ছোট ঘর বড় দেখাতে কি করবেন

নিজের ঘরকে মনের মতো করে সাজিয়ে গুছিয়ে রাখার প্রবণতা অতি আদিম এবং অকৃত্রিম। আপনার ছোট্ট ঘরটিকে দেখে যেন বড় মনে হয়, সেই ব্যবস্থার জন্যই এবার কিছু পরামর্শ। লিখেছেন আবরার জাহিন-
শহরাঞ্চলের ফ্ল্যাট ভাড়া দিন দিন বাড়ার সাথে সাথে কমে যাচ্ছে ফ্ল্যাটের সাইজ। যারা শহরাঞ্চলের ফ্ল্যাট বাড়িতে নতুন সংসার শুরু করছেন, তাদের প্রত্যেকেরই পড়তে হচ্ছে এ সমস্যায়। কীভাবে সাজাব নিজের বাসগৃহ—এ ভাবনা যুগ যুগ ধরে চলে আসছে। সুখে থাকার জন্য, সুন্দরভাবে বেঁচে থাকার চেষ্টাতেই মানুষের নিত্যদিনের পরিশ্রম। সংসার যত ছোটই হোক, মনের মতো করে সাজানোর স্বপ্ন থাকে সবারই।
পাশাপাশি আছে প্রয়োজনীয় জিনিসের চাহিদা ও স্থান সংকুলান। এসব বিবেচনা করে আপনার ছোট্ট ঘরটি প্রয়োজন ও পছন্দের জিনিস দিয়ে সাজানোর কিছু ‘বুদ্ধি’ সবসময়ই দরকার। যদি কম্পিউটার থাকে, তাহলে টেলিভিশন রাখার জায়গা বাঁচানোর জন্য কম্পিউটারেই টিভি কার্ড সংযুক্ত করা যায়। তেমনি বসার ব্যবস্থা আর টিভি দেখার সমন্বয় একসঙ্গেই করা যেতে পারে। ফার্নিচার প্ল্যান, পকেটের অবস্থা আর প্রয়োজন মিলিয়ে এক ঘরের সংসারে চাই বহুমাত্রিক আসবাব। পাশাপাশি সাইজের ক্ষেত্রেও আপস করতে হয়। যাদের বাসাবাড়ির আয়তন ৮০০ থেকে ১,০০০ স্কয়ার ফিটের মতো, তারা চিরাচরিত অন্দরসজ্জার ধারণা থেকে বেরিয়ে এসে নিজের বাড়িটিতে আনতে পারেন বৈচিত্র্য। জমকালো, ভারী আসবাব ঘরের পরিবেশকে ছোট করে ফেলে।
সে ক্ষেত্রে ঘরের দেয়ালজুড়ে বানিয়ে নিতে পারেন দেয়ালজোড়া আসবাব। প্রবেশপথ ঘরের প্রবেশপথের দেয়ালটুকু রাঙিয়ে নিন পছন্দমতো রঙের শ্যাডে। দেড় ফিট বাই চার ফিট প্রস্থ এবং সুবিধাজনক উচ্চতা অনুযায়ী কাঠ দিয়ে বানিয়ে নিন ডিভান। নিচের অংশটুকুকে ব্যবহার করুন জুতার তাক হিসেবে। উপরের দিকে দেয়ালে বসিয়ে দিতে পারেন লেকার পলিশ করা কাঠের ওপর টেরাকোটার কাজ করা আয়না। প্রবেশপথের কোনায় রাখতে পারেন কৃত্রিম পাথরের ঝরনা। কৃত্রিম ঝরনার মধ্যে নকশা অনুযায়ী আলোর ব্যবস্থা করুন। এছাড়াও—
ঘরে যদি ডাইনিং টেবিল রাখতে হয় তাহলে ছোট ফোল্ডিং টেবিল হলেই ভালো। জায়গার প্রয়োজনে ভাঁজ করেও রাখা যাবে।
কম্পিউটার থাকলে তার টেবিলটি হবে ছোট কিন্তু শেলফসহ, যেন প্রয়োজনীয় সিডি-ডিভিডিসহ গৃহসজ্জার জন্য ফটোফ্রেম বা ছোট শো-পিস এতে রাখা যায়।
ফুলদানিতে যথাসম্ভব পাতাবাহার এবং তাজা ফুল রাখার চেষ্টা করতে হবে। এতে ঘরে একটা সতেজ ভাব থাকবে।
বারান্দা থাকলে এর আকার-আয়তন ও গঠন অনুযায়ী ছোট-বড় ফুল এবং পাতাবাহার গাছ রাখা যায়। তবে তাতে যেন বারান্দা গাছে বোঝাই না হয়ে যায়, সেদিকে খেয়াল রাখতে হবে।
বারান্দায় বসার জন্য বেত বা প্লাস্টিকের চেয়ার বা মোড়া রাখা যায়। পর্যাপ্ত জায়গা থাকলে ঘরের ‘মুড’ বুঝে বেত বা স্টিলের দোলনাও ঝোলানো যেতে পারে।
দৃষ্টিনন্দন ঝোলানো পাটের ব্যাগ ঘরের সৌন্দর্য বাড়ায়। এতে টুকিটাকি অনেক দরকারি জিনিসও রাখা যায়, যা একইসঙ্গে ঘরের জায়গাও বাঁচায়।
সোফা অনেক বেশি জায়গা নিয়ে নেয়। এর বদলে ছোট ফোমের কুশন একই সঙ্গে দৃষ্টিনন্দন এবং জায়গা সাশ্রয়ী। সঙ্গে বিভিন্ন রঙের পিলো এর সৌন্দর্য আরও বৃদ্ধি করবে।
বক্সসহ বিছানা উপকারী। এতে বিছানায় ব্যবহূত প্রয়োজনীয় জিনিস রাখা যায়।
আলনার বদলে দেয়াল হ্যাঙ্গার ঝোলানো যায়, যা ঘরের জায়গা বাঁচাবে।
ড্রেসিং টেবিল ছোট হওয়াই ভালো। ড্রেসিং টেবিলের তাকে একইসঙ্গে ছোট ছোট শোপিস, ফটোফ্রেম, ফুলদানি রেখে ঘরের জায়গা ও সৌন্দর্য উভয়ই বাড়ানো যায়।
ঘরের রঙের সঙ্গে মিলিয়ে এর যেকোনো শেডের পর্দা ব্যবহার করা যায়। তবে কাপড় যেন ভারী না হয় এবং ঘরে সহজে আলো-বাতাস প্রবেশ করতে পারে, সেদিকেও খেয়াল রাখতে হবে।
ঘরের রং এবং আয়তনের সঙ্গে মিলিয়ে মেঝের জন্য ছোট বা মাঝারি গোলাকৃতির কার্পেট ব্যবহার করা যায়। ঘরের পুরোটার জন্য কার্পেট না রাখাই ভালো।
সম্পাদকঃ সারোয়ার কবির | প্রকাশকঃ আমান উল্লাহ সরকার
যোগাযোগঃ স্যুইট # ০৬, লেভেল #০৯, ইস্টার্ন আরজু , শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম সরণি, ৬১, বিজয়নগর, ঢাকা ১০০০, বাংলাদেশ।
মোবাইলঃ +৮৮০ ১৭১১৩১৪১৫৬, টেলিফোনঃ +৮৮০ ২২২৬৬৬৫৫৩৩
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৫