অন্যের দোষচর্চা ছাড়ার বিনিময়ে জান্নাত

প্রকাশকালঃ ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০৩:০৩ অপরাহ্ণ ১৭৯ বার পঠিত
অন্যের দোষচর্চা ছাড়ার বিনিময়ে জান্নাত

ঙ্গ-প্রত্যঙ্গ আল্লাহর দান। তাই আল্লাহর নির্দেশ মেনে এগুলোর সঠিক ব্যবহার করতে হবে। চোখ, কান, মুখ আল্লাহর বিশেষ দান। এসব অঙ্গের সদ্ব্যবহার জরুরি। কিয়ামতের দিন এগুলো ব্যবহারের বিষয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হবে। পবিত্র কোরআনে ইরশাদ হয়েছে, ‘আর যে বিষয় তোমার জানা নেই তার অনুসরণ কোরো না। নিশ্চয়ই কান, চোখ ও অন্তর—এগুলোর প্রত্যেকটির ব্যাপারে কৈফিয়ত তলব করা হবে।’ (সুরা : বনি ইসরাঈল, আয়াত : ৩৬)

অন্যদিকে চোখ, কান ও মুখের হেফাজত করার বিনিময়ে জান্নাত লাভের প্রতিশ্রুতি আছে। জান্নাত সৃষ্টি করা হয়েছে শুধু সেসব মুমিনের জন্য, যারা প্রবৃত্তির মুখের লাগাম টেনে নিজের দেহ-মনকে সর্বদা আল্লাহমুখী করে রাখে এবং প্রবৃত্তির বিরোধিতা করে। আর প্রবৃত্তির চাহিদা বাস্তবায়িত করার প্রধান মাধ্যম হলো জিহ্বা ও লজ্জাস্থান। লজ্জাস্থানের হেফাজত করা অনেক মুমিনের পক্ষে সম্ভব হলেও জিহ্বার হেফাজত করাটা তত সহজ নয়। 

তবে যারা দেহের এই দুটি অঙ্গকে হেফাজত করার গ্যারান্টি দিতে পারেন, রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তাদের জন্য জান্নাতের গ্যারান্টি দিয়েছেন। সাহল ইবনে সাদ (রা.)-এর বর্ণনায় রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি তার দুই চোয়ালের মধ্যবর্তী জিহ্বা ও দুই উরুর মধ্যবর্তী লজ্জাস্থানের জিম্মাদার হবে, আমি তার জন্য জান্নাতের জিম্মাদার হব।’ (বুখারি, হাদিস : ৬৪৭৪)


আলোচ্য হাদিসের মর্মার্থ হলো, যে ব্যক্তি হারাম কথাবার্তা, মিথ্যা, গিবত, চোগলখুরি, ধোঁকাবাজি প্রভৃতি থেকে নিজের জিহ্বাকে হেফাজত করবে এবং জিনা, ব্যভিচার ও পাপাচার থেকে নিজের লজ্জাস্থানকে হেফাজত করবে, কিয়ামতের দিন রাসুলুল্লাহ সাল্লাল্লাহু আলাইহি ওয়া সাল্লাম তার জান্নাতে যাওয়ার ব্যাপারে জিম্মাদার হয়ে যাবেন। (উসায়মিন, শারহু রিয়াজিস সালিহিন, ৬/১১৮)

গিবত করার মাধ্যমে নিন্দিত ব্যক্তির সম্মান হানি করা হয়, তাকে খাটো করার চেষ্টা করা হয়, যে ব্যক্তি পরনিন্দা থেকে যেকোনোভাবে বিরত থাকবে এবং অন্যের সম্মান রক্ষার চেষ্টা করবে, কিয়ামতের দিন মহান আল্লাহ তাকে জাহান্নাম থেকে মুক্তি দেবেন। এবং জান্নাতের অধিকারী বানাবেন। আবুদ দারদা (রা.) থেকে বর্ণিত, মহানবী (সা.) বলেছেন, ‘যে ব্যক্তি তার কোনো ভাইয়ের মান-সম্মানের ওপর আঘাত প্রতিরোধ করে, কিয়ামত দিবসে আল্লাহ তার মুখমণ্ডল থেকে জাহান্নামের আগুন দূর করে দেবেন। (তিরমিজি, হাদিস : ১৯৩১)

আর যাকে জাহান্নামের আগুন থেকে রক্ষা করা হবে, সে-ই তো জান্নাতে যাবে।