সাড়ে ৩ কোটি ডলারের ক্রিপ্টোকারেন্সি চুরি

প্রকাশকালঃ ০৮ জুন ২০২৩ ০৬:৩৩ অপরাহ্ণ ১৬৪ বার পঠিত
সাড়ে ৩ কোটি ডলারের ক্রিপ্টোকারেন্সি চুরি

ক্রিপ্টোকারেন্সি পরিষেবা প্রতিষ্ঠান অ্যাটমিক ওয়ালেট থেকে সম্প্রতি ৩৫ মিলিয়ন বা সাড়ে ৩ কোটি মার্কিন ডলারের বেশি মূল্যের ক্রিপ্টোকারেন্সি চুরি হয়েছে। এই বিপুল পরিমাণ ক্রিপ্টোকারেন্সি কে চুরি করেছে, তা এখনো জানা যায়নি। তবে একাধিক ক্রিপ্টো ট্র্যাকিং বিশেষজ্ঞ জানিয়েছেন, উত্তর কোরিয়ার হ্যাকাররা এটি চুরি করে থাকতে পারে। খবর সিএনএনের।

হ্যাকাররা অ্যাটমিক ওয়ালেটের কিছু গ্রাহকের ক্রিপ্টোকারেন্সি অ্যাকাউন্ট থেকে এই কারেন্সি চুরি করেছে। এস্তোনিয়াভিত্তিক কোম্পানি অ্যাটমিক ওয়ালেটের বিশ্বব্যাপী ৫০ লাখের বেশি গ্রাহক বা ব্যবহারকারী রয়েছেন।

কারা এই চুরি করেছে এবং কীভাবে করেছে, এখন সেই তদন্ত চলছে। তবে এ চুরির ঘটনা চিন্তার ভাঁজ ফেলেছে মার্কিন কর্মকর্তাদের কপালে। যুক্তরাষ্ট্রের কর্মকর্তাদের উদ্বেগের কারণ—উত্তর কোরিয়ার পারমাণবিক ও ব্যালিস্টিক অস্ত্র কর্মসূচিতে এ অর্থ ব্যবহার করা হতে পারে।


অ্যাটমিক ওয়ালেট গত শনিবার জানিয়েছে, তাদের ১ শতাংশের কম ব্যবহারকারীর (গ্রাহকের) অ্যাকাউন্ট হ্যাক করে এই অর্থ চুরি করা হয়েছে। তবে ঠিক কী পরিমাণ অর্থ চুরি গেছে কিংবা হ্যাক করার পেছনে কারা ছিল, তা নির্দিষ্ট করে জানায়নি প্রতিষ্ঠানটি। সিএনএন থেকে এ বিষয়ে জানতে চাওয়া হলেও তারা মন্তব্য করেনি।

এদিকে অ্যাটমিক ওয়ালেট প্ল্যাটফর্মে অর্থ হারিয়েছেন, এমন কয়েক ব্যক্তি টুইটারে পোস্ট করে খোয়া যাওয়া ক্রিপ্টোকারেন্সি ফেরত দিতে হ্যাকরদের অনুরোধ জানিয়েছেন।


উত্তর কোরিয়ার হ্যাকাররা কয়েক বছর ধরে বিভিন্ন ব্যাংক ও ক্রিপ্টোকারেন্সি প্রতিষ্ঠান থেকে কয়েক শ কোটি বা বিলিয়ন ডলার চুরি করেছে। জাতিসংঘ ও বিভিন্ন গোয়েন্দা সংস্থা জানিয়েছে, এসব অর্থ উত্তর কোরিয়ার সরকারের রাজস্বের অন্যতম মূল উৎস।

লন্ডনভিত্তিক ক্রিপ্টো ট্র্যাকিং ফার্ম এলিপটিক জানিয়েছে, অ্যাটমিক ওয়ালেটের ঘটনায় হ্যাকাররা মানি লন্ডারিংয়ের কৌশল ব্যবহার করেছে। সে জন্য তারা যেসব সরঞ্জাম ব্যবহার করেছে, তা উত্তর কোরিয়ার হ্যাকারদের আচরণের সঙ্গে মিলে যায়।


জ্যাকএক্সবিটি নামের অপর একটি স্বাধীন ক্রিপ্টোকারেন্সি ট্র্যাকার প্রতিষ্ঠান সিএনএনকে জানিয়েছে, এই চুরির পেছনে উত্তর কোরিয়ার হ্যাকাররাই সম্ভবত দায়ী। কারণ, গত জানুয়ারিতে ক্যালিফোর্নিয়াভিত্তিক প্রতিষ্ঠান হারমনি থেকে যে পদ্ধতিতে ১০০ মিলিয়ন ডলার মূল্যের ক্রিপ্টো মুদ্রা চুরি হয়েছিল, তার সঙ্গে সর্বশেষ ঘটনার মিল আছে।

যুক্তরাষ্ট্রের কেন্দ্রীয় তদন্ত সংস্থা এফবিআই হারমনির ক্রিপ্টোকারেন্সি চুরির ঘটনায় উত্তর কোরিয়ার হ্যাকারদের দায়ী করেছিল। চুরি যাওয়া সেই অর্থের একটি অংশ দক্ষিণ কোরিয়ার গোয়েন্দারা ফিরিয়ে আনতে পেরেছিলেন।

এভাবে উত্তর কোরিয়ার হ্যাকারদের নিয়মিত হ্যাকিং ও অর্থ পাচারের ঘটনায় বাইডেন প্রশাসনের জাতীয় নিরাপত্তা অগ্রাধিকার হয়ে উঠেছে। হোয়াইট হাউসের এক কর্মকর্তা সম্প্রতি জানান, উত্তর কোরিয়ার ক্ষেপণাস্ত্র কর্মসূচির প্রায় অর্ধেকের অর্থায়ন করা হয় এসব সাইবার আক্রমণ ও ক্রিপ্টোকারেন্সি চুরির মাধ্যমে।