জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্ধারিত সময়ের আগেই ভেঙা হলো পাকিস্তানের পার্লামেন্ট

প্রকাশকালঃ ১০ আগu ২০২৩ ০৬:০৯ অপরাহ্ণ ১৭৫ বার পঠিত
জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্ধারিত সময়ের আগেই ভেঙা হলো পাকিস্তানের পার্লামেন্ট

জাতীয় নির্বাচনকে সামনে রেখে নির্ধারিত সময়ের আগেই পাকিস্তানের পার্লামেন্ট ভেঙে দেয়া হলো। পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ বুধবার (৯ আগস্ট) মধ্যরাতে পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়ার জন্য রাষ্ট্রপতি আরিফ আলভির কাছে আনুষ্ঠানিকভাবে আবেদন করলে তা গ্রহণ করেন রাষ্ট্রপতি। 

এদিকে কারাবন্দী পিটিআই নেতা ইমরান খানের নির্বাচনে অংশগ্রহণ নিয়ে অনিশ্চয়তা দেখা দিয়েছে। তাই অনেকেই বলছেন, দেশটির অন্যতম জনপ্রিয় এই নেতাকে বাদ দিয়ে নির্বাচনের আয়োজন পুরো প্রক্রিয়াকে প্রশ্নবিদ্ধ করতে পারে।

প্রতিবেদনে বলা হয়, নানা নাটকীয়তা ও জল্পনা-কল্পনার অবসান ঘটিয়ে পাকিস্তানের পার্লামেন্ট ভেঙে দেওয়া হয়েছে। প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভি নির্ধারিত সময়ের তিন দিন আগে বুধবার (৯ আগস্ট) রাতে পার্লামেন্ট ভেঙে দেন। যদিও এর আগে প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ প্রেসিডেন্টের কাছে পার্লামেন্ট ভেঙে দিতে আনুষ্ঠানিক আবেদন করেন । 


এছাড়া সংবিধান অনুযায়ী সংসদ ভেঙে দেয়ার ৯০ দিনের মধ্যে জাতীয় নির্বাচন অনুষ্ঠানের বাধ্যবাধকতা রয়েছে। তবে, জাতীয় পরিষদের মেয়াদ শেষ হলে ৯০ দিনের পরিবর্তে ৬০ দিনের মধ্যে নির্বাচন অনুষ্ঠানের বিধান রয়েছে। ২০১৮ সালের ১২ আগস্ট পাকিস্তানে সাধারণ নির্বাচনে জয় পাওয়ার পর ইমরান খানের নেতৃত্বাধীন জোট সরকার যাত্রা শুরু করেছিল। কিন্তু গত বছরের এপ্রিলে পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদে বিরোধীদের আনা আস্থা ভোটে হেরে ইমরানের সরকার ক্ষমতা হারায়। পরবর্তীতে শাহবাজ শরিফের নেতৃত্বে বিরোধীরা জোট সরকার গঠন করে। 

প্রতিবেদনে আরও বলা হয়, ইসলামাবাদ আদালত এরই মধ্যে তোশাখানা মামলায় দোষী সাব্যস্ত করে ইমরান খানকে তিন বছরের কারাদণ্ড দিয়েছেন এবং কারাবন্দি এই পিটিআই নেতাকে পাঁচ বছরের জন্য নির্বাচন থেকে নিষিদ্ধও ঘোষণা করেছে দেশটির নির্বাচন কমিশন। এ অবস্থায় আসন্ন নির্বাচনে ইমরান খানের অংশগ্রহণ অনিশ্চিত। 
 

রাজনৈতিক অনেক বিশ্লেষকের মতে, ২০১৮ সালে পাকিস্তানের সেনাবাহিনীর সহায়তায় ইমরান খান ক্ষমতায় এসেছিলেন বলে ধারণা করা হয়। কিন্তু এখন সেই সম্পর্কে ফাটল ধরেছে এবং তার রাজনৈতিক প্রতিপক্ষরা এই সুযোগকে কাজে লাগাচ্ছেন। তবে এটিও মনে করা হয় যে, ইমরান খানের ওপর পাকিস্তানের সাধারণ মানুষের একটি বড় অংশের সমর্থন রয়েছে। ফলে তাকে বাদ দিলে বা জেলে রেখে নির্বাচনের আয়োজন করলে পুরো গণতান্ত্রিক প্রক্রিয়া প্রশ্নবিদ্ধ হবে। 
 
এদিকে, পাকিস্তানের প্রধানমন্ত্রী শাহবাজ শরিফ পার্লামেন্টে বিদায়ী ভাষণ দিয়েছেন । তিনি জানান, ৩৬ বছরের রাজনৈতিক জীবনে এই ১৬ মাস প্রধানমন্ত্রী হিসেবে দেশ পরিচালনা সবচেয়ে কঠিন ছিল। একইসঙ্গে আগের সরকারের ব্যর্থতা ও অবহেলার দায় নিয়েই দেশ পরিচালনা করতে হয়েছে বলেও উল্লেখ করেন তিনি। 

এর আগে, শাহবাজ শরিফ বুধবার স্থানীয় সময় সকালে পার্লামেন্ট ভেঙে দিতে প্রেসিডেন্ট আরিফ আলভির কাছে আনুষ্ঠানিক আবেদন জানানোর ঘোষণা দেন । একইসঙ্গে জানান তিনি, অন্তর্বর্তীকালীন সরকারের প্রধান কে হবেন তা নিয়ে পাকিস্তানের জাতীয় পরিষদের বিরোধী দলের নেতা রাজা রিয়াজের সঙ্গে আলোচনা শেষে বৃহস্পতিবার (১০ আগস্ট) সিদ্ধান্ত নেয়া হবে। বিবিসি