চবি’র পাঁচ শিক্ষার্থী অপহরণ: রোববার তিন পার্বত্য জেলা ও সারাদেশে বিক্ষোভের ডাক

  প্রিন্ট করুন   প্রকাশকালঃ ১৯ এপ্রিল ২০২৫ ০৯:২৩ অপরাহ্ণ   |   ১৩৯ বার পঠিত
চবি’র পাঁচ শিক্ষার্থী অপহরণ: রোববার তিন পার্বত্য জেলা ও সারাদেশে বিক্ষোভের ডাক

মোহাম্মদ করিম,খাগড়াছড়ি:-

 

চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের পাঁচ পাহাড়ি শিক্ষার্থী অপহরণের ঘটনায় রোববার তিন পার্বত্য জেলা ও সারাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে বিক্ষোভ মিছিল ও মানববন্ধনের ডাক দেওয়া হয়েছে। শনিবার বিকেলে চবি ক্যাম্পাসে চাকসু ভবনের সামনে আয়োজিত এক সংবাদ সম্মেলনে চট্টগ্রাম বিশ্ববিদ্যালয়ের আদিবাসী শিক্ষার্থীদের ব্যানারে এই কর্মসূচি ঘোষণা করা হয়।
 

সংবাদ সম্মেলনে বক্তারা অভিযোগ করেন, অপহরণের পর চার দিন পেরিয়ে গেলেও বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসন, জেলা প্রশাসন ও আইনশৃঙ্খলা বাহিনীর পক্ষ থেকে দৃশ্যমান কোনো পদক্ষেপ নেওয়া হয়নি। এসময় তিনটি দাবি তুলে ধরা হয়— অপহৃত শিক্ষার্থীদের সুস্থ অবস্থায় দ্রুত মুক্তি, উদ্ধার তৎপরতায় প্রশাসনের জোরালো ও কার্যকর ব্যবস্থা গ্রহণ এবং অপহরণকারীদের গ্রেপ্তার করে দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি প্রদান।
 

গত বুধবার ভোরে বিজু উৎসব শেষে খাগড়াছড়ি সদরের গিরিফুল এলাকা থেকে ক্যাম্পাসে ফেরার পথে পাঁচ শিক্ষার্থী— রিশন চাকমা, অলড্রিন ত্রিপুরা, মৈত্রীময় চাকমা, দিব্যি চাকমা ও লংঙি ম্রো অপহরণের শিকার হন। এ ঘটনায় জেএসএস সমর্থিত পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের কেন্দ্রীয় সভাপতি নিপুন ত্রিপুরা ইউপিডিএফকে দায়ী করলেও, সংগঠনটির জেলা সংগঠক অংগ্য মারমা তা অস্বীকার করেছেন।
 

অপহৃতদের উদ্ধারে যৌথ বাহিনীর অভিযান চলছে। শনিবারও খাগড়াছড়ি সদরের ভাইবোনছড়াসহ বিভিন্ন এলাকায় অভিযান চালানো হয়। তবে চার দিনেও অপহরণকারীদের কাউকে গ্রেপ্তার করা সম্ভব হয়নি।
 

পার্বত্য চট্টগ্রামবিষয়ক মন্ত্রণালয়ের উপদেষ্টা সুপ্রদীপ চাকমা বলেন, অপহৃত শিক্ষার্থীদের উদ্ধারে তিনি সর্বোচ্চ চেষ্টা চালিয়ে যাচ্ছেন। সেনাবাহিনীসহ অন্যান্য বাহিনীও সক্রিয় রয়েছে। শিক্ষার্থীরা উদ্ধারের পর অপহরণকারীদের বিরুদ্ধে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে তিনি জানান।
 

সংবাদ সম্মেলনে লিখিত বক্তব্যে চবির আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের শিক্ষার্থী জাল্লাং এনরিকো কুবি বলেন, “চার দিনেও প্রশাসনের কোনো কার্যকর পদক্ষেপ আমরা দেখতে পাইনি, অপহৃতদের কোনো খোঁজ মেলেনি। এ ঘটনায় আদিবাসী শিক্ষার্থীরা গভীরভাবে উদ্বিগ্ন।”
 

তিনি আরও বলেন, “চবি ক্যাম্পাসসহ সারাদেশের শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান, তিন পার্বত্য জেলা ও বিভিন্ন মহানগরে বিক্ষোভ ও মানববন্ধনে অংশগ্রহণ এবং সংহতি জানাতে আমরা সকল সচেতন, মানবিক ও প্রগতিশীল ছাত্র এবং নাগরিক সমাজের প্রতি আহ্বান জানাচ্ছি।”
 

সংবাদ সম্মেলনে আরও উপস্থিত ছিলেন চবি পাহাড়ি ছাত্র পরিষদের সভাপতি অন্বেষ চাকমা, যিনি বলেন, “স্থানীয় সূত্র থেকে ইউপিডিএফ-এর জড়িত থাকার বিষয়টি জানতে পেরেছি। অপহরণের স্থানটিও ইউপিডিএফ প্রভাবিত এলাকা।”
 

তিনি আরও জানান, “অপহরণকারীরা অভিভাবকদের ডেকে নিলেও তাদের মাধ্যমে শিক্ষার্থীদের সম্পর্কে বিস্তারিত জানা সম্ভব হয়নি। এমনকি অভিভাবকদেরও শিক্ষার্থীদের সঙ্গে দেখা করতে দেওয়া হয়নি।”
 

এ সময় উপস্থিত ছিলেন আন্তর্জাতিক সম্পর্ক বিভাগের প্রভাষক শাংথুই প্রু, ইতিহাস বিভাগের শিক্ষার্থী ভুবন চাকমা, পহেলা চাকমা ও পালি বিভাগের উহ্লাথোয়াই মারমা প্রমুখ।