|
প্রিন্টের সময়কালঃ ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ০৪:১৫ অপরাহ্ণ     |     প্রকাশকালঃ ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২৫ ১১:৪১ পূর্বাহ্ণ

ট্রাফিক বাতি জ্বলছে–নিভছে, তবুও ইশারাতেই চলছে গাড়ি


ট্রাফিক বাতি জ্বলছে–নিভছে, তবুও ইশারাতেই চলছে গাড়ি


রাজধানীতে পরীক্ষামূলকভাবে চালু হওয়া স্বয়ংক্রিয় ট্রাফিক সংকেত আশানুরূপ ফল দিচ্ছে না। যানবাহনের চাপ সামলাতে না পেরে ট্রাফিক সদস্যরা আবারও হাতের ইশারায় গাড়ি নিয়ন্ত্রণে ফিরেছেন।
 

দায়িত্বশীলরা বলছেন, এই উদ্যোগের উদ্দেশ্য কেবল যানজট নিরসন নয়, বরং মানুষকে আধুনিক ট্রাফিক সিগন্যাল ব্যবস্থায় অভ্যস্ত করে তোলা। ধীরে ধীরে স্বয়ংক্রিয় ব্যবস্থায় ফিরে যেতে হবে।
 

গত ৩১ আগস্ট আবদুল্লাহপুর থেকে হাইকোর্ট পর্যন্ত সাতটি মোড়ে স্বয়ংক্রিয় ট্রাফিক সংকেত চালু করা হয়। ১৮ কোটি টাকা ব্যয়ে দেশীয় প্রযুক্তিতে নির্মিত এ সিস্টেম বাস্তবায়ন করেছে বুয়েট, ডিএমপি ট্রাফিক বিভাগ, ডিটিসিএ ও দুই সিটি করপোরেশন। সফল হলে আরও ১৫টি স্থানে একই ব্যবস্থা চালুর পরিকল্পনা রয়েছে।
 

যেসব মোড়ে স্বয়ংক্রিয় সংকেত চালু হয়েছে:

  • হোটেল ইন্টারকন্টিনেন্টাল

  • বাংলামটর

  • সোনারগাঁও হোটেল (কারওয়ান বাজার)

  • ফার্মগেট

  • বিজয় সরণি

  • প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয়

  • জাহাঙ্গীর গেট

তবে বাস্তবে দেখা যাচ্ছে, সংকেত বাতি চালু হলেও গাড়িগুলো খুব একটা মানছে না। অনেক জায়গায় আরও বেশি যানজট তৈরি হচ্ছে। ফলে ট্রাফিক পুলিশ আলোচনার মাধ্যমে আবারও হাতের ইশারায় নিয়ন্ত্রণ শুরু করেছেন।
 

গতকাল সোমবার সরেজমিন ঘুরে দেখা যায়, জাহাঙ্গীর গেট ছাড়া অন্য কোনো সংযোগস্থলে পুরোপুরি স্বয়ংক্রিয় সংকেত কার্যকর হয়নি। অফিস সময়ের চাপে বিজয় সরণি, ফার্মগেট, বাংলামটর ও কারওয়ান বাজারে পুলিশকেই বাঁশি ও হাতের ইশারায় গাড়ি চালাতে দেখা গেছে। তবে দুপুরে ইন্টারকন্টিনেন্টাল মোড়ে কিছুটা শৃঙ্খলা লক্ষ্য করা গেছে।
 

পুলিশ কর্মকর্তাদের অভিমত
কারওয়ান বাজারে দায়িত্বে থাকা ট্রাফিক পুলিশ কর্মকর্তা মো. মাইনুল বলেন, “কখনো কখনো এক দিক থেকে এত গাড়ি আসে যে শুধু সংকেত দিয়ে নিয়ন্ত্রণ করা যায় না। তখন বাধ্য হয়ে ম্যানুয়ালি সময় বাড়ানো বা কমানো হয়।”

 

অন্য কর্মকর্তারাও জানান, পুলিশ বক্স থেকেই সংকেত বাতি নিয়ন্ত্রণ করা যায়। প্রয়োজনে ম্যানুয়াল অপারেশন চালু করে চাপ অনুযায়ী লাল-সবুজ বাতি পরিবর্তন করা হচ্ছে।
 

প্রকল্প সংশ্লিষ্টদের মতামত
ডিটিসিএর নির্বাহী পরিচালক নীলিমা আখতার জানান, কিছু কারিগরি ত্রুটি ধরা পড়েছে, বুয়েটের বিশেষজ্ঞরা সেগুলো নিয়ে কাজ করছেন। তবে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ পথচারী নিয়ন্ত্রণ করা। তারা সিগন্যাল মানতে চান না। ফলে সচেতনতা তৈরি না হলে ব্যবস্থা কার্যকর হবে না।

 

বুয়েটের অ্যাক্সিডেন্ট রিসার্চ ইনস্টিটিউটের পরিচালক অধ্যাপক ড. হাদিউজ্জামান বলেন, “ঢাকায় হঠাৎ করে এক দিক থেকে গাড়ির চাপ বেড়ে যায়। তাই অটোমেটিকের পাশাপাশি ম্যানুয়াল নিয়ন্ত্রণ রাখা হয়েছে। এই সিগন্যাল কোনো জাদুকাঠি নয় যে যানজট শেষ হয়ে যাবে। বিশ্বের উন্নত দেশেও যানজট আছে। মূল উদ্দেশ্য হলো মানুষকে ধীরে ধীরে সিগন্যাল মানতে অভ্যস্ত করা।”
 

👉 সংক্ষেপে, স্বয়ংক্রিয় ট্রাফিক সংকেত রাজধানীতে পরীক্ষামূলক যাত্রা শুরু করলেও এর কার্যকারিতা নিশ্চিত করতে প্রযুক্তিগত সমাধানের পাশাপাশি চালক ও পথচারীর সচেতনতা সবচেয়ে বেশি প্রয়োজন।


সম্পাদকঃ সারোয়ার কবির     |     প্রকাশকঃ আমান উল্লাহ সরকার
যোগাযোগঃ স্যুইট # ০৬, লেভেল #০৯, ইস্টার্ন আরজু , শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম সরণি, ৬১, বিজয়নগর, ঢাকা ১০০০, বাংলাদেশ।
মোবাইলঃ   +৮৮০ ১৭১১৩১৪১৫৬, টেলিফোনঃ   +৮৮০ ২২২৬৬৬৫৫৩৩
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৫