|
প্রিন্টের সময়কালঃ ২১ এপ্রিল ২০২৫ ০৭:১৯ পূর্বাহ্ণ     |     প্রকাশকালঃ ০১ মার্চ ২০২৫ ০৩:৩৯ অপরাহ্ণ

অভ্যুত্থান থেকে জন্ম নিল এনসিপি


অভ্যুত্থান থেকে জন্ম নিল এনসিপি


ঢাকা প্রেস নিউজ

 

অনেক জল্পনা-কল্পনার পর অবশেষে আত্মপ্রকাশ করেছে ছাত্রদের নতুন রাজনৈতিক দল, জাতীয় নাগরিক পার্টি (এনসিপি)। গণঅভ্যুত্থান থেকে জন্ম নেওয়া এই দলটির নেতারা ঘোষণা করেছেন যে, তারা অন্য কোনো দেশ নয়, বরং বাংলাদেশপন্থি হবে। তাদের লক্ষ্য ‘সেকেন্ড রিপাবলিক’, অর্থাৎ দ্বিতীয় প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠা করা। এই লক্ষ্য পূরণের জন্য তারা নতুন সংবিধান প্রণয়নের উদ্দেশ্যে সংসদের আগে গণপরিষদ নির্বাচন চান, যেটি জুলাই মাসের গণঅভ্যুত্থানের নায়করা দাবি করেছেন।
 

শেখ হাসিনার পতন ঘটানো গণঅভ্যুত্থানের ছাত্র নেতৃত্বের উদ্যোগে গঠিত এনসিপির ঘোষণাপত্রে এই লক্ষ্যগুলো নির্ধারণ করা হয়েছে। গতকাল, শুক্রবার, রাজধানীর মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ে একটি বিশাল জমায়েতের মাধ্যমে দলের আত্মপ্রকাশ ঘটে। শহীদদের আত্মত্যাগকে সম্মান জানিয়ে তারা ঘোষণা করেন, বাংলাদেশে ভারতপন্থি বা পাকিস্তানপন্থি রাজনীতি স্থান পাবে না।
 

সাতচল্লিশ, বায়ান্ন, একাত্তর এবং চব্বিশকে ধারণ করে বাংলাদেশপন্থি রাজনৈতিক শক্তির ঐক্য প্রতিষ্ঠার আহ্বান জানিয়ে এনসিপি দলের নেতারা সংসদের আগে গণপরিষদ নির্বাচনের দাবি জানিয়েছেন। দলের বিরুদ্ধে কিছু সমালোচনা থাকলেও, অন্তর্বর্তী সরকারের উপদেষ্টা নাহিদ ইসলামের নেতৃত্বাধীন দলের নেতারা এসব অভিযোগ নাকচ করেছেন। অনুষ্ঠানস্থলে সরকারের উচ্চপদস্থ কর্মকর্তাদের আমন্ত্রণ জানানো হলেও, তারা কেউ আসেননি।
 

এনসিপি নেতারা বলেন, গণপরিষদে নতুন সংবিধান প্রণীত হবে, যার মাধ্যমে কাঙ্ক্ষিত প্রজাতন্ত্র গড়ে উঠবে। সেখানে সামাজিক সুবিচার নিশ্চিত করা হবে এবং রাজনৈতিক নেতৃত্ব মেধা ও যোগ্যতার ভিত্তিতে নির্বাচিত হবে। তাদের দৃঢ় অবস্থান, বাংলাদেশে ভারত কোনভাবেই ক্ষমতার নিয়ন্ত্রণ করতে পারবে না।
 

এনসিপির আত্মপ্রকাশ অনুষ্ঠানটি ছিল অত্যন্ত জমকালো এবং উত্সবপূর্ণ। মানিক মিয়া অ্যাভিনিউয়ের মূল সড়কে তৈরি করা মঞ্চের সামনে শহীদ পরিবারের সদস্য, আহত রাজনৈতিক নেতৃত্ব, বিশিষ্ট নাগরিক এবং কূটনীতিকদের আসন ছিল। বিকেল ৩টায় অনুষ্ঠানের শুরু হলেও, সকাল থেকেই নেতাকর্মীরা জড়ো হতে শুরু করেন। সমাবেশে নারীদের উপস্থিতি ছিল অনেক বেশি, এবং সপরিবারে শিশুসন্তানসহ অনেক মানুষ উপস্থিত ছিলেন। দেশের বিভিন্ন জেলা থেকে হাজার হাজার মানুষ বাসে করে অনুষ্ঠানে যোগ দেন।
 

বিকেল সোয়া ৪টায় পবিত্র কোরআন, গীতা, বাইবেল ও ত্রিপিটক পাঠের মাধ্যমে অনুষ্ঠান শুরু হয়, এরপর জাতীয় সংগীত পরিবেশন করা হয়। অনুষ্ঠানে শহীদদের স্মরণে নীরবতা পালন করা হয়। বক্তৃতায় গণঅভ্যুত্থানের শহীদদের পরিবারের সদস্যরা তাদের অনুভূতি ব্যক্ত করেন এবং নতুন দলের ভবিষ্যৎ পরিকল্পনা সম্পর্কে আলোচনা করেন।
 

নতুন দলের নেতারা বলেন, জুলাই গণঅভ্যুত্থান দ্বিতীয় প্রজাতন্ত্র প্রতিষ্ঠার যাত্রার সূচনা করেছে এবং এর মাধ্যমে গণতান্ত্রিক সংবিধান প্রণয়নের প্রক্রিয়া শুরু হবে। দলটি বাংলাদেশের জনগণের জন্য একটি দুর্নীতি মুক্ত, সন্ত্রাসী, চাঁদাবাজমুক্ত সমাজ গড়ার প্রতিশ্রুতি দেয়।
 

এনসিপি নেতারা দাবি করেন, তারা নতুন রাজনৈতিক শক্তি হিসেবে দেশকে উন্নতির পথে নিয়ে যাবেন এবং জাতির জন্য একটি নিরাপদ, সমৃদ্ধ ভবিষ্যত তৈরি করবেন।


সম্পাদকঃ সারোয়ার কবির     |     প্রকাশকঃ আমান উল্লাহ সরকার
যোগাযোগঃ স্যুইট # ০৬, লেভেল #০৯, ইস্টার্ন আরজু , শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম সরণি, ৬১, বিজয়নগর, ঢাকা ১০০০, বাংলাদেশ।
মোবাইলঃ   +৮৮০ ১৭১১৩১৪১৫৬, টেলিফোনঃ   +৮৮০ ২২২৬৬৬৫৫৩৩
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৫