ঢাকা প্রেস
আনোয়ার সাঈদ তিতু, কুড়িগ্রাম জেলা প্রতিনিধি:-
কুড়িগ্রামের উলিপুর থানা চত্বরে বিএনপির দুই গ্রুপের বৈঠকে নেতাকর্মীদের হাতাহাতি হয়েছে বলে জানা গেছে। এ সময় এক যুবদল নেতার মৃত্যু হয়েছে। আজ শুক্রবার (২৭ ডিসেম্বর) সন্ধ্যায় এ ঘটনা ঘটে।
নিহত আশরাফুল ইসলাম (৩৮) উলিপুর পৌর যুবদলের যুগ্ম আহ্বায়ক। তিনি পৌর এলাকার ৬ নম্বর ওয়ার্ডের দয়ালপাড়া গ্রামের আয়নাল হকের ছেলে এবং জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি ও সদ্য ঘোষিত আহ্বায়ক কমিটির সদস্য তাসভীরুল ইসলামের সমর্থক ছিলেন।
পুলিশ ও বিএনপির নেতাকর্মীদের তথ্য অনুযায়ী, জেলা বিএনপির সাবেক সভাপতি তাসভীরুল ইসলাম এবং রংপুর বিভাগীয় সহ-সাংগঠনিক সম্পাদক আব্দুল খালেকের সমর্থকদের মধ্যে থানার গোল ঘরে একটি অরাজনৈতিক বিষয় নিয়ে মীমাংসার বৈঠক চলছিল। বৈঠকের একপর্যায়ে দুই পক্ষের মধ্যে হাতাহাতি শুরু হলে আশরাফুল পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে চেষ্টা করেন। এ সময় তিনি গুরুতর আহত হন। তাকে দ্রুত উলিপুর উপজেলা স্বাস্থ্য কমপ্লেক্সে নেওয়া হলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
আশরাফুলের মৃত্যুর খবর ছড়িয়ে পড়লে তাসভীর গ্রুপের নেতাকর্মীরা উত্তেজিত হয়ে খালেকের সমর্থক আমিনুল ইসলামের মালিকানাধীন শুভেচ্ছা হোটেলে ভাঙচুর চালান। এছাড়া কৃষকদল নেতা আবু জাফর সোহেল রানা ও সাবেক ছাত্রদল নেতা ফিরোজ কবির কাজলের বাড়িতে আগুন ধরিয়ে দেন বিক্ষুব্ধ নেতাকর্মীরা। আইনশৃঙ্খলা পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে অতিরিক্ত পুলিশ মোতায়েন করা হয়েছে।
পুলিশের দাবি, আশরাফুল সংঘর্ষে আহত হয়ে নয়, বরং স্ট্রোকের কারণে মারা গেছেন। তবে নিহতের শরীরে আঘাতের চিহ্ন ছিল কি না, তাৎক্ষণিকভাবে নিশ্চিত করতে পারেননি চিকিৎসকরা।
বৈঠকে উপস্থিত এক সদস্য নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ‘আলোচনার একপর্যায়ে উত্তেজিত হয়ে আশরাফুল মাটিতে পড়ে যায়। আমাদের লোকজন তাকে দ্রুত হাসপাতালে নিলে চিকিৎসক মৃত ঘোষণা করেন।
জেলা বিএনপির আহ্বায়ক কমিটির এক নেতা জানান, সংঘর্ষের সময় আশরাফুল আঘাতপ্রাপ্ত হয়ে মারা যান বলে তারা শুনেছেন।
কুড়িগ্রামের সিভিল সার্জন ডা. মঞ্জুর এ মুর্শেদ জানান, আশরাফুলকে মৃত অবস্থায় হাসপাতালে আনা হয় এবং কয়েকজন আহত হয়ে চিকিৎসাধীন আছেন।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত উলিপুর উপজেলা শহরে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। ঘটনার তদন্ত এবং পরবর্তী পদক্ষেপ নেওয়া হচ্ছে বলে জানিয়েছেন পুলিশ ও সংশ্লিষ্টরা।
উলিপুর থানার ভারপ্রাপ্ত কর্মকর্তা (ওসি) জিল্লুর রহমান বলেন, ‘আমি ছুটিতে আছি। থানার ভেতরে নয়, শুনেছি থানা চত্বরের কাছে বিএনপির দুই গ্রুপের মধ্যে সংঘর্ষের ঘটনা ঘটেছে। একজন মারা গিয়েছেন। থানার উদ্দেশে রওনা হয়েছি।
শেষ খবর পাওয়া পর্যন্ত উপজেলা শহরে উত্তেজনা বিরাজ করছিল। থানার দায়িত্বে থাকা উপপরিদর্শক (এসআই) আব্দুর রশিদের সঙ্গে যোগাযোগের চেষ্টা করলেও তিনি ফোন রিসিভ করেননি।