এই সড়কটি করতোয়া সেতুর পাশ থেকে শুরু হয়ে আলোকদিয়া গ্রামে গিয়ে মিশেছে। এটি গ্রামের বাসিন্দাদের একমাত্র যোগাযোগের পথ—যার মাধ্যমে তাঁরা পাঁচিলা বাজার, হাটিকুমরুল গোলচত্বর, এমনকি উপজেলা সদরে যাতায়াত করে থাকেন। গ্রীষ্মকালে ধুলায় আচ্ছন্ন এই রাস্তাটি বর্ষায় রূপ নেয় কাদা ও কর্দমাক্ত জলাশয়ে। তখন পায়ে হেঁটেও চলা দুঃসাধ্য হয়ে পড়ে।
গ্রামের প্রায় সাত হাজার বাসিন্দা এই রাস্তাটির ওপর নির্ভরশীল। বিশেষ করে শিক্ষার্থীরা প্রতিদিন জীবনের ঝুঁকি নিয়ে কাদা মাড়িয়ে যাতায়াত করে থাকে পাঁচিলা বদরুল আলম উচ্চ বিদ্যালয়, নলকা ফুলজোর ডিগ্রি কলেজ, আলোকদিয়া প্রাথমিক বিদ্যালয় ও আশপাশের মাদ্রাসাগুলোতে।
স্থানীয়দের অভিযোগ, বহুবার সংশ্লিষ্ট ইউনিয়ন পরিষদ ও জনপ্রতিনিধিদের কাছে রাস্তাটি পাকা করার আবেদন জানানো হলেও কোনো উদ্যোগ নেওয়া হয়নি। এমনকি পাঁচ বছর আগে গ্রামবাসী নিজেরা স্বেচ্ছাশ্রমে মাটি ফেলে রাস্তাটি খানিকটা সংস্কার করেছিলেন। কিন্তু বন্যা ও বৃষ্টিতে তা ধুয়ে-মুছে গেছে।
আলোকদিয়ার বাসিন্দা শাহাজাদা হোসাইন, শাহজাহান শাহীন, নাসির উদ্দিন ও আব্দুল মোমিন বলেন, "অনেকবার দাবি জানিয়েছি, কিন্তু কেউ কর্ণপাত করেনি। বৃষ্টির মৌসুমে আধ হাঁটু কাদা মাড়িয়ে প্রতিদিন চলাফেরা করতে হয়।"
এ ব্যাপারে হাটিকুমরুল ইউনিয়ন পরিষদের বর্তমান প্রশাসক ও উপজেলা সমবায় কর্মকর্তা মো. মারুফ হোসেন বলেন, "আমি সদ্য দায়িত্ব নিয়েছি। রাস্তাটির অবস্থা সম্পর্কে শুনেছি। শিগগিরই সরেজমিন পরিদর্শন করে এটি পাকা করার প্রকল্প প্রণয়ন করব।"
স্থানীয় ইউপি সদস্য চাঁন মিয়া বলেন, "এই সড়কটি ইউনিয়ন পরিষদের অধীন। গ্রামবাসীর সঙ্গে আমিও অনেকবার উপজেলা পরিষদ ও ইউনিয়ন পরিষদে আবেদন করেছি। একসময় তৎকালীন উপজেলা চেয়ারম্যান মারুফ বিন হাবিব সরেজমিনে দেখে পাকা করার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন। দুর্ভাগ্যজনকভাবে কয়েক দিনের মধ্যেই তিনি মারা যান। এরপর আর কেউ উদ্যোগ নেননি।"
প্রতি বর্ষায় গ্রামের মানুষের জীবনযাত্রা যেমন থমকে দাঁড়ায়, তেমনি থমকে থাকে শিক্ষার্থীদের স্বাভাবিক যাতায়াতও। এলাকাবাসী চান—আর কোনো আশ্বাস নয়, এবার তারা বাস্তব পদক্ষেপ দেখতে চান।