লিবিয়ায় বন্যার পর নতুন আতঙ্ক ল্যান্ডমাইন

প্রকাশকালঃ ১৯ সেপ্টেম্বর ২০২৩ ০২:০১ অপরাহ্ণ ১৬৯ বার পঠিত
লিবিয়ায় বন্যার পর নতুন আতঙ্ক ল্যান্ডমাইন

লিবিয়ার পূর্বাঞ্চলে ঘূর্ণিঝড় ড্যানিয়েলের প্রভাবে সৃষ্ট জলোচ্ছ্বাস ও বন্যায় হাজার হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। নিখোঁজ রয়েছে বহুসংখ্যক মানুষ। ঝড়ের পর প্রবল বৃষ্টিতে বাঁধ ভেঙে প্রায় নিশ্চিহ্ন হয়ে গেছে দেশটির পূর্বাঞ্চলীয় দারনা শহর। কোনো কিছু বুঝে ওঠার আগেই বাঁধ ভেঙে শহরে ঢুকে পড়া পানিতে ভেসে যান অনেকে।

সাগর থেকে উদ্ধার করা হয় হাজার হাজার মৃতদেহ। মৃতের সংখ্যা ১১ হাজারের বেশি। এদিকে যারা বেঁচে আছে, তাদের খাওয়ার পানি নেই। এ ছাড়া জমা পানির নিচে লুকিয়ে আছে ল্যান্ডমাইনের ফাঁদ।


লিবিয়ার উপকূলবর্তী শহর ডেরনা বন্যায় সবচেয়ে বেশি ক্ষতিগ্রস্ত হয়েছে। স্থানীয় মানুষ সংবাদমাধ্যমকে জানিয়েছেন, তাদের খাওয়ার পানি নেই। যেখান থেকে খাওয়ার পানি আসে, তার উৎসমুখে বন্যার পানি ঢুকে যাওয়ায় পানি বিষাক্ত হয়ে গেছে। ফলে দূর থেকে পানি আনা ছাড়া আর কোনো উপায় নেই তাদের।

কিন্তু দূরে যেতে তারা ভয় পাচ্ছেন, কারণ বন্যার পানির নিচে কোথায় ল্যান্ডমাইন আছে, তারা বুঝতে পারবেন না। বস্তুত কোনো কোনো এলাকায় বিপুল পরিমাণ ল্যান্ডমাইন আছে বলে তারা জানিয়েছেন।

এদিকে স্থানীয় এক প্রশাসক জানিয়েছেন, ডায়রিয়া রোগীর সংখ্যা প্রতিদিন বাড়ছে। শনিবার পর্যন্ত ১৫০ জনের পেটের অসুখ হয়েছে। কিছু মানুষকে হাসপাতালেও পাঠাতে হয়েছে। বিষাক্ত পানি খেয়ে আরো মানুষ আক্রান্ত হতে পারে বলে আশঙ্কা করা হচ্ছে। এখন পর্যন্ত ল্যান্ডমাইন বিস্ফোরণ না হলেও ভয়ে মানুষ দূরে যাচ্ছে না পানি আনতে।


সংবাদ সংস্থা রয়টার্স জানিয়েছে, ডেরনায় ৮৯১টি বাড়ি সম্পূর্ণ ভেঙে পড়েছে। ৩৯৮টি বাড়ি মাটির সঙ্গে মিশে গেছে। ঠিক কত মানুষের মৃত্যু হয়েছে তা-ও স্পষ্ট নয়। জাতিসংঘের মানবাধিকার অফিস জানিয়েছে, এখন পর্যন্ত প্রায় ১১ হাজার মানুষের মৃত্যু হয়েছে। কোনো কোনো সংস্থা এর চেয়েও বেশি মৃত্যুর কথা বলছে। রয়টার্স জানাচ্ছে, কিছু জায়গায় এখনো পৌঁছানো সম্ভব হয়নি। ফলে সেখানে উদ্ধারকাজই শুরু করা যায়নি।

২০১১ সাল থেকে যুদ্ধবিধ্বস্ত লিবিয়া। গাদ্দাফির মৃত্যুর পর দেশে স্থিতিশীলতা আসেনি। কার্যত গৃহযুদ্ধের পরিস্থিতি তৈরি হয়েছে। তার মধ্যেই এই বন্যায় বিপুল পরিমাণ ক্ষতি হয়েছে। মৃত্যু হয়েছে বহু মানুষের।