|
প্রিন্টের সময়কালঃ ২২ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০১:৩৭ পূর্বাহ্ণ     |     প্রকাশকালঃ ২১ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০৯:৪০ অপরাহ্ণ

কুড়িগ্রামে সার-বীজ সংকট, দুশ্চিন্তায় আগাম সবজি চাষিরা


কুড়িগ্রামে সার-বীজ সংকট, দুশ্চিন্তায় আগাম সবজি চাষিরা


কুড়িগ্রাম প্রতিনিধিঃ-

 

কুড়িগ্রামে আগাম সবজি চাষিদের জন্য সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হয়ে দাঁড়িয়েছে সার ও বীজ সংকট। খুচরা ব্যবসায়ীরা কৃত্রিম সংকট দেখিয়ে সারের দাম বাড়িয়ে দিচ্ছে। এর সাথে পাল্লা দিয়ে বেড়েছে বীজ ও কীটনাশকের মূল্যও। প্রশাসন বলছে বাজারে পর্যাপ্ত মজুত আছে, তবে অভিযোগ পেলে তাৎক্ষণিক ব্যবস্থা নেওয়া হবে।
 

কৃষকদের অভিযোগ, সময়মতো বীজ বপন করতে না পারলে ক্ষতির মুখে পড়তে হয়। কিন্তু অফিসে অভিযোগ জানাতে গেলে সময় নষ্ট হয়। তাই বাধ্য হয়ে তারা বেশি দামেই কিনছেন সার-বীজ। এতে চড়ামূল্যে খরচ করে সবজি চাষ নিয়ে অনিশ্চয়তায় পড়েছেন তারা।
 

রাজারহাট উপজেলার ছিনাই ইউনিয়নের মীরেরবাড়ি গ্রামে চলছে আগাম সবজি চাষের ধুম। বিশেষ করে ফুলকপি বুনে লাভের আশায় ব্যস্ত কৃষকেরা। তবে লাগামহীন দামের কারণে তাদের কপালে শঙ্কার ছাপ। কৃষকরা বলছেন, জমির চাহিদা অনুযায়ী সার মিলছে না, আর মিললেও অতিরিক্ত দাম চাওয়া হচ্ছে।
 

স্থানীয় কৃষক মকবুল হোসেন জানান, “গতবার ফুলকপির বীজ কিনেছিলাম ৭০০ থেকে ৭৫০ টাকায়। এবার একই বীজ কিনতে হচ্ছে ১,৬০০ থেকে ১,৮০০ টাকায়। সারের দামও বেড়েছে প্রায় ২০০-৩০০ টাকা। সরকার যদি নজর না দেয়, আমরা মারাত্মক ক্ষতিগ্রস্ত হবো।”
 

অন্য কৃষক আকতার হোসেন বলেন, “অনেকেই এনজিও থেকে ঋণ করে বা গরু-ছাগল বিক্রি করে আগাম সবজি চাষ শুরু করে। কিন্তু সঠিক সময়ে সার না পেয়ে দুশ্চিন্তায় থাকতে হয়। আবার দ্বিগুণ দামে কিনে খরচ ওঠানো নিয়েও অনিশ্চয়তা দেখা দেয়।”
 

কৃষক আবদার হোসেনের অভিমত, “শুধু সার-বীজ নয়, প্রকৃতির সাথেও লড়তে হয় আমাদের। বৃষ্টি বা অতিরিক্ত রোদে বীজ নষ্ট হলে আবার কীটনাশক কিনতে হয়, যার দামও বেশি। এখন চাষ করতে গিয়ে আমাদের পদে পদে হয়রানি আর খরচের বোঝা বইতে হচ্ছে।”
 

রাজারহাট উপজেলা কৃষি কর্মকর্তা সাইফুন নাহার সাথী জানান, “আগাম ফুলকপি চাষ করে মৌসুমের শুরুতেই বাজারে সরবরাহ করার আশায় কৃষকেরা ঝুঁকছেন। উপজেলায় এবার ২৯ হেক্টর জমিতে আগাম সবজি আবাদ হয়েছে। বাজারে পর্যাপ্ত সার মজুত রয়েছে, আমরা নিয়মিত মনিটরিং করছি। কেউ অতিরিক্ত দাম চাইলে ব্যবস্থা নেওয়া হবে।”
 

কৃষি সম্প্রসারণ অধিদপ্তরের উপপরিচালক আব্দুল্লাহ আল মামুন বলেন, “বন্যা ও বৃষ্টিপাত কম হওয়ায় এবার চরাঞ্চলে রোপা আমনের আবাদ বেড়েছে। লক্ষ্যমাত্রা ছাড়িয়ে ১ লাখ ২১ হাজার ৪০০ হেক্টরে আবাদ হয়েছে। এতে সার চাহিদা বেড়েছে। তবে বর্তমানে পর্যাপ্ত সরবরাহ রয়েছে। কোথাও কৃত্রিম সংকট তৈরি হলে মোবাইল কোর্টের মাধ্যমে আইনগত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে। আমরা আশাবাদী, বরাদ্দ অনুযায়ী সার ঠিকভাবেই কৃষকদের মাঝে বিতরণ করা যাবে।”
 

👉 সার ও বীজের ক্রমবর্ধমান দাম কৃষকদের দুশ্চিন্তা বাড়ালেও প্রশাসন বলছে, সরবরাহ পর্যাপ্ত রয়েছে। তবে বাস্তবে কৃষকেরা ক্ষেতে ঠিক সময়ে প্রয়োজনীয় উপকরণ পাচ্ছেন না, ফলে আশার চাষ হয়ে উঠছে হতাশার।


সম্পাদকঃ সারোয়ার কবির     |     প্রকাশকঃ আমান উল্লাহ সরকার
যোগাযোগঃ স্যুইট # ০৬, লেভেল #০৯, ইস্টার্ন আরজু , শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম সরণি, ৬১, বিজয়নগর, ঢাকা ১০০০, বাংলাদেশ।
মোবাইলঃ   +৮৮০ ১৭১১৩১৪১৫৬, টেলিফোনঃ   +৮৮০ ২২২৬৬৬৫৫৩৩
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৫