জামায়াত নেতা যুবলীগ নেতাকে থানা থেকে ছাড়িয়ে নিতে এসে জামাত কর্মীর লাইভ করায় বহিস্কার

সীতাকুণ্ড (চট্টগ্রাম) প্রতিনিধি:-
সীতাকুণ্ডে এক যুবলীগ নেতা আটকের পর থানা থেকে ছাড়িয়ে নিতে দায়িত্বশীল জামায়াত নেতা প্রফেসর জাহাঙ্গীর আলম থানায় আসলে জামায়াত কর্মীর নজরে পড়লে তিনি লাইভে এসে প্রচার করলে সবাই থানা থেকে বের হয়ে যান,পরে এক বিজ্ঞপ্তিতে উক্ত জামায়াত কর্মী সহ উপজেলা সাবেক আমীর সহ দুজনকে দলের সকল কার্যক্রম থেকে বহিস্কার করা হয়েছে।
এনিয়ে উক্ত ঘটনাকে কেন্দ্র করে গতকাল থেকে ফেসবুক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে আলোচনা সমালোচনার ঝড় উঠেছে।
বিভিন্ন সূত্রে জানা যায়,গত ১৪ সেপ্টেম্বর বিকালে সীতাকুণ্ড সদর থেকে বাঁশবাড়িয়া ইউপি সাবেক মেম্বার ও যুবলীগ নেতাকে আটক করে রুবেল আনসারী সহ কয়েকজন জামায়াত কর্মী। তাকে তাৎক্ষানিক ছাড়িয়ে নিতে জামায়াতের দায়িত্বশীল রুকন প্রফেসর জাহাঙ্গীর সীতাকুণ্ড মডেল থানায় উপস্থিত হয়ে ছিলেন।সেখানে উপস্হিত জামায়াতের নেতাকর্মীরা ঐ নেতাকে না ছড়ানোর জন্য জোরালো প্রতিবাদ করে এবং লাইভ ভিডিও সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে মুহুর্তেই ছড়িয়ে পড়লে নানা সমালোচনার জন্ম দেয়। এ ঘটনার জেরে জামায়াতের রুকন কে বহিস্কার করতে দলকে চাপ দেয়। জামায়াতের সহ সেক্রেটারী এক বিজ্ঞপ্তিতে গতকাল ১৮ সেপ্টেঃ জামায়াত কর্মী রুবেল আনসারী কে তার অনুসারী সাবেক উপজেলা জামায়াতের সভাপতি মাওলানা তাওহিদুল হক চৌধুরীসহ দুজনকে বহিস্কারের ঘোষনা দেন। বহিস্কার তাও একজন জুনিয়র নেতার সাক্ষরে দেখে তাওহিদুল হকের অনুসারীদের মধ্যে চরম ক্ষোভ ও সমালোচনার ঝড় উঠেছে। প্রফেসর মো. জাহাঙ্গীর থানায় আওয়ামী লীগের নেতা ছাড়িয়ে আনার ভিডিও লাইভ করা ওই জামায়াত কর্মী রুবেল আনছারীকে বহিষ্কার করায় ফেসবুক সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যমে তুমুল সমালোচনার ঝড়ের পাশাপাশি শয়ং জামায়াতের অনেক নেতাই তা মেনে নিতে পারেনি। কারণ প্রফেসর জাহাঙ্গীর একজন রুকন ঐদিন থানায় উপস্থিত হয়ে ছিলেন তা ভিডিও দেখলে এবং থানার সিসি ফুটেজ দেখে সত্যতা পাওয়া গেছে।
ঐদিন তিনি একজন রুকন হয়ে কেন থানায় গেলেন এবং যুব লীগ নেতাকে ছাড়িয়ে আনার জন্য ? পুলিশের উপর ছেড়ে দিতে পারতো। মেম্বার কে ছাড়ার সুপারিশ বিষয়টি আড়াল করে উল্টো রুবেলের উপর চাপিয়ে দিলেন দলের শৃঙ্খল ভঙ্গের অভিযোগ। বহিস্কার ঘোষিত রুবেল যিনি আওয়ামী লীগ সরকারের আমলে প্রায় ২৪ টি মামলার আসামী হয়ে ছিল,মাসকি মাস জেল খেটেছিল।বাংলাদেশ জামায়াতে ইসলামী সীতাকুণ্ড উপজেলার শাখার সহকারী সেক্রেটারী কুতুব উদ্দিন শিবলী স্বাক্ষরিত গত ১৭ সেপ্টম্বর প্রেস বিজ্ঞপ্তি সংগঠনের শৃংখলা ভঙ্গের অভিযোগে সংগঠনের এ কর্মীকে বহিষ্কার করা হয় বলে জানানো হয়।বহিষ্কারের সত্যতা নিশ্চিত করেন সীতাকুণ্ড উপজেলা জামায়াতের আমীর মাওলানা মিজানুর রহমান। তিনি বলেন, জেলা নেতৃবৃন্দের সাথে কথা বলে দলের শৃংখলা ভঙ্গের অভিযোগে তাকে বহিষ্কার করা হয়েছে বলে জানান। বিজ্ঞপ্তিতে বলা হয়, রুবেল আনসারী গত ১৪ সেপ্টেম্বর সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুক লাইভে ভিত্তিহীন ও উদ্দেশ্য প্রণোদিত বক্তব্য দেন। সেখানে তিনি দাবি করেন, স্থানীয় আওয়ামী লীগ নেতা সেলিম মেম্বারকে থানা থেকে জামায়াত নেতা ছাড়িয়ে আনার চেষ্টা করেছেন। যা সম্পূর্ণ মিথ্যা ও বানোয়াট। এ কারণে তাকে সংগঠনের সব কার্যক্রম থেকে এবং কর্মী ও প্রাথমিক সহযোগী সদস্য পদ থেকে বহিষ্কার করা হয়।উপজেলা জামায়াতের বিজ্ঞপ্তিতে আরও উল্লেখ করা হয়, তাছাড়া একই বিজ্ঞপ্তিতে ইতিপূর্বে একই ধরনের সাংগঠনিক শৃঙ্খলা ভঙ্গের দায়ে সীতাকুণ্ড উপজেলার সাবেক আমীর মাওলানা তাওহীদুল হক চৌধুরীকেও বহিষ্কার করা হয়। গত বুধবার (১৭/০৯/২৫ইং) কুতুব উদ্দিন শিবলী স্বাক্ষরিত প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে জামাতের সাবেক আমির তাওহীদুল হক বহিষ্কার এই ধরনের কথা ফেসবুক সোশ্যাল মিডিয়ায় প্রকাশ করলে কুতুব উদ্দিন শিবলীর প্রতি পৌরসভাসহ পুরো উপজেলায় জামায়াতের নেতাকর্মীদের মাঝে চরম ক্ষোভ এবং সমালোচনা শুরু হয়।এদিকে,বহিষ্কার আদেশে রুবেল আনছারী সামাজিক যোগাযোগ মাধ্যম ফেসবুকে লিখেছেন,তার প্রতি বহিষ্কারাদেশ অন্যায়,অবিচার ও ভিত্তিহীন এবং অন্যায়কে আড়াল করার সামিল।কারণ ‘আলহামদুলিল্লাহ এটা মিথ্যা অপপ্রচার নয়, চির সত্য। সেলিম মেম্বারকে ছাড়াতে প্রফেসর জাহাঙ্গীর ভাই থানায় গিয়ে ছিল। আর একথা সাংবাদিকদের কাছে জাহাঙ্গীর ভাই বলেছে যে, উনি সেলিম মেম্বার আওয়ামী লীগ বা যুবলীগ করে আমি জানিনা,তানি আমার আত্মীয় তাই দেখতে গিয়েছিলাম।
অপরদিকে সীতাকুণ্ড উপজেলা জামায়াতের সাবেক আমীর মাওলানা তাওহীদুল হক চৌধুরী বলেন, ষড়যন্ত্র করে কোন সুফল বয়ে আনবে না। কিছু লোকের ষড়যন্ত্র এক দিন না এক দিন প্রকাশ হবে ইনশাআল্লাহ।তারা আমাকে মাইনাস করে কোন অপকর্ম করে পার পাবেনা,রুবেল আনসারী সহ আমরা বিগত সরকারের আমলে নির্যাতিত,আমাকে ক্রসফায়ার দিতে নিয়ে যাচ্ছিল,সৃষ্টিকর্তা বাচিঁয়েছে।বিষয়টি তিনি কেন্দ্রীয় জামায়াতে ইসলাম বাংলাদেশ এর নেতৃবৃন্দ কে নিরপক্ষ গোপনীয় তদন্ত করে সত্য উৎঘাটন করার দাবী জানান।
সম্পাদকঃ সারোয়ার কবির | প্রকাশকঃ আমান উল্লাহ সরকার
যোগাযোগঃ স্যুইট # ০৬, লেভেল #০৯, ইস্টার্ন আরজু , শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম সরণি, ৬১, বিজয়নগর, ঢাকা ১০০০, বাংলাদেশ।
মোবাইলঃ +৮৮০ ১৭১১৩১৪১৫৬, টেলিফোনঃ +৮৮০ ২২২৬৬৬৫৫৩৩
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৫