বিমা ও প্রকৌশল খাতের ওপর ভর করে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ঢাকা স্টক এক্সচেঞ্জে (ডিএসই) চলতি বছরের মধ্যে সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে। সপ্তাহের প্রথম কার্যদিবসে গতকাল রোববার ডিএসইতে লেনদেনের পরিমাণ ছিল ১ হাজার ১৭৫ কোটি টাকা। চলতি বছরের পাশাপাশি গত সাড়ে ছয় মাসের মধ্যে এটিই ডিএসইতে সর্বোচ্চ লেনদেন।
ডিএসইর তথ্য অনুযায়ী, এর আগে দেশের প্রধান শেয়ারবাজার ডিএসইতে সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছিল গত বছরের ৮ নভেম্বর। ওই দিন ডিএসইতে ১ হাজার ৪৯৫ কোটি টাকার লেনদেন হয়েছিল। এরপর সর্বোচ্চ লেনদেন হয়েছে গতকাল। আর গতকালের এ লেনদেনের বড় অংশই ছিল বিমা ও প্রকৌশল খাতনির্ভর।
ব্রোকারেজ হাউস লংকাবাংলা সিকিউরিটিজের প্রতিবেদন অনুযায়ী, গতকাল ঢাকার বাজারে বিমা ও প্রকৌশল খাতের কোম্পানিগুলোর সম্মিলিত লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৪৯৪ কোটি টাকা, যা ডিএসইর মোট লেনদেনের ৪২ শতাংশ। এর মধ্যে শুধু বিমা খাতের লেনদেনের পরিমাণ ছিল ৩৭৮ কোটি টাকা, যা মোট লেনদেনের ৩২ শতাংশ। সেই হিসাবে ডিএসইতে গতকালের লেনদেনের প্রায় অর্ধেকই ছিল দুই খাতের কোম্পানির।
বাজারসংশ্লিষ্ট ব্যক্তিরা বলছেন, দেশের সব ধরনের মোটরযানের জন্য বিমা বাধ্যতামূলক করার উদ্যোগ নিয়েছে সরকার। গত সপ্তাহ থেকে এই খবরই শেয়ারবাজারে বিমা কোম্পানির প্রতি বিনিয়োগকারীদের আগ্রহ বাড়িয়ে দিয়েছে। তাতে বিমার শেয়ারে ভর করে লেনদেনেও ঊর্ধ্বগতি বাজারে। ঢাকার বাজারে গতকাল মূল্যবৃদ্ধির শীর্ষ ১০ কোম্পানির মধ্যে ৭টিই ছিল বিমা খাতের। এদিন ডিএসইতে লেনদেন হওয়া বিমা খাতের ৫৭ কোম্পানির মধ্যে ৫০টিরই দাম বেড়েছে। কমেছে ৪টির আর অপরিবর্তিত ছিল ৩টির দাম।
লংকাবাংলা সিকিউরিটিজের প্রতিবেদন অনুযায়ী, ডিএসইতে গতকাল বিমা খাতের মধ্যে লেনদেন বেড়েছে মূলত সাধারণ বিমা কোম্পানিগুলোর। আগের দিনের চেয়ে সাধারণ বিমা কোম্পানিগুলোর সম্মিলিত লেনদেনের পরিমাণ প্রায় ৮৮ শতাংশ বেড়েছে। তার বিপরীতে অবশ্য জীবন বিমা কোম্পানিগুলোর সম্মিলিত লেনদেন কমেছে। আগের দিনের চেয়ে ৩০ শতাংশ কমেছে জীবন বিমা কোম্পানিগুলোর সম্মিলিত লেনদেন।
এ নিয়ে টানা তিন দিন ঢাকার বাজারে লেনদেন হাজার কোটি টাকার ওপরে ছিল। এর আগে গত বছরের ২ থেকে ৯ নভেম্বর পর্যন্ত টানা ছয় দিন ঢাকার বাজারে হাজার কোটি টাকার বেশি লেনদেন হয়েছিল।
লেনদেন বৃদ্ধির পাশাপাশি সূচকও কিছুটা বেড়েছে। ডিএসইর প্রধান সূচক ডিএসইএক্স গতকাল ১৪ পয়েন্ট বেড়ে দাঁড়িয়েছে ৬ হাজার ৩৪০ পয়েন্টে। নিয়ন্ত্রক সংস্থা বিএসইসির বেঁধে দেওয়া মূল্যস্তর বা ফ্লোর প্রাইসে আটকে থাকা কোম্পানিগুলো বাদে লেনদেন হওয়া বেশির ভাগ কোম্পানির শেয়ারেরই দাম বেড়েছে গতকাল।