ভারতের রাজধানী নয়া দিল্লিতে নতুন পার্লামেন্ট ভবনের উদ্বোধন করেছেন দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদী। বিরোধীদের সম্মিলিত বর্জনের মধ্যে প্রধানমন্ত্রী উদ্ঘাটন করেন সুরম্য এই স্থাপত্যের আবরণ। তারপর স্পিকারের আসনের পাশে স্থাপন করেন রত্নখচিত স্বর্ণদণ্ড, যার ঐতিহাসিক হস্তান্তরের দাবি ঘিরে ইতিমধ্যেই শুরু হয়েছে নতুন বিতর্ক। খবর এনডিটিভি।
ভারতের নতুন সংসদ ভবনের সামনে দেশটির প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি। ছবি: এএনআই
ভারতীয় সংসদের নিম্নকক্ষ লোকসভার স্পিকার ওম বিড়লাকে সঙ্গে করে প্রধানমন্ত্রী ওই সেঙ্গল নিয়ে যান লোকসভায়। সংসদ ভবনের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করে সেটি তিনি স্থাপন করেন স্পিকারের আসনের পাশে। তারপর শুরু হয় সর্বধর্ম প্রার্থনা।
আজ রোববার সকাল সাড়ে সাতটা নাগাদ নতুন ভবনে পৌঁছান প্রধানমন্ত্রী। প্রথমেই তিনি বসেন পূজায়। পূজাস্থলেই রাখা ছিল রত্নখচিত স্বর্ণদণ্ড ‘সেঙ্গল’, যা প্রয়াগরাজ (এলাহাবাদ) সংগ্রহশালা থেকে নিয়ে আসা হয়েছে দিল্লি নতুন সংসদ ভবনে রাখা হবে বলে।
বিরোধীরা ইতিমধ্যেই ‘সেঙ্গল’কে ‘রাজদণ্ড’ বলতে শুরু করেছে। হিন্দুমতে তা শুদ্ধ করা হয়। প্রধানমন্ত্রী তার সামনে সাষ্টাঙ্গে প্রণাম করেন। তামিলনাড়ু থেকে আসা সন্ন্যাসীরা ওই সেঙ্গল তুলে দেন প্রধানমন্ত্রীর হাতে।
পুরোনো সংসদ ভবন চত্বরেই গড়ে উঠেছে নতুন এই সংসদ ভবন। এটি তৈরি করেছে টাটা গোষ্ঠী। দ্বিতীয় দফায় প্রধানমন্ত্রী হওয়ার পর নরেন্দ্র মোদি তা তৈরিতে উদ্যোগী হন। কোভিড পরিস্থিতিতে অর্থনীতির বেহাল অবস্থার মধ্যেই তিনি প্রায় এক হাজার কোটি রুপি খরচ করে এই ভবন তৈরির সিদ্ধান্ত নেন। বিতর্কের শুরুও সেই থেকে। নতুন সংসদ ভবন ও এর কাছাকাছি এলাকায় উন্নয়নকাজের নাম দেওয়া হয়েছে ‘সেন্ট্রাল ভিস্তা’। এতে মোট ২৪ হাজার কোটি রুপি খরচ ধরা হয়েছে।
নতুন সংসদ ভবন তৈরিতে যাদের অবদান অনস্বীকার্য, আজ সেই শ্রমিকদের শ্রদ্ধা জানান প্রধানমন্ত্রী।
ভারতের সংসদ ভবন তৈরি হয়েছিল ১৯২৭ সালে। জনসংখ্যা বৃদ্ধির সঙ্গে সঙ্গে জনপ্রতিনিধিদের সংখ্যাও ক্রমে বেড়েছে। আরও বেড়ে যাওয়ার কথা। ৯৬ বছরের পুরোনো ওই ভবনে বর্ধিত সংসদ সদস্যদের স্থান সংকুলান কঠিন। বর্তমানে লোকসভার সদস্যসংখ্যা ৫৪৩, রাজ্যসভার ২৫০। নতুন সংসদ ভবনে লোকসভায় আসন রাখা হয়েছে ৮৮৮, ভবিষ্যতে যা বাড়িয়ে ১ হাজার ২৭২টি করা যাবে।