প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি ‘মন কি বাত’ শোনান দেশবাসীকে, আর রাহুল গান্ধী শোনেন দেশবাসীর ‘মন কি বাত’। কর্ণাটক রাজ্যে নির্বাচন চলাকালে বাসে চেপে তিনি যাত্রীদের কথা শুনেছিলেন। বাড়ি বাড়ি খাবার পৌঁছে দেন যে তরুণেরা, তাঁদের কথা শুনেছিলেন। এবার শুনলেন ট্রাকচালকদের সুখ-দুঃখের কাহিনি। গতকাল সোমবার রাতে।
ভারতের হিমাচল প্রদেশের রাজধানী শিমলায় মা ও বোনের কাছে যাবেন বলে দিল্লি থেকে গতকাল সোমবার রাতে রওনা হয়েছিলেন কংগ্রেস নেতা রাহুল গান্ধী। দিল্লি থেকে ১০০ কিলোমিটার দূরে হরিয়ানার ঐতিহাসিক পানিপথে এক ধাবায় (রাস্তার পাশের খাওয়ার দোকান) কিছু সময়ের জন্য থেমেছিলেন। সেখানে তখন দূরপাল্লার ট্রাকচালকদের ভিড়। রাতের খাবারের প্রস্তুতি। তাঁদের সঙ্গে খোশগল্পে মাতলেন রাহুল।
তারপর হঠাৎই এক চালকের সঙ্গে ট্রাকে চেপে বসলেন। চালকের পাশের আসনে বসে কথা বলতে বলতে চলে গেলেন পাঞ্জাব-হরিয়ানার রাজধানী চণ্ডীগড়ের অদূরে আম্বালা পর্যন্ত।
রাহুলের এই ১২৫ কিলোমিটার ট্রাক সফরের একটি ভিডিও কংগ্রেস প্রকাশ করেছে। তাতে লেখা, ট্রাকচালকদের সমস্যা জানতে রাহুল গান্ধী তাঁদের কাছে পৌঁছেছেন। দেশে ট্রাক চালান প্রায় ৯০ লাখ মানুষ। তাঁদের নানা সমস্যার মুখোমুখি হতে হয়। ট্রাকচালকদের ‘মন কি বাত’ শোনার চেষ্টাই রাহুল করলেন।
ভিডিওতে দেখা যাচ্ছে, রাহুল ট্রাকে চেপে বসছেন। জাতীয় সড়ক ধরে ট্রাক চলছে। চালকের পাশে রাহুলকে দেখে অন্য গাড়িচালকেরা বিস্মিত। এক গাড়িচালককে রাহুলের দিকে হাত নাড়তেও দেখা যায়। রাহুলও হাত নাড়েন।
‘ভারত জোড়ো যাত্রা’র উদ্দেশ্য ছিল দেশকে আরও ভালোভাবে চেনাজানার পাশাপাশি জনসংযোগ বাড়ানো। দীর্ঘ এ যাত্রাপথে রাহুল প্রতিদিন সমাজের নানা শ্রেণি-পেশার মানুষের সঙ্গে কথা বলেছেন। তাঁদের অভাব, অভিযোগ, চাহিদার কথা শুনেছেন।
কর্ণাটক নির্বাচনের প্রচার চলাকালেও রাহুল বিভিন্ন পেশার মানুষের সঙ্গে মিশেছেন। বাসের সওয়ারি হয়ে বাসযাত্রীদের সঙ্গে কথা বলেছেন। খাবার ডেলিভারি পেশার সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের সঙ্গে বসে তাঁদের কথা শুনেছেন। তাঁদের বাইকে সওয়ারি হয়ে গন্তব্যে পৌঁছেছেন।
এবার শুনলেন ট্রাকচালকদের মনের কথা। বিশেষ করে সেই সব চালক, যাঁরা হাইওয়ে ধরে এক রাজ্য থেকে অন্য রাজ্যে পাড়ি দেন পণ্য পৌঁছাতে। জানতে চেয়েছেন তাঁদের অভিজ্ঞতার কথা। বুঝতে চেয়েছেন কোন ধরনের সমস্যার মুখোমুখি তাঁদের হতে হয়। অন্য একটি ভিডিওতে রাহুলকে দেখা যায় শিখ সম্প্রদায়ের তীর্থস্থান গুরুদুয়ারায় সাধারণ মানুষের সঙ্গে কথা বলতে।
কংগ্রেস নেতারা বলছেন, প্রধানমন্ত্রী সবাইকে তাঁর মনের কথা শোনান। দেশবাসীর মনের কথা শোনেন না। তাই জানেনও না। রাহুল অন্যদের মনের কথা শোনেন। পার্থক্য এটুকুই।