কোনো দল বা গোষ্ঠীর নয়, পুলিশ সব নাগরিকের: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

  প্রিন্ট করুন   প্রকাশকালঃ ২৩ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০১:৩৬ অপরাহ্ণ   |   ৮৮ বার পঠিত
কোনো দল বা গোষ্ঠীর নয়, পুলিশ সব নাগরিকের: স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা

ঢাকা প্রেস নিউজ

 

স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা লেফটেন্যান্ট জেনারেল মো. জাহাঙ্গীর আলম চৌধুরী বলেছেন, বাংলাদেশ রাষ্ট্র সব নাগরিকের। এটি কোনো নির্দিষ্ট দলের, গোষ্ঠীর বা সম্প্রদায়ের সম্পত্তি নয়। বাংলাদেশ পুলিশ প্রজাতন্ত্রের স্বাধীন কর্মচারী হিসেবে আইন মেনে চলে এবং নাগরিকদের নিরাপত্তা ও আইনের শাসন প্রতিষ্ঠায় নিরলসভাবে কাজ করে। তিনি জোর দিয়ে বলেন, পুলিশ কোনো দলের তল্পিবাহক নয় এবং কোনো রাজনৈতিক এজেন্ডা বাস্তবায়ন কিংবা অন্যায় আদেশ পালনে নিজেদের জড়াবে না। আজকের সমাপনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত নতুন পুলিশ কর্মকর্তাদের তিনি এই নীতিতে অবিচল থাকার আহ্বান জানান।
 

রোববার সকাল ১০টায় সারদা পুলিশ একাডেমিতে কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠানে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত হয়ে স্বরাষ্ট্র উপদেষ্টা অভিবাদন গ্রহণ করেন এবং শ্রেষ্ঠ প্রশিক্ষণার্থীদের মাঝে পুরস্কার বিতরণ করেন। পরে তিনি নবীন পুলিশ কর্মকর্তাদের উদ্দেশ্যে বক্তব্য দেন।
 

নবীন কর্মকর্তাদের উদ্দেশে তিনি বলেন, পেশাদারিত্ব, আন্তরিকতা, নিষ্ঠা ও দায়িত্বশীলতার সঙ্গে কর্তব্য পালন করতে হবে। থানায় আগত মানুষ যেন হয়রানির শিকার না হয়, সে বিষয়ে বিশেষ গুরুত্ব দিতে হবে।
 

এ সময় তিনি বলেন, দেশের ছাত্র-জনতার বৈষম্যবিরোধী আন্দোলন নতুন অধ্যায়ের সূচনা করেছে, যা পুলিশের দায়িত্ববোধকেও নতুনভাবে উজ্জীবিত করেছে। নবীন কর্মকর্তাদের উদ্দেশে তিনি সতর্ক করে বলেন, পুলিশ বাহিনী কোনো দলের আজ্ঞাবহ হয়ে অপেশাদার আচরণ বা বেআইনি কর্মকাণ্ডে লিপ্ত হবে না।
 

তিনি আরও বলেন, আজ আপনাদের মৌলিক প্রশিক্ষণের সমাপ্তি ঘটল। সুপ্রশিক্ষিত, মেধাবী ও চৌকস পুলিশ কর্মকর্তা হিসেবে আপনারা এখন আইন প্রতিষ্ঠার দায়িত্ব নেবেন। নাগরিক সেবায় আত্মনিয়োগের জন্য আপনাদের নতুন কর্মজীবনে স্বাগত জানাই। সমাপনী অনুষ্ঠানে কুচকাওয়াজ প্রদর্শনের জন্য আপনাদের অভিনন্দন ও শুভেচ্ছা।
 

২০২৩ সালের ২০ অক্টোবর বিসিএস ৪০তম ব্যাচের ৬৩ জন এবং ৩৮তম ব্যাচের তিনজনসহ মোট ৬৬ জন শিক্ষানবিশ সহকারী পুলিশ সুপার এক বছরের মৌলিক প্রশিক্ষণ শুরু করেন। তবে প্রশিক্ষণ শেষে সমাপনী কুচকাওয়াজ কয়েক দফা স্থগিত হয়। প্রথমে ২০২৩ সালের ২০ অক্টোবর নির্ধারিত কুচকাওয়াজ হঠাৎ বাতিল করা হয়। পরবর্তীতে ২৪ নভেম্বর নতুন তারিখ নির্ধারণ করা হলেও সেটিও বাতিল করা হয়।
 

এরপর ১৫ ডিসেম্বর, শৃঙ্খলাভঙ্গের অভিযোগে ২৫ জন শিক্ষানবিশ এএসপিকে শোকজ করা হয়। প্রশিক্ষণ সমাপনী কুচকাওয়াজের মাত্র দুই দিন আগে, ২১ ফেব্রুয়ারি, শোকজপ্রাপ্তদের মধ্যে ছয়জনকে চাকরিচ্যুত করা হয়। অবশেষে, আজ ২৩ ফেব্রুয়ারি, ৪০তম বিসিএস ব্যাচের ৫৭ জন এবং ৩৮তম বিসিএস ব্যাচের তিনজনসহ মোট ৬০ জন শিক্ষানবিশ সহকারী পুলিশ সুপারের সমাপনী কুচকাওয়াজ অনুষ্ঠিত হলো।
 

অনুষ্ঠানে বাংলাদেশ পুলিশের মহাপরিদর্শক বাহারুল আলম, পুলিশ একাডেমি সারদার অধ্যক্ষ মাসুদুর রহমান ভূঞা, ১১ পদাতিক ডিভিশনের এরিয়া কমান্ডার মেজর জেনারেল এস এম আসাদুল হক, রাজশাহী মেডিকেল বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য অধ্যাপক ডা. মোহাম্মদ জাওয়াদুল হক, রাজশাহী বিভাগীয় কমিশনার খোন্দকার আজিম আহমেদ, অতিরিক্ত আইজি (এইচআরএম) আবু নাছের মোহাম্মদ খালেদ, আরএমপির পুলিশ কমিশনার মোহাম্মদ আবু সুফিয়ানসহ বিভিন্ন সরকারি উচ্চপদস্থ কর্মকর্তারা উপস্থিত ছিলেন।