প্রধানমন্ত্রী শিশুদের হাতে বই তুলে দিলেন

প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেছেন, বিশ্বে যত নামিদামি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে, তাদের শিক্ষা পদ্ধতি ও কারিকুলাম অনুসরণ করে সেরকম আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন শিক্ষাব্যবস্থা বাংলাদেশে গড়ে তুলতে চান তিনি। গতকাল সকালে প্রধানমন্ত্রীর কার্যালয়ের শাপলা হলে প্রাক-প্রাথমিক, প্রাথমিক ও মাধ্যমিক স্তরের শিক্ষার্থীদের হাতে বই হস্তান্তরের মাধ্যমে ২০২৪ সালের বিনামূল্যে পাঠ্যপুস্তক বিতরণ কর্মসূচির উদ্বোধনকালে দেওয়া ভাষণে এ কথা বলেন তিনি। আজ নতুন বছর ২০২৪ সালের প্রথম দিন ১ জানুয়ারি থেকে সারা দেশে আনুষ্ঠানিক জাতীয় পাঠ্যপুস্তক বিতরণ কার্যক্রম শুরু হচ্ছে। অনুষ্ঠানে শেখ হাসিনা সবাইকে ইংরেজি নববর্ষের শুভেচ্ছা জানান। প্রধানমন্ত্রী বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানের বিভিন্ন স্তরের শিক্ষার্থীদের হাতে নতুন শ্রেণির বই তুলে দেন। কোমলমতি শিক্ষার্থীদের উদ্দেশে তিনি বলেন, ‘নতুন বইয়ের ঘ্রাণ, নতুন বই পড়ে দেখা, এতে মলাট লাগানো এসবের আনন্দটাই আলাদা, বই পড়বে এবং বইয়ের যত্ন নেবে।’ প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, জাতির পিতা বলতেন, ‘শিক্ষায় যে খরচ সেটা হচ্ছে বিনিয়োগ’। আমিও সেটাই মনে করি। কাজেই, আমাদের শিক্ষার ক্ষেত্রে যত টাকা লাগে আমি দেব। বিশ্বে যত নামিদামি বিশ্ববিদ্যালয় রয়েছে, তারা কীভাবে শিক্ষা দেয়, কী কারিকুলাম শেখায় সেই পদ্ধতি ব্যবহার করে আমরা সেরকম আন্তর্জাতিক মানসম্পন্ন শিক্ষাব্যবস্থা গড়ে তুলতে চাই বাংলাদেশে।প্রধানমন্ত্রী কর্মসংস্থান সৃষ্টিতে কারিগরি শিক্ষার ওপর গুরুত্বারোপ করে বলেন, সাধারণ শিক্ষার সঙ্গে সঙ্গে হাতে-কলমে শিক্ষার ওপর গুরুত্ব দিতে হবে, যাতে কর্মসংস্থান সৃষ্টি হয়। সবাই যে শুধু সাধারণ শিক্ষায় শিক্ষিত হবে তা নয়, দক্ষ জনশক্তি গড়ে তুলতে হলে কারিগরি শিক্ষার বিশেষ প্রয়োজন রয়েছে। তিনি বলেন, আমরা সারা দেশে ১০০ বিশেষ অর্থনৈতিক অঞ্চল গড়ে তুলছি। কল-কারখানা গড়ে উঠবে সেখানে। চতুর্থ শিল্পবিপ্লব আমাদের দ্বারপ্রান্তে, তার জন্য উপযুক্ত প্রযুক্তিনির্ভর শিক্ষায় শিক্ষিত নাগরিক আমাদের প্রয়োজন পড়বে। কাজেই উপযুক্ত কর্মঠ জনগোষ্ঠী আমাদের গড়ে তুলতে হবে।
শিক্ষামন্ত্রী ডা. দীপু মনির সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে স্বাগত বক্তব্য দেন শিক্ষা উপমন্ত্রী মহিবুল হাসান চৌধুরী। এ ছাড়া, প্রাথমিক ও গণশিক্ষা প্রতিমন্ত্রী জাকির হোসেনও বক্তব্য দেন। মন্ত্রণালয়গুলো এ বছর ৩ কোটি ৮১ লাখ ২৮ হাজার ৩২৪ জন শিক্ষার্থীর মধ্যে প্রায় ৩০ কোটি ৭০ লাখ ৮৩ হাজার ৫১৭ কপি নতুন বই বিতরণ করবে। দেশের প্রতিটি উপজেলায় ইতোমধ্যে পাঠ্যপুস্তক পাঠানো হয়েছে।প্রধানমন্ত্রী শেখ হাসিনা বলেন, আমরা চাই আমাদের দেশটা যেন বিশ্বের সঙ্গে তাল মিলিয়ে চলতে পারে। সে জন্য আমাদের কারিকুলামগুলোতে পরিবর্তন আনা হয়েছে। আজকে শিক্ষাকে আমরা যেভাবে গুরুত্ব দিচ্ছি তার ফলে আমাদের স্বাক্ষরতার হার আজকে ৭৬ দশমিক ৮ ভাগে উন্নীত হয়েছে। তিনি বলেন, একমাত্র শিক্ষাই পারে সমগ্র জাতিকে দারিদ্র্যমুক্ত করতে। এ লক্ষ্যে আমাদের প্রাইমারি স্কুলে ছেলেমেয়ে সবাই সমানভাবে যাওয়ার সুযোগ পাচ্ছে। বাজেটে বিশেষ বরাদ্দ রাখাসহ শিক্ষাকে বহুমুখীকরণ করার দিকে আমরা গুরুত্ব দিচ্ছি। বিভিন্ন জেলায় বিশ্ববিদ্যালয়, মেডিকেল কলেজ এবং বিশেষায়িত শিক্ষাপ্রতিষ্ঠান গড়ে তুলে আমরা জ্ঞান-বিজ্ঞান এবং প্রযুক্তি শিক্ষার বিকাশের বিশেষ পদক্ষেপ নিয়েছি। কারণ, আমাদের একটাই লক্ষ্য- আজকের ছেলেমেয়েরাই ২০৪১-এর স্মার্ট বাংলাদেশ গড়ার সৈনিক হবে। তারা আমার মতো প্রধানমন্ত্রী হবে, মন্ত্রী হবে, ভালো শিক্ষক হবে, উচ্চ পদে আসীন হবে। কাজেই, সেভাবেই তাদের গড়ে তোলা হবে।
সম্পাদকঃ সারোয়ার কবির | প্রকাশকঃ আমান উল্লাহ সরকার
যোগাযোগঃ স্যুইট # ০৬, লেভেল #০৯, ইস্টার্ন আরজু , শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম সরণি, ৬১, বিজয়নগর, ঢাকা ১০০০, বাংলাদেশ।
মোবাইলঃ +৮৮০ ১৭১১৩১৪১৫৬, টেলিফোনঃ +৮৮০ ২২২৬৬৬৫৫৩৩
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৫