লাইসেন্স ছাড়াই চলছে একাধিক অবৈধ ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার

প্রকাশকালঃ ১৯ মে ২০২৪ ১২:৫১ অপরাহ্ণ ৭৫৬ বার পঠিত
লাইসেন্স ছাড়াই চলছে একাধিক অবৈধ  ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টার

আনোয়ার সাঈদ তিতু, কুড়িগ্রাম প্রতিনিধি:-

 

 

মমতা মেডিক্যাল অ্যান্ড ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টারের পরিচালক আলাউদ্দিন বলেন, কচাকাটা এলাকা থেকে কুড়িগ্রাম গিয়ে লাইসেন্স নবায়ন করতে সময় এবং অর্থ দুটোই ব্যয় হয়। সেজন্য সিভিল সার্জন অফিসের স্টাফ সিরাজুলকে চা খাওয়ার জন্য লাইসেন্স নবায়ন করার টাকা পাঠায় দিলে তিনি সব করে দেন।

 

কুড়িগ্রামে লাইসেন্স বিহীন এবং লাইসেন্স নবায়ন ছাড়াই চলছে বহু ক্লিনিক এবং ডায়াগনস্টিক সেন্টার। কুড়িগ্রাম সিভিল সার্জন কার্যালয়ের তথ্য অনুযায়ী, জেলার ৯টি উপজেলায় ক্লিনিক এবং ডায়াগনস্টিক সেন্টার আছে ৯৩টি। এর মধ্যে এসব অনিয়মের কারণে ইতোমধ্যে ১০টি ডায়াগনস্টিক সেন্টারকে ৩৫ হাজার টাকা জরিমানা এবং চারটি প্রতিষ্ঠানকে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।

 

কুড়িগ্রামের ভূরুঙ্গামারী উপজেলার প্রাণকেন্দ্রে অবস্থিত ভূরুঙ্গামারী পুপলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার। সরেজমিনে দেখা যায়, এখানে পরীক্ষা নিরীক্ষা করা হয় নানা রোগের। ব্যবস্থাপত্র দেয়ার জন্যও আছেন চিকিৎসক। রোগীর ব্যবস্থাপত্রে দেখা যায় আল্ট্রাসনোগ্রাম, রক্ত পরীক্ষা হচ্ছে অনায়াসে, এ ডায়াগনস্টিক সেন্টারের নেই কোনো বৈধ লাইসেন্স। লাইসেন্সের কোনো কাগজপত্র দেখাতে পারেনি ক্লিনিক কর্তৃপক্ষ।

 

একই উপজেলার আপডেট ডায়াগনস্টিক সেন্টার, জনসেবা ডায়াগনস্টিক সেন্টারসহ জেলার ৯টি উপজেলার অধিকাংশ ডায়াগনস্টিক ঘুরে দেখা গেছে অধিকাংশ প্রতিষ্ঠানের লাইসেন্স কয়েক বছর ধরে নবায়ন করা নেই। অথচ দিব্যি চলছে এসব ডায়াগনস্টিক সেন্টার।

 

ভূরুঙ্গামারী পুপলার ডায়াগনস্টিক সেন্টার পরিচালক হুমায়ুন কবির লাইসেন্স না পাওয়ার কথা স্বীকার করলেও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের কার্যক্রম নেই দাবি করেন তিনি, কিন্তু একজন রোগীর দেয়া কাগজপত্র দেখালে তিনি ক্ষিপ্ত হয়ে ডায়াগনস্টিক সেন্টার থেকে বেরিয়ে যান। 

 

কয়েকজন ক্লিনিক ও ডায়াগনস্টিক সেন্টারের মালিক নাম প্রকাশ না করার শর্তে বলেন, ভূরুঙ্গামারী পুপলার ডায়াগনস্টিক সেন্টারের প্রতিষ্ঠা হওয়ার আগে সেখানে জুতার দোকান ছিল। ডায়াগনস্টিক সেন্টার চালু হওয়ার পূর্বে প্রতিষ্ঠানের প্রতিষ্ঠাতা বীর মুক্তিযোদ্ধা আবুল কাশেম বেশ কয়েক বছর আগে মারা যান, কিন্তু নিয়ম বহির্ভূতভাবে মৃত ব্যক্তিকে প্রতিষ্ঠাতা দেখানো হয়েছে।

 

রাজারহাট উপজেলার ডক্টরস ডায়াগনস্টিক সেন্টার পরিচালক হায়দার আলী বলেন, নতুন লাইসেন্স কিংবা নবায়ন প্রাপ্তির আবেদন করে বা জেলা স্বাস্থ্য বিভাগের পরিদর্শন শেষে কার্যক্রম পরিচালনা করা যায়।

 

ওমমতা মেডিক্যাল অ্যান্ড ডিজিটাল ডায়াগনস্টিক সেন্টারের পরিচালক আলাউদ্দিন বলেন, কচাকাটা এলাকা থেকে কুড়িগ্রাম গিয়ে লাইসেন্স নবায়ন করতে সময় এবং অর্থ দুটোই ব্যয় হয়। সেজন্য সিভিল সার্জন অফিসের স্টাফ সিরাজুলকে চা খাওয়ার জন্য লাইসেন্স নবায়ন করার টাকা পাঠায় দিলে তিনি সব করে দেন।

 

কুড়িগ্রাম সিভিল সার্জন ডা. মুর্শেদ বলেন, লাইসেন্স এবং নবায়ন না থাকলে কোনো ক্লিনিক কিংবা ডায়াগনস্টিক সেন্টার তাদের কার্যক্রম পরিচালনা করতে পারবে না। ইতোমধ্যে ১০টি ডায়াগনস্টিক সেন্টারকে ৩৫ হাজার টাকা আর্থিক জরিমানা এবং চারটি প্রতিষ্ঠানকে বন্ধ করে দেয়া হয়েছে।