|
প্রিন্টের সময়কালঃ ২৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০১:০৫ পূর্বাহ্ণ     |     প্রকাশকালঃ ২৬ ফেব্রুয়ারি ২০২৫ ০৫:৪৬ অপরাহ্ণ

তোফাজ্জল হত্যা মামলার পুনঃতদন্তের নির্দেশ


তোফাজ্জল হত্যা মামলার পুনঃতদন্তের নির্দেশ


ঢাকা প্রেস নিউজ:-

 

চোর সন্দেহে গণপিটুনিতে মানসিক ভারসাম্যহীন যুবক তোফাজ্জলকে হত্যার ঘটনায় আদালত পুনরায় তদন্তের নির্দেশ দিয়েছেন। আদালত ৪ মে-এর মধ্যে তদন্ত প্রতিবেদন জমা দেওয়ার নির্দেশ দেন। ঢাকার মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট মো. সাইফুজ্জামানের আদালত বুধবার ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের আবেদনের প্রেক্ষিতে এই আদেশ দেন।
 

গত বছরের ১৮ সেপ্টেম্বর রাত পৌনে ৮টার দিকে ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের ফজলুল হক মুসলিম হলে তোফাজ্জলকে পিটিয়ে হত্যা করা হয়। পরদিন বিশ্ববিদ্যালয়ের এস্টেট অফিসের সুপারভাইজার মোহাম্মদ আমানুল্লাহ শাহবাগ থানায় একটি মামলা দায়ের করেন। মামলাটি তদন্ত শেষে ৩০ ডিসেম্বর শাহবাগ থানার ইন্সপেক্টর মো. আসাদুজ্জামান আদালতে চার্জশিট দাখিল করেন। চার্জশিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের ২১ শিক্ষার্থীকে অভিযুক্ত করা হয়।
 

চার্জশিটে আপত্তি ও পুনঃতদন্তের দাবি

২ ফেব্রুয়ারি ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয় প্রশাসনের পক্ষ থেকে পুলিশের দাখিলকৃত চার্জশিটের বিরুদ্ধে আপত্তি (নারাজি) দাখিল করেন অ্যাডভোকেট সেলিম জাবেদ। তিনি অভিযোগ করেন যে, মামলার তদন্ত যথাযথভাবে হয়নি। শুনানি শেষে আদালত ১৮ ফেব্রুয়ারি আদেশের জন্য দিন ধার্য করেন, যা পরবর্তীতে ২৫ ফেব্রুয়ারি পুনর্নির্ধারণ করা হয়। অবশেষে আদালত আজ মামলাটি পুনরায় তদন্তের নির্দেশ দেন।
 

চার্জশিটভুক্ত আসামিরা

মামলার চার্জশিটভুক্ত আসামিরা হলেন— ফজলুল হক হল শাখা ছাত্রলীগের সাবেক উপ-বিজ্ঞান ও প্রযুক্তি সম্পাদক ও পদার্থবিজ্ঞান বিভাগের শিক্ষার্থী মো. জালাল মিয়া, মৃত্তিকা পানি ও পরিবেশ বিভাগের সুমন মিয়া, পুষ্টি ও খাদ্যবিজ্ঞান ইনস্টিটিউটের মো. মোত্তাকিন সাকিন, ভূগোল বিভাগের আল হোসেন সাজ্জাদ, আবাসিক শিক্ষার্থী আহসান উল্লাহ, ওয়াজিবুল আলম, ফিরোজ কবির, আব্দুস সামাদ, শাকিব রায়হান, ইয়াসিন আলী, ইয়ামুজ্জামান ইয়াম, ফজলে রাব্বি, শাহরিয়ার কবির শোভন, মেহেদী হাসান ইমরান, রাতুল হাসান, সুলতান মিয়া, নাসির উদ্দিন, মোবাশ্বের বিল্লাহ, শিশির আহমেদ, মহসিন উদ্দিন ও আব্দুল্লাহহিল ক্বাফি। তাদের মধ্যে প্রথম ছয়জন আদালতে দোষ স্বীকার করে জবানবন্দি দিয়েছেন।
 

ঘটনার বিবরণ

মামলার এজাহারে বলা হয়, ১৮ সেপ্টেম্বর রাত পৌনে ৮টার দিকে তোফাজ্জাল ফজলুল হক মুসলিম হলের গেটে সন্দেহজনকভাবে ঘোরাফেরা করছিলেন। কিছু শিক্ষার্থী তাকে আটক করে প্রথমে হলের মূল ভবনের গেস্ট রুমে নিয়ে যান এবং মোবাইল চুরির অভিযোগে মারধর করেন। পরে বুঝতে পারেন যে তিনি মানসিক ভারসাম্যহীন, এরপর তাকে খাবার খাওয়ানো হয়। তবে, এরপরও তাকে দক্ষিণ ভবনের গেস্ট রুমে নিয়ে জানালার সঙ্গে হাত বেঁধে স্ট্যাম্প, হকিস্টিক ও লাঠি দিয়ে মারধর করা হয়, যা তার মৃত্যুর কারণ হয়। তোফাজ্জলের বাড়ি বরগুনার পাথরঘাটা উপজেলার কাঁঠালতলী ইউনিয়নে।
 

অতিরিক্ত মামলা ও তদন্তের নির্দেশ

ঘটনার এক সপ্তাহ পর, ২৫ সেপ্টেম্বর, নিহতের ফুফাতো বোন মোসা. আসমা আক্তার ফজলুল হক মুসলিম হলের প্রভোস্ট অধ্যাপক শাহ মুহাম্মদ মাসুমসহ ১৫ জনের বিরুদ্ধে আদালতে মামলা করেন। মেট্রোপলিটন ম্যাজিস্ট্রেট আক্তারুজ্জামানের আদালত বাদীর জবানবন্দি গ্রহণ করে বিশ্ববিদ্যালয় কর্তৃপক্ষের দায়ের করা মামলার সঙ্গে একীভূত করে তদন্তের নির্দেশ দেন।
 

নতুন মামলায় অভিযুক্তদের মধ্যে রয়েছেন— ঢাকা বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষার্থী জালাল মিয়া, সুমন মিয়া, ফিরোজ কবির, আবদুস সামাদ, মোত্তাকিন সাকিন, আল হোসাইন সাজ্জাদ, ওয়াজিবুল আলম, আহসান উল্লাহ, ফজলে রাব্বি, ইয়ামুস জামান, রাশেদ কামাল অনিক, শাহরিয়ার কবির শোভন, মেহেদী হাসান ইমরান ও মো. সুলতান।
 

আদালতের নির্দেশ অনুযায়ী মামলাটির পুনঃতদন্ত করা হবে এবং নতুন তথ্য উঠে এলে তা আদালতে উপস্থাপন করা হবে।


সম্পাদকঃ সারোয়ার কবির     |     প্রকাশকঃ আমান উল্লাহ সরকার
যোগাযোগঃ স্যুইট # ০৬, লেভেল #০৯, ইস্টার্ন আরজু , শহীদ সৈয়দ নজরুল ইসলাম সরণি, ৬১, বিজয়নগর, ঢাকা ১০০০, বাংলাদেশ।
মোবাইলঃ   +৮৮০ ১৭১১৩১৪১৫৬, টেলিফোনঃ   +৮৮০ ২২২৬৬৬৫৫৩৩
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত © ২০২৫