন্ধনের প্রাথমিক বাছাইয়ে অনুত্তীর্ণ, এনসিপিসহ ৮২টি দলকে চিঠি দিচ্ছে নির্বাচন কমিশন

আগামী জাতীয় সংসদ নির্বাচন সামনে রেখে নতুন রাজনৈতিক দলগুলোর নিবন্ধন প্রক্রিয়ায় এগোচ্ছে নির্বাচন কমিশন (ইসি)। চলতি বছর ১৪৪টি নতুন দল নিবন্ধনের জন্য আবেদন করলেও প্রাথমিক যাচাই-বাছাইয়ে কোনো দলই উত্তীর্ণ হয়নি। এমন পরিস্থিতিতে ইসি প্রথম ধাপে ৬২টি দলকে ঘাটতি পূরণের জন্য চিঠি পাঠায়। এবার দ্বিতীয় ধাপে আরও ৮২টি দলকে চিঠি দেওয়া শুরু করেছে কমিশন, যার মধ্যে রয়েছে জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)।
রোববার (২০ জুলাই) বিষয়টি নিশ্চিত করেন ইসির উপসচিব মো. মাহবুব আলম শাহ। তিনি জানান, “প্রথম ধাপে ৬২টি দলকে চিঠি দেওয়া হয়েছিল। এখন দ্বিতীয় ধাপে আরও ৮২টি দলকে চিঠি পাঠানো হচ্ছে। প্রতিটি দলকে ঘাটতি সংশোধনের জন্য ১৫ দিন সময় দেওয়া হয়েছে।”
গত ২০ এপ্রিল পর্যন্ত নিবন্ধনের জন্য আবেদন আহ্বান করে একটি গণবিজ্ঞপ্তি জারি করেছিল ইসি। পরবর্তীতে বিভিন্ন দলের অনুরোধে সময়সীমা ২২ জুন পর্যন্ত বাড়ানো হয়। এই সময়ের মধ্যে মোট ১৪৪টি দল ১৪৭টি আবেদন জমা দেয়।
আইন অনুযায়ী, নিবন্ধন পেতে হলে একটি দলের কেন্দ্রীয় কমিটি, অন্তত এক-তৃতীয়াংশ জেলা ও ১০০টি উপজেলা কমিটি থাকতে হয়। প্রতিটি কমিটিতে কমপক্ষে ২০০ জন ভোটারের সমর্থনের প্রমাণ জমা দেওয়াও বাধ্যতামূলক। এছাড়া, কোনো দলের কেউ যদি সংসদ সদস্য নির্বাচিত হয়ে থাকেন বা পূর্ববর্তী নির্বাচনে কমপক্ষে পাঁচ শতাংশ ভোট পেয়ে থাকে, তাহলেও তারা নিবন্ধনের যোগ্য হিসেবে বিবেচিত হয়।
কমিশন প্রাথমিকভাবে আবেদনের কাগজপত্র যাচাই-বাছাই করে। এরপর মাঠপর্যায়ে তদন্ত করে তথ্যের সত্যতা যাচাই করে। সব তথ্য পর্যালোচনার পর কমিশন একটি বিজ্ঞপ্তির মাধ্যমে দাবি-আপত্তির সুযোগ দেয়। আপত্তি থাকলে শুনানি শেষে চূড়ান্ত সিদ্ধান্ত নেয় ইসি। আপত্তি না থাকলে সংশ্লিষ্ট দলকে নিবন্ধন সনদ দেওয়া হয়। উল্লেখ্য, নিবন্ধন ছাড়া কোনো দল নিজস্ব প্রতীক নিয়ে নির্বাচনে অংশ নিতে পারে না।
দ্বিতীয় ধাপে যেসব দলকে চিঠি দেওয়া হয়েছে, তার মধ্যে রয়েছে:
-
জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)
-
বাংলাদেশ সংগ্রামী ভোটার পার্টি
-
মুসলিম জনতা পার্টি
-
নতুন প্রজন্ম পার্টি
-
ওয়ার্ল্ড মুসলিম কমিউনিটি
-
বাংলাদেশ নাগরিক দল (বিএনডি)
-
ন্যাশনাল ফ্রিডম পার্টি
-
নতুন বাংলাদেশ পার্টি (এনবিপি)
-
জাতীয় জনতা পার্টি
-
কোয়্যালিশন-ন্যাশনাল পার্টি (সিএনপি)
-
জাস্টিস ফর হিউমিনিটি পার্টি
-
বাংলাদেশ বেকার মুক্তি পরিষদ
-
বাংলাদেশ জনকল্যাণ পার্টি (বাজপা)
-
বাংলাদেশ জাগ্রত পার্টি (বাজপ)
-
বাংলাদেশ জনতা পার্টি (বিজেপি)
-
বাংলাদেশ সোশাল ডেমোক্রেটিক পার্টি
-
মানবিক বাংলাদেশ পার্টি
-
বাংলাদেশ আজাদী পার্টি (বিএপি)
-
বাংলাদেশ রিপাবলিকান পার্টি (বিআরপি)
-
ডেমোক্রেটিক পার্টি (ডিপি)
-
গণদল
-
বাংলাদেশ মুক্তিযোদ্ধা জনতা পার্টি
-
ন্যাশনাল ডেমোক্রেটিক পার্টি (এনডিপি)
-
ভাষানী ন্যাপ
-
বাংলাদেশ সমতা পার্টি
-
বাংলাদেশ ইউনাইটেড পার্টি
-
বাংলাদেশ ইসলামিক ডেমোক্রেটিক পার্টি (বিআইডিপি)
-
ইসলামী গণতান্ত্রিক পার্টি (আইজিপি)
-
জাতীয় মুক্তি ফ্রন্ট দল (এনএফএফ)
-
নৈতিক সমাজ
-
বাংলাদেশ গ্রীন পার্টি
-
বাংলাদেশ পাবলিক অ্যাকশন পার্টি
-
এবং আরও অনেক ক্ষুদ্র, নবগঠিত কিংবা বিকল্প ধারার দল।
এছাড়াও আবেদন করেছে—
-
বাংলাদেশ ছাত্রজনতা পার্টি
-
খেলাফত ইসলাম
-
বাংলাদেশ সংখ্যালঘু অধিকার পার্টি
-
বাংলাদেশ জাস্টিস মুভমেন্ট
-
বাংলাদেশ জনমত পার্টি
-
বাংলাদেশি জনগণের পার্টি
-
বাংলাদেশ মাতৃভূমি দল
-
বাংলাদেশ ন্যাশনাল লেবার পার্টি (এনএলপি)
-
বাংলাদেশ সমাজতান্ত্রিক দল (মার্কসবাদী)
-
জাতীয় পেশাজীবী দল (এসপিপি)
-
বাংলাদেশ ইনসাফ পার্টি
-
মুসলিম সেভ ইউনিয়ন
-
এবং আরও বেশকিছু আঞ্চলিক বা বিষয়ভিত্তিক সংগঠন।
নিবন্ধনের জন্য এতো বিপুল সংখ্যক দল আবেদন করলেও আইনি কাঠামো অনুযায়ী প্রাথমিক শর্ত পূরণে অনেকেই ব্যর্থ হয়েছে। এ কারণে ইসি ধাপে ধাপে চিঠি দিয়ে ঘাটতি পূরণের সুযোগ দিচ্ছে। পরবর্তী ধাপে তথ্য যাচাই ও শুনানি শেষে নির্বাচনের আগেই চূড়ান্ত নিবন্ধিত দলগুলোর তালিকা প্রকাশ করা হবে বলে ইসির কর্মকর্তারা জানিয়েছেন।
সম্পাদকঃ সারোয়ার কবির | প্রকাশকঃ আমান উল্লাহ সরকার
যোগাযোগঃ স্যুইট # ০৬, লেভেল #০৯, ইস্টার্ন আরজু , শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম সরণি, ৬১, বিজয়নগর, ঢাকা ১০০০, বাংলাদেশ।
মোবাইলঃ +৮৮০ ১৭১১৩১৪১৫৬, টেলিফোনঃ +৮৮০ ২২২৬৬৬৫৫৩৩
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৫