|
প্রিন্টের সময়কালঃ ৩০ জুন ২০২৫ ০৪:২৫ পূর্বাহ্ণ     |     প্রকাশকালঃ ২৯ জুন ২০২৫ ০৫:০৫ অপরাহ্ণ

এনবিআরের সেবাকে ‘অত্যাবশ্যকীয়’ ঘোষণা করছে সরকার


এনবিআরের সেবাকে ‘অত্যাবশ্যকীয়’ ঘোষণা করছে সরকার


ঢাকা প্রেস-নিউজ ডেস্ক:-

 

জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের (এনবিআর) সংস্কার ও চেয়ারম্যান অপসারণের দাবিতে চলমান আন্দোলনের মধ্যে এনবিআরের সেবাকে ‘অত্যাবশ্যকীয়’ হিসেবে ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে অন্তর্বর্তীকালীন সরকার। রোববার (২৯ জুন) বিকেলে প্রধান উপদেষ্টার কার্যালয় থেকে পাঠানো এক সরকারি বিবৃতিতে এ তথ্য জানানো হয়।
 

বিবৃতিতে বলা হয়, দেশের অতি জরুরি আমদানি-রপ্তানি ও বৈদেশিক বাণিজ্য কার্যক্রম সচল রাখার স্বার্থে সরকার জাতীয় রাজস্ব বোর্ডের অধীনস্থ সব কাস্টমস হাউস, আইসিডি, বন্ড কমিশনারেট ও শুল্ক স্টেশনসমূহের সব শ্রেণির চাকরিকে ‘অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবা’ হিসেবে ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত নিয়েছে।
 

এর আগে, এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা ‘কমপ্লিট শাটডাউন’ ও ‘মার্চ টু এনবিআর’ কর্মসূচির আওতায় গতকাল শনিবার থেকে দেশের সব কর, মূসক (ভ্যাট) ও কাস্টমস দপ্তরের কার্যক্রম বন্ধ রেখে আন্দোলন শুরু করেন। আজ রোববারও সেই কর্মসূচি অব্যাহত রয়েছে। আন্দোলনকারীরা এনবিআর সংস্কার ঐক্য পরিষদের ব্যানারে সকাল থেকেই আগারগাঁওয়ে এনবিআরের প্রধান কার্যালয়ের সামনে অবস্থান নেন, যার ফলে দেশের আমদানি-রপ্তানি কার্যক্রমে অচলাবস্থা সৃষ্টি হয়েছে।
 

এ পরিস্থিতিতে আজ দুপুরে অর্থ উপদেষ্টা ড. সালেহউদ্দিন আহমেদ সাংবাদিকদের বলেন, “আজ আন্দোলনকারীদের সঙ্গে সরকারের কোনো বৈঠক হচ্ছে না। যদি তারা শাটডাউনে যেতে চায়, তবে যাক।” এই মন্তব্যের কিছুক্ষণ পরেই এনবিআরের সেবা ‘অত্যাবশ্যকীয়’ হিসেবে ঘোষণা করার সিদ্ধান্ত জানানো হয়।
 

প্রেস বিবৃতিতে আরও বলা হয়, বাজেট বাস্তবায়নে সবচেয়ে বড় চ্যালেঞ্জ হচ্ছে দুর্বল রাজস্ব ব্যবস্থাপনা। রাষ্ট্রের প্রয়োজন অনুযায়ী পর্যাপ্ত রাজস্ব সংগ্রহ না হওয়ার পেছনে রয়েছে ব্যবস্থাপনার দুর্বলতা, অনিয়ম এবং দুর্নীতি। এসব বিবেচনায় সরকার এনবিআর পুনর্গঠনের সিদ্ধান্ত নিয়েছে, যা বিভিন্ন অংশীজনের পরামর্শের ভিত্তিতে গৃহীত।
 

বিবৃতিতে সরকার গভীর উদ্বেগ প্রকাশ করে জানায়, গত দুই মাস ধরে রাজস্ব সংস্কার কার্যক্রম বাধাগ্রস্ত করতে কিছু কর্মকর্তা-কর্মচারী নজিরবিহীন আন্দোলন চালিয়ে যাচ্ছে। এর ফলে শুধু রাজস্ব আদায়ই নয়, দেশের ব্যবসা-বাণিজ্য ও আমদানি-রপ্তানিও ক্ষতিগ্রস্ত হচ্ছে। আন্দোলনের নামে সৃষ্ট দুর্ভোগ সম্পূর্ণ অগ্রহণযোগ্য ও অনৈতিক।
 

সরকার অভিযোগ করে, আন্দোলনকারীদের এ কর্মসূচি পরিকল্পিত এবং ষড়যন্ত্রমূলক, যা জাতীয় স্বার্থ ও নাগরিক অধিকার পরিপন্থী। সরকার বারবার আলোচনার আহ্বান জানিয়েও সাড়া পায়নি। বরং তারা অনমনীয় অবস্থান নিয়ে অর্থনীতিকে ক্ষতির মুখে ঠেলে দিচ্ছে।
 

এই প্রেক্ষাপটে, জাতীয় স্বার্থে সরকার বাধ্য হয়ে এনবিআরের আওতাধীন দপ্তরগুলোর কার্যক্রমকে ‘অত্যাবশ্যকীয় পরিষেবা’ হিসেবে ঘোষণা করছে বলে জানানো হয়। সরকারের পক্ষ থেকে প্রত্যাশা করা হয়েছে, কর্মকর্তা-কর্মচারীরা দ্রুত কর্মস্থলে ফিরে এসে আইনবিরোধী কার্যক্রম থেকে সরে আসবেন। অন্যথায়, জনস্বার্থ রক্ষায় সরকার কঠোর পদক্ষেপ নিতে বাধ্য হবে।
 

উল্লেখ্য, গত ১২ মে সরকার এনবিআর বিলুপ্ত করে রাজস্বনীতি ও ব্যবস্থাপনা বিভাগ গঠন করে অধ্যাদেশ জারি করে। এই সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে আন্দোলনে নামে এনবিআরের কর্মকর্তা-কর্মচারীরা। ২৫ মে সরকার ৩১ জুলাইয়ের মধ্যে অধ্যাদেশ সংশোধনের আশ্বাস দিলে আন্দোলন স্থগিত হয়। কিন্তু ২২ জুন থেকে চেয়ারম্যানের অপসারণ দাবিতে ফের আন্দোলন শুরু হয়। পূর্বঘোষণা অনুযায়ী, গতকাল এবং আজ সারাদেশে এনবিআরের সব কর, ভ্যাট ও শুল্ক দপ্তরে চলছে পূর্ণাঙ্গ শাটডাউন কর্মসূচি।


সম্পাদকঃ সারোয়ার কবির     |     প্রকাশকঃ আমান উল্লাহ সরকার
যোগাযোগঃ স্যুইট # ০৬, লেভেল #০৯, ইস্টার্ন আরজু , শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম সরণি, ৬১, বিজয়নগর, ঢাকা ১০০০, বাংলাদেশ।
মোবাইলঃ   +৮৮০ ১৭১১৩১৪১৫৬, টেলিফোনঃ   +৮৮০ ২২২৬৬৬৫৫৩৩
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৫