|
প্রিন্টের সময়কালঃ ০৮ এপ্রিল ২০২৫ ০৯:৫৬ অপরাহ্ণ     |     প্রকাশকালঃ ১৪ অক্টোবর ২০২৩ ০৩:০৭ অপরাহ্ণ

বকুলতলায় অনুষ্ঠিত হয়েছে শরৎ উৎসব


বকুলতলায় অনুষ্ঠিত হয়েছে শরৎ উৎসব


বাংলার প্রকৃতির স্নিগ্ধতার প্রতিচ্ছবি শরতের বিদায় আসন্ন। তবে এখনো নদীর পারে বা গ্রামীণ প্রান্তরে মৃদু বাতাসে দুলছে শুভ্র কাশফুল। বাগানে বাগানে সৌরভ ছড়াচ্ছে শিউলি। মাথার ওপরেও শারদ আকাশের খণ্ড সাদা-নীল মেঘমালা।

মাঝে মাঝে একই সঙ্গে চলছে রোদ-বৃষ্টির খেলা। গতকাল শুক্রবার ছুটির দিনে শারদীয় প্রকৃতির এই চিত্রটিই উঠে এলো সবুজ শ্যামলে ছাওয়া ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের চারুকলা অনুষদে। বৃক্ষ ও লতাপাতার মাঝে সজ্জিত বকুলতলার মঞ্চ থেকে উৎসারিত হয়েছে শরতের প্রতি বাঙালির চিরন্তন অনুুরাগ-ভালোবাসা। সকাল থেকে রাত অবধি বকুলতলায় অনুষ্ঠিত হয়েছে শরৎ উৎসব।

সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠীর এ আয়োজনে স্বতঃস্ফূর্তভাবে শামিল হয়েছে রাজধানীবাসী। শিকড়সন্ধানী মানুষ সাতসকালে উপস্থিত হয়েছিলেন উৎসব আঙিনায়। সাদা, নীল ও আকাশি রঙের পোশাক পরে তাঁরা যোগ দিয়েছেন শরৎ বন্দনায়। প্রাণবন্ত উৎসবমুখর এ আয়োজনে তাঁদের সঙ্গী হয়েছিল গানের সুর আর নাচের ছন্দ।


মঞ্চ থেকে ভেসে আসা সুরে ঠোঁট মিলিয়ে শ্রোতারাও গেয়েছেন—‘অমল ধবল পালে লেগেছে মন্দ মধুর হাওয়া/দেখি নাই কভু দেখি নাই এমন তরণী বাওয়া...।’

নৃত্য-গীতের সঙ্গে ছিল বিষয়ানুগ কবিতার ছন্দোময় উপস্থাপনা। রবীন্দ্রনাথ, নজরুলের অফুরন্ত ভাণ্ডার থেকে ফকির লালন সাঁই কিংবা অতুল প্রসাদের সৃষ্টির নির্যাস ছিল আয়োজনজুড়ে। নাচ-গান ও কবিতার সমন্বিত আয়োজনটিকে বর্ণিল করে খুদে চিত্রকরদের রং-তুলিতে ফুটে ওঠা শরতের দৃশ্যাবলি। শাস্ত্রীয় সংগীতের আশ্রয়ে উৎসবের প্রভাতি পর্বের সূচনা হয়।

পাখোয়াজের সুর ও তবলার বোলে রাগ আশাবরী পরিবেশন করেন অভিজিৎ কুণ্ডু। গানে শরতের চিত্র আঁকেন সালাউদ্দিন আহমেদ। ভরাট কণ্ঠে গেয়ে শোনান—‘এসো শারদ প্রাতের পথিক, এসো শিউলি বিছানো পথে/এসো ধুইয়া চরণ শিশিরে, এসো অরুণ-কিরণ-রথে...।’


কবিতার শিল্পিত উচ্চারণে আশ্বিনের সকালটি রাঙিয়ে দেন বাচিক শিল্পী নায়লা তারান্নুম চৌধুরী কাকলী। আবৃত্তি করেন নির্মলেন্দু গুণের কবিতা ‘কাশফুলের কাব্য’। এর বাইরে দলীয় আবৃত্তি পরিবেশন করে শিশু-কিশোর সংগঠন শিল্পবৃত্ত। সম্মেলক সংগীত পরিবেশন করে পঞ্চভাস্বর, সমস্বর, সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠী, বুলবুল একাডেমি অব ফাইন আর্টস (বাফা) ও শিশু-কিশোর সংগঠন সুরবিহারের শিল্পীরা। শাস্ত্রীয় থেকে আধুনিক ধারার নাচ পরিবেশন করেছেন স্পন্দন, ভাবনা, বাফা, নৃত্যাঙ্গ এবং পুলিশ থিয়েটার অ্যান্ড কালচারাল ক্লাবের নৃত্যশিল্পীরা।

আলোচনা পর্বের প্রধান অতিথি ছিলেন স্বরাষ্ট্রমন্ত্রী আসাদুজ্জামান খান কামাল। বিশেষ অতিথির বক্তব্য দেন সম্মিলিত সাংস্কৃতিক জোটের সভাপতি গোলাম কুদ্দুছ। স্বাগত বক্তব্য দেন সত্যেন সেন শিল্পীগোষ্ঠীর সাধারণ সম্পাদক মানজার চৌধুরী সুইট। সভাপতিত্ব করেন সংগঠনের সহসভাপতি নৃত্যশিল্পী অধ্যাপক নিগার চৌধুরী।

আলোচনা শেষে শুরু হয় শিশু-কিশোরদের উন্মুক্ত চিত্রাঙ্কন প্রতিযোগিতা। খুদে শিল্পীরা রং-তুলির আঁচড়ে ফুটিয়ে তোলে শরতের নানা রূপ। এরপর বিকেলে অনুষ্ঠিত হয় উৎসবের দ্বিতীয় পর্ব। বিকেল থেকে রাত অবধি পরিবেশিত হয়েছে শিশু-কিশোরদের দলীয় আবৃত্তি ও সংগীত পরিবেশনা। ছোটদের সঙ্গে ছিল বড়দের একক ও দলীয় নাচ, গান ও আবৃত্তি।


সম্পাদকঃ সারোয়ার কবির     |     প্রকাশকঃ আমান উল্লাহ সরকার
যোগাযোগঃ স্যুইট # ০৬, লেভেল #০৯, ইস্টার্ন আরজু , শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম সরণি, ৬১, বিজয়নগর, ঢাকা ১০০০, বাংলাদেশ।
মোবাইলঃ   +৮৮০ ১৭১১৩১৪১৫৬, টেলিফোনঃ   +৮৮০ ২২২৬৬৬৫৫৩৩
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৫