|
প্রিন্টের সময়কালঃ ১৯ এপ্রিল ২০২৫ ০৮:৪১ অপরাহ্ণ     |     প্রকাশকালঃ ০৮ ডিসেম্বর ২০২৪ ০৯:০০ অপরাহ্ণ

ঝড়ে পড়া শিশুদের শিক্ষা কার্যক্রমে বেতন-বঞ্চিত ৫০০ শিক্ষকের মানবেতর জীবন


ঝড়ে পড়া শিশুদের শিক্ষা কার্যক্রমে বেতন-বঞ্চিত ৫০০ শিক্ষকের মানবেতর জীবন


ঢাকা প্রেস
আনোয়ার সাঈদ তিতু, কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি:-

 

কুড়িগ্রামে ঝড়ে পড়া শিশুদের শিক্ষার জন্য পরিচালিত চতুর্থ প্রাথমিক শিক্ষা উন্নয়ন কর্মসূচি (পিইডিপি-৪) এর অধীনে কাজ করা পাঁচ শতাধিক শিক্ষক, কর্মকর্তা এবং কর্মচারী গত ১১ মাস ধরে বেতন-বঞ্চিত রয়েছেন। মন্ত্রণালয় থেকে অর্থ ছাড় না হওয়ায় এই পরিস্থিতি সৃষ্টি হয়েছে, যা তাদের জীবনে চরম দুর্দশা এনে দিয়েছে।
 


প্রকল্পের কার্যক্রম ও বর্তমান অবস্থা ঃ-

উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরো, কুড়িগ্রাম সূত্রে জানা গেছে, ২০২২ সালের জুলাই মাসে কুড়িগ্রামের ছয়টি উপজেলায় ৪২০টি শিখন কেন্দ্র স্থাপন করে ১২,৬০০ ঝড়ে পড়া শিশুর শিক্ষা কার্যক্রম শুরু হয়। তাদের মূলধারার শিক্ষায় ফিরিয়ে আনার লক্ষ্যে এ প্রকল্প পরিচালিত হচ্ছে। এর আওতায় ইতোমধ্যে ৪,৮৬১ জন শিক্ষার্থী মূলধারায় ফিরে এসেছে। বর্তমানে ৭,৭৩৯ জন শিক্ষার্থী ৫ম শ্রেণিতে অধ্যয়নরত।
 

 

পিইডিপি-৪ এর লক্ষ্য ও বাস্তবায়ন ঃ-

দেশে শতভাগ শিশুর প্রাথমিক শিক্ষা নিশ্চিত করতে প্রাথমিক ও গণশিক্ষা মন্ত্রণালয়ের অধীনে প্রাথমিক শিক্ষা অধিদপ্তর পিইডিপি-৪ বাস্তবায়ন করছে। প্রকল্পের মূল লক্ষ্য হচ্ছে প্রাক-প্রাথমিক থেকে ৫ম শ্রেণি পর্যন্ত সমতাভিত্তিক মানসম্মত শিক্ষা নিশ্চিত করা।
 


মানবেতর জীবনযাপন ঃ-

প্রকল্প বাস্তবায়নকারী সংস্থা ছিন্নমুকুল বাংলাদেশ এর প্রোগ্রাম হেড সুশান্ত পাল জানান, রাজারহাট, উলিপুর, ভূরুঙ্গামারী, চিলমারী, রৌমারী এবং রাজীবপুর উপজেলার ৪২০ জন শিক্ষকসহ মোট ৪৭৮ জন কর্মকর্তা ও কর্মচারী এই প্রকল্পে কাজ করছেন। দীর্ঘ ১১ মাস ধরে বেতন না পাওয়ায় তারা চরম কষ্টে দিন কাটাচ্ছেন।

উলিপুর উপজেলার শিখন কেন্দ্রের শিক্ষক বিজয় লস্কর বলেন,

"দীর্ঘদিন বেতন না পেয়ে আত্মীয়-স্বজন এবং দোকানিদের কাছ থেকে ধার করা টাকা পরিশোধ করতে পারছি না। সংসার চালানো কঠিন হয়ে পড়েছে।"

এদিকে প্রোগ্রাম সুপারভাইজার এ কে এম আনোয়ার সাঈদ তিতু জানান,

"গত বছরের ডিসেম্বরে শেষবার বেতন পেয়েছি। এরপর আর কিছু পাইনি। এই চাকরিই আমার একমাত্র আয়ের উৎস। এখন মানবেতর জীবন কাটাতে হচ্ছে।"

 



সমস্যার মূলে অর্থ ছাড়ের বিলম্ব ঃ-

কুড়িগ্রামের উপানুষ্ঠানিক শিক্ষা ব্যুরোর সহকারী পরিচালক সৈয়দ ফিরোজ ইফতেখার জানান,

"প্রকল্পটি বাস্তবায়ন নির্দেশিকা অনুযায়ী চলছে। কিন্তু ২০২৩ সালের ডিসেম্বর থেকে অর্থ ছাড় বন্ধ রয়েছে। মন্ত্রণালয়ের সঙ্গে যোগাযোগ অব্যাহত আছে। প্রকল্পটি ২০২৫ সালের জুন পর্যন্ত চালু রাখা প্রয়োজন।"
 

আর্থিক সংকট সমাধানের আহ্বান ঃ-

প্রকল্পটি সফলভাবে পরিচালনা এবং শিশুদের মূলধারার শিক্ষায় ফিরিয়ে আনতে মন্ত্রণালয়ের কাছ থেকে দ্রুত অর্থ ছাড়ের আহ্বান জানিয়েছেন সংশ্লিষ্টরা। অন্যথায় ঝড়ে পড়া শিশুদের শিক্ষার পাশাপাশি প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের জীবনযাত্রাও হুমকির মুখে পড়বে।


সম্পাদকঃ সারোয়ার কবির     |     প্রকাশকঃ আমান উল্লাহ সরকার
যোগাযোগঃ স্যুইট # ০৬, লেভেল #০৯, ইস্টার্ন আরজু , শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম সরণি, ৬১, বিজয়নগর, ঢাকা ১০০০, বাংলাদেশ।
মোবাইলঃ   +৮৮০ ১৭১১৩১৪১৫৬, টেলিফোনঃ   +৮৮০ ২২২৬৬৬৫৫৩৩
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৫