|
প্রিন্টের সময়কালঃ ২৭ জুলাই ২০২৫ ১২:৫৯ অপরাহ্ণ     |     প্রকাশকালঃ ২৬ জুলাই ২০২৫ ০৩:৪৩ অপরাহ্ণ

জোয়ারে প্লাবিত নিঝুমদ্বীপের নিম্নাঞ্চল-তলিয়ে গেছে ঘরবাড়ি, মাছের ঘের; হুমকিতে বন্যপ্রাণী


জোয়ারে প্লাবিত নিঝুমদ্বীপের নিম্নাঞ্চল-তলিয়ে গেছে ঘরবাড়ি, মাছের ঘের; হুমকিতে বন্যপ্রাণী


হাতিয়া (নোয়াখালী) প্রতিনিধি:-


 

বঙ্গোপসাগরে সৃষ্ট নিম্নচাপের প্রভাবে নোয়াখালীর দ্বীপ উপজেলা হাতিয়ায় শুরু হয়েছে টানা বৃষ্টিপাত ও ঝোড়ো হাওয়া। এর প্রভাবে শুক্রবার (২৫ জুলাই) দুপুরে স্বাভাবিকের চেয়ে কয়েক ফুট উচ্চতার জোয়ারের পানি ঢুকে পড়ে হাতিয়ার বিভিন্ন ইউনিয়নের নিম্নাঞ্চলে। এতে নিঝুমদ্বীপের সোনাদিয়া ইউনিয়নের কয়েকটি ওয়ার্ড, সুখচর, নলচিরা ও চরকিং ইউনিয়নের বিস্তীর্ণ এলাকা প্লাবিত হয়। ডুবে গেছে ঘরবাড়ি, ফসলি জমি, মাছের ঘের ও গ্রামীণ সড়ক।

নিঝুমদ্বীপে বসবাসকারী সহস্রাধিক পরিবার পড়েছেন চরম দুর্ভোগে। বিশেষ করে নিঝুমদ্বীপ জাতীয় উদ্যানে থাকা হরিণসহ বন্যপ্রাণীর জীবন ঝুঁকিতে পড়েছে।

স্থানীয় বাসিন্দা শাহেদ আলী বলেন,

“জোয়ারের পানি এতটাই বেশি ছিল যে পুরো নিঝুমদ্বীপের পুকুরগুলো ডুবে গেছে। মাছ ভেসে গেছে। প্রধান সড়কসহ প্রতিটি গলি পানিতে তলিয়ে আছে। অনেকের বসতঘর ও কৃষি জমিও পানির নিচে।”

আরেক বাসিন্দা আকবর হোসেন দীর্ঘদিনের অব্যবস্থাপনার প্রতি ক্ষোভ প্রকাশ করে বলেন,

“প্রতিবছরই জোয়ারে ঘরবাড়ি, দোকান, গবাদিপশু আর ফসলি জমি ভেসে যায়। ৭ লাখ মানুষের এই দ্বীপে কোনো স্থায়ী বেড়িবাঁধ নেই। শুধু কিছু সাময়িক ব্যবস্থা আর অবহেলা। আমরা আর ত্রাণ চাই না, চাই স্থায়ী বাঁধ আর নিরাপদ জীবন।”

বুডিরচরের বাসিন্দা নুর জাহান বলেন,

“দুপুরের দিকে হঠাৎ পানি ঢুকতে শুরু করে ঘরের ভেতরে। এখন ছেলে-মেয়েদের নিয়ে আতঙ্কে আছি, কখন ঘর ভেঙে পড়ে কে জানে।”

শুক্রবার দুপুরের পর থেকেই জোয়ারের পানি দ্রুত বাড়তে থাকে। ফলে অনেক মাছের ঘের ভেসে গেছে। পানি ঢুকে পড়েছে বহু ঘরের ভেতরে। অনেক পরিবার বাধ্য হয়ে আশ্রয় নিয়েছে উঁচু জায়গায়।

পরিস্থিতি বিবেচনায় স্থানীয় প্রশাসন হাতিয়া-চট্টগ্রাম ও হাতিয়া-নোয়াখালী নৌরুটে লঞ্চ, স্পিডবোট ও ট্রলারের চলাচল সাময়িকভাবে বন্ধ ঘোষণা করেছে।

পানি উন্নয়ন বোর্ডের হাতিয়া উপ-বিভাগীয় প্রকৌশলী জামিল আহমেদ পাটোয়ারী বলেন,

“নিঝুমদ্বীপ এলাকায় স্থায়ী বেড়িবাঁধ না থাকায় হঠাৎ পানির তোড়ে দ্রুত প্লাবন ঘটে। তবে কিছু এলাকায় জিও ব্যাগ দিয়ে ভাঙন প্রতিরোধের চেষ্টা চলছে। নলচিরা ও সুখচর ইউনিয়নের ক্ষতিগ্রস্ত বাঁধ মেরামতে টেন্ডার আহ্বান করা হয়েছে, তবে আবহাওয়া খারাপ থাকায় কাজ শুরু করা যাচ্ছে না।”

হাতিয়া উপজেলার নির্বাহী কর্মকর্তা (ইউএনও) মো. আলাউদ্দিন বলেন,

“নদী ও সাগর উত্তাল থাকায় দুর্ঘটনার ঝুঁকি এড়াতে নৌযান চলাচল বন্ধ রাখা হয়েছে। আবহাওয়া স্বাভাবিক হলে পুনরায় চলাচলের অনুমতি দেওয়া হবে। ইতোমধ্যে নিঝুমদ্বীপসহ হাতিয়ার অনেক এলাকা প্লাবিত হয়েছে, আমরা সবসময় পরিস্থিতি পর্যবেক্ষণ করছি। কয়েকদিন এমন আবহাওয়া থাকতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে।”


সম্পাদকঃ সারোয়ার কবির     |     প্রকাশকঃ আমান উল্লাহ সরকার
যোগাযোগঃ স্যুইট # ০৬, লেভেল #০৯, ইস্টার্ন আরজু , শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম সরণি, ৬১, বিজয়নগর, ঢাকা ১০০০, বাংলাদেশ।
মোবাইলঃ   +৮৮০ ১৭১১৩১৪১৫৬, টেলিফোনঃ   +৮৮০ ২২২৬৬৬৫৫৩৩
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৫