|
প্রিন্টের সময়কালঃ ০৮ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০৪:৫২ অপরাহ্ণ     |     প্রকাশকালঃ ০৭ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০৫:২০ অপরাহ্ণ

ইতালিতে পাচার হচ্ছিল ভারত থেকে আসা ভয়ংকর মাদক কিটামিন, গ্রেপ্তার ২ জন


ইতালিতে পাচার হচ্ছিল ভারত থেকে আসা ভয়ংকর মাদক কিটামিন, গ্রেপ্তার ২ জন


রাজধানীর টঙ্গীর একটি কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে ইতালিতে পাচার হওয়ার চেষ্টা করা হয়েছিল ভারত থেকে আনা ভয়ংকর মাদক কিটামিন। ফ্লাইটে ওঠার আগেই টাওয়ালের মধ্যে বিশেষ কৌশলে লুকানো ৬.৪৪ কেজি ওজনের মাদকটি জব্দ করেছে মাদক নিয়ন্ত্রণ অধিদপ্তর (ডিএনসি)।
 

এই ঘটনায় চাঁদপুর ও ফরিদপুর থেকে মাসুদুর রহমান জিলানী (২৮) ও আরিফুর রহমান খোকা (৪৩) নামে দুজনকে গ্রেপ্তার করা হয়েছে। জিজ্ঞাসাবাদে তারা কুরিয়ার মাধ্যমে কিটামিন পাচারের সঙ্গে সংশ্লিষ্টতার কথা স্বীকার করেছেন।
 

রোববার (৭ সেপ্টেম্বর) দুপুরে সেগুনবাগিচার ডিএনসি সদর দপ্তরে আয়োজিত সংবাদ সম্মেলনে এই তথ্য জানান সংস্থার মহাপরিচালক হাসান মারুফ।
 

তিনি বলেন, ডিএনসির গোয়েন্দা বিভাগ দীর্ঘদিন ধরে কুরিয়ার সার্ভিসের মাধ্যমে মাদক পাচারের বিষয়টি নজরদারিতে রেখেছিল। গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে টঙ্গীর ফেডেক্স কুরিয়ারে অবস্থান নেয়া কর্মকর্তাদের সহযোগিতায় ঢাকা থেকে ইতালিগামী একটি পার্সেল জব্দ করা হয়।
 

পার্সেলের অস্বাভাবিক ওজন ও অবস্থার কারণে সন্দেহ হলে তা পরীক্ষা করা হয়। একটি খাকি রঙের কার্টুনের মধ্যে পৃথকভাবে সাতটি সাদা তোয়ালে পাওয়া যায়। ঘটনাস্থলেই ডিএনসির পরীক্ষক তোয়ালেগুলোর রাসায়নিক পরীক্ষা করে দ্রবীভূত অবস্থায় ৬.৪৪ কেজি কিটামিন শনাক্ত করেন।
 

জব্দকৃত পার্সেলের প্রেরকের ঠিকানা, সিসিটিভি ফুটেজ ও অন্যান্য গোয়েন্দা তথ্যের ভিত্তিতে জানা যায়, মাসুদুর রহমান জিলানী চাঁদপুর জেলার মতলব উত্তর এলাকায় আত্মগোপন করেছিলেন। ঢাকা গোয়েন্দা ইউনিট তাকে গ্রেপ্তার করে। পরবর্তী অনুসন্ধানে ফরিদপুর জেলার আরিফুর রহমান খোকা এই আন্তর্জাতিক চক্রের অন্যতম হোতা হিসেবে শনাক্ত হন এবং তাকে সালথা থানার আটঘর বাজার এলাকা থেকে গ্রেপ্তার করা হয়।
 

ডিএনসি মহাপরিচালক বলেন, কিটামিন মূলত একটি ডিসোসিয়েটিভ অ্যানেস্থেটিক ওষুধ, যা অতীতে চিকিৎসা ক্ষেত্রে অপারেশনের সময় ব্যবহৃত হতো। বর্তমানে এটি পার্টি ড্রাগসহ অবৈধভাবে ব্যাপকভাবে ব্যবহার হচ্ছে। কিটামিন স্বল্পমেয়াদে বিভ্রান্তি, হ্যালুসিনেশন ও শারীরিক জটিলতা সৃষ্টি করে; দীর্ঘমেয়াদে কিডনি ও মূত্রথলির ক্ষতি এবং মানসিক সমস্যার দিকে ঠেলে দেয়। নিয়মিত সেবনে এটি জীবনকে ভয়াবহ ঝুঁকিতে ফেলে।
 

তিনি আরও জানান, পাচারকারীরা তোয়ালে বা মোটা কাপড়ের মধ্যে মাদক লুকানোর বিশেষ কৌশল ব্যবহার করে। কেমিক্যাল ইমপ্রেগনেশনের মাধ্যমে তোয়ালে মাদকের দ্রবণে ভিজিয়ে শুকানো হয়, ফলে মাদক ফাইবারে মিশে যায় এবং সাধারণ কাপড়ের মতোই মনে হয়। পরে বিশেষ কেমিক্যাল বা ল্যাব প্রসেস ব্যবহার করে মাদক পুনরায় উত্তোলন করা হয়। এই পদ্ধতি কোকেন, হেরোইন ও কিটামিনের আন্তর্জাতিক পাচারে বহুল ব্যবহৃত হয়।
 

গ্রেপ্তারদের জিজ্ঞাসাবাদে আন্তর্জাতিক বাজারে এই মাদক পাচারের সঙ্গে আরও একাধিক ব্যক্তির সংশ্লিষ্টতা পাওয়া গেছে। তদন্ত শেষে তাদেরকেও আইনের আওতায় আনা হবে বলে জানিয়েছেন ডিএনসি মহাপরিচালক।


সম্পাদকঃ সারোয়ার কবির     |     প্রকাশকঃ আমান উল্লাহ সরকার
যোগাযোগঃ স্যুইট # ০৬, লেভেল #০৯, ইস্টার্ন আরজু , শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম সরণি, ৬১, বিজয়নগর, ঢাকা ১০০০, বাংলাদেশ।
মোবাইলঃ   +৮৮০ ১৭১১৩১৪১৫৬, টেলিফোনঃ   +৮৮০ ২২২৬৬৬৫৫৩৩
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৫