ঢাকা প্রেস
সিরাজুল ইসলাম রতন,গাইবান্ধা প্রতিনিধি:-
গাইবান্ধা পৌরসভায় যানজট মুক্তির উদ্দেশ্যে প্রায় ৬ হাজার ব্যাটারিচালিত অটোরিকশাকে দু'ভাগে বিভক্ত করে একদিন পরপর চলাচলের নির্দেশনা দেওয়া হলে, এ সিদ্ধান্তের প্রতিবাদে আজ সকাল থেকে সন্ধ্যা পর্যন্ত ধর্মঘটের ডাক দেন অটোরিকশা-ভ্যান মালিক ও শ্রমিকরা। এতে সাধারণ মানুষ চরম ভোগান্তিতে পড়েছেন, বিশেষ করে পরিক্ষার্থীরা কঠিন পরিস্থিতির মুখোমুখি হয়েছেন। ধর্মঘটের কারণে জনদুর্ভোগ বেড়ে যায়।
বুধবার (৮ জানুয়ারি) সকাল থেকে গাইবান্ধা পৌরসভা এলাকায় গাইবান্ধা রিকশা, ব্যাটারি রিকশা, ভ্যান ও ইজিবাইক সংগ্রাম পরিষদ এ কর্মসূচি পালন করছে। তারা পৌরসভার ‘অযৌক্তিক’ সিদ্ধান্ত বাতিলের দাবি জানিয়ে পাঁচ দফা দাবি উত্থাপন করে এবং সকাল ৬টা থেকে সন্ধ্যা ৬টা পর্যন্ত কর্মবিরতির লিফলেট বিতরণ করেন।
তাদের দাবি না মানলে এবং পৌরসভার সিদ্ধান্ত প্রত্যাহার না হলে, কর্মসূচি চালিয়ে যাওয়ার হুঁশিয়ারি দেওয়া হয়।
সরেজমিনে গাইবান্ধা শহর ঘুরে দেখা যায়, সাধারণ মানুষ জরুরি কাজ শেষে হেঁটেই গন্তব্যে পৌঁছাতে বাধ্য হচ্ছেন। বিশেষ করে কোমলমতি শিক্ষার্থীরা ও অনার্স দ্বিতীয় বর্ষের পরিক্ষার্থীরা যানবাহনের অভাবে চরম দুর্ভোগে পড়েন এবং হেঁটে পরিক্ষা কেন্দ্রে পৌঁছাতে বাধ্য হন। যারা আন্দোলনকারীদের সিদ্ধান্তের বাইরে গিয়ে যানবাহন চালু করেছেন, তাদের গাড়ির চাকার হাওয়া ফুঁড়ে দেওয়া হচ্ছে।
রাধাকৃষ্ণপুর গ্রামের এক বাসিন্দা বলেন, "আমরা শহরে যাওয়ার জন্য বের হয়েছি, কিন্তু এখানে এসে দেখি কোনো যানবাহন নেই, তাই হেঁটেই রওনা দিয়েছি।"
এর আগে গাইবান্ধা পৌরসভা শহরের যানজট মুক্ত করতে ব্যাটারি চালিত সবুজ ও হলুদ গাড়ির জন্য নির্দিষ্ট দিন ঘোষণা করে। এ সিদ্ধান্তের পরেই চালকরা পৌরসভার সিদ্ধান্তের বিরুদ্ধে প্রতিবাদ জানিয়ে পাঁচ দফা দাবি তুলে ধরেন।
দাবিগুলো হলো: ১. গাইবান্ধা পৌরসভায় ইজিবাইক, রিকশা, মিশুক চলাচলে পৌরসভার অবাস্তব ও অযৌক্তিক সিদ্ধান্ত বাতিল করা হোক। ২. ব্যাটারিচালিত যানবাহনের নিবন্ধন, লাইসেন্স ও রুট পারমিট বি আর টি এ কর্তৃক প্রদান করা এবং প্রয়োজনীয় নীতিমালা প্রণয়ন করা। ৩. শহরের যানজট নিরসনের লক্ষ্যে বাইপাস সড়ক নির্মাণ করা। ৪. শহরের গুরুত্বপূর্ণ মোড়গুলোতে ইজিবাইক স্ট্যান্ড নির্মাণ করা এবং পৌর ফি বার্ষিক ১০০০ টাকা নির্ধারণ করা। ৫. পৌরসভায় চলাচলকারী চালকদের জন্য স্বল্পমূল্যে রেশন চালু করা এবং প্রতিটি সড়ক-মহাসড়কে ইজিবাইকসহ স্বল্পগতির যানবাহনের জন্য আলাদা লেন/সার্ভিস রোড নির্মাণ করা।
এ বিষয়ে গাইবান্ধা অটো-মালিক চালক সমন্বয় সমিতির সহসভাপতি তিতু বলেন, "আমরা প্রতিদিনই অটো চালাতে চাই। তিনদিন বন্ধ, তিনদিন চালু—আমরা পৌরসভার এই সিদ্ধান্ত মানি না।"
গাইবান্ধা পৌরসভার প্রশাসক মো. শরিফুল ইসলাম বলেন, "আন্দোলন করছে তাদের সংগঠনের একটি অংশ। পৌরসভার নির্দিষ্ট আইন রয়েছে, এবং সেই আইন অনুযায়ী পৌরসভা কার্যক্রম পরিচালিত হবে।"